লোকসভা ভোটের মধ্যেই এ রাজ্যে ছয় বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন হবে। লোকসভার পাশাপাশি সেই ছয় বিধানসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থীদের নাম বুধবারই ঘোষণা করে দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিরোধী বামেরা অবশ্য তাদের প্রার্থী ঘোষণা করবে আগামী ১২ মার্চ।
বিরোধী বাম ও কংগ্রেস থেকে পাঁচ বিধায়ক সম্প্রতি দলত্যাগ করে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তাঁরা বিধায়ক-পদে ইস্তফাও দিয়েছেন। ফলে, ওই পাঁচ বিধানসভা কেন্দ্র নদিয়ার শান্তিপুর, জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ি, দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগ্রাম, বাঁকুড়ার কোতুলপুর এবং বর্ধমানের গলসিতে উপনির্বাচন হবে। নদিয়ার চাকদহে তৃণমূল বিধায়ক নরেশ চাকীর মৃত্যুতে ওই আসনেও উপনির্বাচন হবে। সেখানে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন রত্না ঘোষ। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, রাজ্যে বিভিন্ন লোকসভা কেন্দ্রে ভোটের যে সব দিন ধার্য করা হয়েছে, ওই সব কেন্দ্রের অন্তর্গত বিধানসভা আসনগুলিতে সেই সংশ্লিষ্ট দিনেই ভোট হবে।
দল বদলানো ৫ বিধায়কের মধ্যে তিন জনকে এ বার লোকসভা ভোটে মমতা তৃণমূলের প্রার্থী করেছেন। বাকি দু’জন, শান্তিপুরের অজয় দে এবং ময়নাগুড়ির অনন্তদেব অধিকারী তাঁদের কেন্দ্রেই উপনির্বাচনে লড়বেন তৃণমূলের টিকিটে। কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে আসায় অজয়বাবুর কাছে তৃণমূল নেতৃত্ব জানতে চান, তিনি কৃষ্ণনগর থেকে লোকসভায় দাঁড়াতে আগ্রহী কি না। অজয়বাবু জানান, তিনি শান্তিপুর থেকেই ফের বিধানসভায় লড়তে চান। তাই শান্তিপুরের জন্যই এ দিন অজয়বাবুর নাম ঘোষণা করেছেন মমতা। একই ভাবে আরএসপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া ময়নাগুড়ির বিধায়ক অনন্তবাবুও লোকসভা ভোটে প্রার্থী হতে চাননি। তাঁকে বিধানসভার উপনির্বাচনে প্রার্থী করেই তৃণমূলের তরফে ‘স্বীকৃতি’ দেওয়া হয়েছে।
কোতুলপুরের বিধায়ক সৌমিত্র খান কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন আগেই। তাঁকে বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী করা হয়েছে। কোতুলপুর বিধানসভা উপনির্বাচনের জন্য তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন শ্যামল সাঁতরা। বর্ধমানের গলসির বিধায়ক সুনীল মণ্ডল রাজ্যসভায় তৃণমূলকে সমর্থন করার পরেই ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়েছিলেন। ‘পুরস্কার’ পেয়েছেন বর্ধমান-পূর্ব লোকসভা কেন্দ্রে শাসক দলের প্রার্থী হয়ে। আর তাঁর ছেড়ে-যাওয়া বিধানসভা আসনে তৃণমূলের প্রার্থী হচ্ছেন গৌর মণ্ডল। কুমারগ্রামের বিধায়ক দশরথ তিরকি আরএসপি ছেড়ে শাসক দলে যোগ দিয়েছেন রাজ্যসভা ভোটে তৃণমূলকে সমর্থন করার পরেই। মমতা এ বার লোকসভা ভোটে দশরথবাবুকে আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে প্রার্থী করেছেন। কুমারগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন আরএসপি-রই প্রাক্তন সাংসদ জোয়াকিম বাক্সলা। গত বার লোকসভা ভোটের আগে জোয়াকিম আরএসপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। ২০০৯ সালে আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রেই তৃণমূলের প্রার্থী হয়ে পরাজিত হতে হয়েছিল তাঁকে।
রাজ্যসভা ভোটের সময়ে বাম শিবিরের সুনীলবাবু, অনন্তবাবু ও দশরথবাবুর মতো কংগ্রেসের আরও দুই বিধায়ক মুর্শিদাবাদের সুতির ইমানি বিশ্বাস ও মালদহের গাজোলের সুশীল রায়ও দলীয় নির্দেশ অমান্য করে শাসক দলের প্রার্থীদের ভোট দিয়েছিলেন। তাঁদের অনির্দিষ্ট কালের জন্য কংগ্রেস সাসপেন্ড করেছে। কিন্তু ওই দু’জন বিধায়ক-পদে ইস্তফা দেননি। এখনই উপনির্বাচন হচ্ছে না।
উপনির্বাচনে শাসক দল প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করলেও বিরোধী কংগ্রেস বা বিজেপি থেকে কোনও নাম ঘোষিত হয়নি। লোকসভা ভোটের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে গিয়ে বিমান বসু বলেন, “আমরা ফ্রন্ট বৈঠকে প্রাথমিক ভাবে কথা বলেছি। বেশি দেরি করা যাবে না। ১২ মার্চ আমরা প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy