Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

ধরা দিয়ে জামিন সৌমেনের

কলেজে ঢুকে শিক্ষক নিগ্রহের অভিযোগ দায়ের হয়েছিল সাত দিন আগে। কিন্তু পুলিশ ধরেনি অভিযুক্ত ছাত্র-নেতা সৌমেন আচার্যকে। ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজে শিক্ষক-নিগ্রহে অভিযুক্ত, তৃণমূল ছাত্র পরিষদ থেকে বহিষ্কৃত সেই সৌমেনই মঙ্গলবার সটান হাজির হয়ে গেলেন ঝাড়গ্রাম আদালতে। আত্মসমর্পণ করে পেয়ে গেলেন জামিনও।

সৌমেন আচার্য

সৌমেন আচার্য

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:৫৮
Share: Save:

কলেজে ঢুকে শিক্ষক নিগ্রহের অভিযোগ দায়ের হয়েছিল সাত দিন আগে। কিন্তু পুলিশ ধরেনি অভিযুক্ত ছাত্র-নেতা সৌমেন আচার্যকে। ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজে শিক্ষক-নিগ্রহে অভিযুক্ত, তৃণমূল ছাত্র পরিষদ থেকে বহিষ্কৃত সেই সৌমেনই মঙ্গলবার সটান হাজির হয়ে গেলেন ঝাড়গ্রাম আদালতে। আত্মসমর্পণ করে পেয়ে গেলেন জামিনও।

এক সপ্তাহেও কেন ধরা হল না অভিযুক্ত সৌমেনকে?

ঝাড়গ্রামের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের জবাব, “এফআইআর মানেই অভিযুক্তকে সঙ্গে সঙ্গে ধরতে হবে, এটা আইনের বিধান নয়।” তাঁর দাবি, সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক কালের নির্দেশ অনুযায়ী সাত বছর বা তার কম সাজা হয় এমন ধারায় মামলা দায়ের হলে তদন্ত করে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে হবে।” পুলিশ সুপার আরও বলেন, “তদন্তে দোষ প্রমাণিত হলে চার্জশিট দেব।”

বিরোধীদের অবশ্য অভিযোগ, শাসকদলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার জন্যই পুলিশ সৌমেনকে না ধরে জামিন নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। এসএফআইয়ের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক সৌগত পণ্ডার মতে, “আইনের নানা ধারা তো রয়েইছে। কিন্তু বাস্তবে কি তার প্রয়োগ হয়? আসলে সৌমেন নামেই টিএমসিপি থেকে বহিষ্কৃত। তৃণমূলের ছত্রছায়ায় থাকায় পুলিশ তাঁকে ধরেনি।” যাঁকে সৌমেন মারতে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ, ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজের সেই শারীরশিক্ষার শিক্ষক তথা হস্টেল সুপার বাদল জানা আবার তৃণমূল প্রভাবিত ‘অল বেঙ্গল স্টেট গভর্মেন্ট কলেজ টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর কলেজ শাখার কোষাধ্যক্ষ। সৌমেনের জামিন পাওয়া নিয়ে এ দিন বাদলবাবুর প্রতিক্রিয়া, “নিয়মমাফিক অভিযোগ তো করেছিলাম। আজকের বিষয়টি নিয়ে কিছু বলার নেই।”

টিএমসিপি থেকে খাতায়-কলমে বহিষ্কৃত সৌমেন ওরফে বুড়া ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজেরও কেউ নন। অভিযোগ, তবু কলেজে দাদাগিরি চালান টিএমসিপি-র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক রমাপ্রসাদ গিরির ঘনিষ্ঠ সৌমেন। ১১ নভেম্বর কলেজে ঢুকে বাদলবাবুর কলার ধরে সৌমেন চড় কষাতে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। ১৭ নভেম্বর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিমাইচাঁদ মাসান্ত লোক মারফত ঝাড়গ্রাম থানায় অভিযোগপত্র পাঠান। তাতে অবশ্য সৌমেনের নাম ছিল না। ১৮ নভেম্বর অবশ্য কলেজে তদন্তে আসা পুলিশকর্মীদের কাছে সৌমেন ও তাঁর দলবলের নামে অভিযোগ জানান নিগৃহীত বাদলবাবু।

এ দিন দুপুর একটা নাগাদ সঙ্গীদের নিয়ে আদালতে আসেন সৌমেন। বিচারক কৃষ্ণমুরারিপ্রসাদ গুপ্ত তাঁর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন। তাঁর আইনজীবী শান্তনু ঘোষ বলেন, “আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ভাবে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে।” আর সৌমেনের বক্তব্য, “আমার বিরুদ্ধে সব অভিযোগই মনগড়া।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

jhargram raj college soumen acharyay
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE