Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

দুর্নীতি লুকোতে গাড়ির নম্বরে কারচুপি, ধৃত ৪

অভিযোগ ছিল ‘ভ্যাট’ বা যুক্তমূল্য কর ফাঁকি দেওয়ার। তার তদন্তে নেমে জানা গেল, সংশ্লিষ্ট ইস্পাত ও স্পঞ্জ আয়রন সংস্থাটির বেশির ভাগ নথিপত্রই ভুয়ো। এমনকী সংস্থার লোহা বহনের গাড়ির যে-বিবরণ দেওয়া হয়েছে, সেখানেও আগাগোড়া ফাঁকি! ব্যবসায় দুর্নীতি এড়াতেই এই জালিয়াতি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৪ ০২:৪৪
Share: Save:

অভিযোগ ছিল ‘ভ্যাট’ বা যুক্তমূল্য কর ফাঁকি দেওয়ার। তার তদন্তে নেমে জানা গেল, সংশ্লিষ্ট ইস্পাত ও স্পঞ্জ আয়রন সংস্থাটির বেশির ভাগ নথিপত্রই ভুয়ো। এমনকী সংস্থার লোহা বহনের গাড়ির যে-বিবরণ দেওয়া হয়েছে, সেখানেও আগাগোড়া ফাঁকি! ব্যবসায় দুর্নীতি এড়াতেই এই জালিয়াতি।

কাগজপত্রে জানানো হয়েছিল, লরিতে কয়েক টন লোহা পাঠানো হচ্ছে। চালানে উল্লেখ করা হয়েছিল লরির নম্বরও। কিন্তু অর্থ দফতরের গোয়েন্দারা খোঁজ নিয়ে দেখেন, নম্বরগুলি লরির নয়। টন টন লোহা বয়ে নিয়ে যাওয়া ওই সব গাড়ির অধিকাংশই মোটরবাইক! রয়েছে দু’-একটি মিনিবাসও। অর্থাৎ লোহা বহনের ব্যাপারটিতেই কারচুপি।

অর্থ দফতরের অফিসারেরা জানান, কলকাতার ওই সংস্থার বিরুদ্ধে ‘ভ্যাট’ বা যুক্তমূল্য কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে তদন্তে নেমে এই কারচুপির হদিস পান তাঁরা। ওই সংস্থার জমা দেওয়া কাগজের বেশির ভাগই ভুয়ো বলে তাঁদের অভিযোগ। ভ্যাট ফাঁকি ও ভুয়ো নথি দাখিল নিয়ে কলকাতা পুলিশের এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের (ইবি) কাছে অভিযোগ করা হয়েছিল। তার ভিত্তিতেই চার জনকে গ্রেফতার করা হয়। ডিসি (ইবি) রবীন্দ্রনাথ সরকার বলেন, “ধৃতদের নাম পূরণমল অগ্রবাল, সুরেশ অগ্রবাল, মণীশ অগ্রবাল ও প্রদীপ দে। চার জনই সংস্থার শীর্ষ কর্তা।” ধৃতদের পুলিশি হাজতে পাঠিয়েছে আদালত।

পুলিশি সূত্রের খবর, দুর্নীতি লুকোতে গাড়ির নম্বরে কারচুপি নতুন নয়। বিহারে পশুখাদ্য কেলেঙ্কারিতে গাড়ির নম্বর জাল করা হয়েছিল এ ভাবেই। পশুখাদ্য বহনকারী গাড়ি বলে উল্লেখ করে যে-সব নম্বর দেওয়া হয়েছিল, তার বেশির ভাগই স্কুটারের। অর্থ দফতরের এক কর্তা বলছেন, এই উদাহরণ তাঁদের কাছেও রয়েছে।

অর্থ দফতর ও পুলিশের খবর, ২০১১-’১২ ও ২০১২-’১৩ অর্থবর্ষে কলকাতার সংস্থাটি ভ্যাট বাবদ প্রায় ১৫ কোটি টাকা জমা দেয়নি। বাণিজ্যকর অফিসারেরা ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগের তদন্তে গিয়েই বেশ কিছু নথি পান। অর্থ দফতরের এক কর্তা জানান, গাড়ির নম্বরে এমন জালিয়াতি আগেও হয়েছে। এ ক্ষেত্রে তদন্তকারীদের সন্দেহ হওয়ায় গাড়ির নম্বরগুলি খতিয়ে দেখা হয়। তখনই জালিয়াতির বিষয়টি সামনে আসে।

পুলিশ জানাচ্ছে, অর্থ দফতরের নিজস্ব গোয়েন্দা সংস্থা ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের অফিসারেরাই এই ঘটনার সন্ধান পান। কিন্তু তাঁদের হাতে গ্রেফতারির ক্ষমতা না-থাকায় ইবি-র কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়। সেই অভিযোগ অনুযায়ী গোয়েন্দারা বৃহস্পতিবার রাতে নিউ আলিপুরে ওই চার জনকে গ্রেফতার করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

VAT enforcement branch vehicle's fake number
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE