ঝাড়গ্রাম আদালত চত্বরে চণ্ডী করণ। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।
অনুজ পাণ্ডের পরে এ বার সিআইডির হাতে ধরা পড়লেন নেতাই-কাণ্ডে অভিযুক্ত সিপিএম নেতা চণ্ডী করণ। বৃহস্পতিবার রাতে সিআইডির স্পেশাল সুপার ভারতী ঘোষের নেতৃত্বে একটি দল অভিযান চালিয়ে হুগলির চণ্ডীতলা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে। তিন বছর ফেরার থাকার পরে ২৮ এপ্রিল থেকে ৮ মে-র মধ্যে তিন দফায় নেতাই কাণ্ডে ফেরার মোট ৭ জনকে গ্রেফতার করল সিআইডি। এখনও ফেরার সিপিএম নেত্রী ফুল্লরা মণ্ডল।
সিআইডি সূত্রে জানানো হয়েছে, চণ্ডীতলার একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের অফিসঘরে ঘুমিয়েছিলেন সিপিএমের বেলাটিকারি লোকাল কমিটির সম্পাদক চণ্ডীবাবু। সেখান থেকেই তাঁকে ধরা হয়। লালগড়ের নেপুরা অঞ্চলের নছিপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চণ্ডীবাবু ভুয়ো পরিচয়ে প্রায় দু’বছর ধরে ওই স্কুলে নৈশরক্ষী ও কেয়ার-টেকারের কাজ করছিলেন বলে জানা গিয়েছে। চণ্ডীবাবুকে শুক্রবার সকালে ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তিন দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
এ দিন আদালত চত্বরে পুলিশের উপস্থিতিতেই চণ্ডীবাবুর পরিজনদের মারধর করেন তৃণমূলের লোকেরা। গত ৩০ এপ্রিল নেতাই-কাণ্ডে ধৃত পাঁচ জনের হাজিরার দিনও ঝাড়গ্রাম আদালত চত্বরে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল তৃণমূল। অভিযুক্তদের পরিজনদের মারধর করা হয়েছিল। এ দিন চণ্ডীবাবুর সহোদর ভাই সুজিত করণ ও জেঠতুতো দাদা গণেশ করণের উপর চড়াও হন তৃণমূলের লোকজন। পুলিশের সামনেই তাঁদের চড়-থাপ্পড় মারা হয়, করা হয় লাঠিপেটা। মারমুখী তৃণমূল কর্মীদের হাত থেকে ওই দু’জনকে বাঁচাতে শেষ পর্যন্ত চণ্ডীবাবুর সঙ্গেই প্রিজন ভ্যানে চাপিয়ে তাঁদের আদালতের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। চণ্ডীবাবুকে ঝাড়গ্রাম উপ-সংশোধনাগরে নিয়ে যাওয়ার সময়ও প্রিজন ভ্যান ঘিরে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূলের কর্মী-সদস্যেরা। পরে ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের ডিএসপি (হেড কোয়ার্টার) সজলকান্তি বিশ্বাসের নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী গিয়ে বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দেয়।
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি লালগড়ের নেতাই গ্রামে রথীন দণ্ডপাটের বাড়িতে থাকা সিপিএমের সশস্ত্র শিবির থেকে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল। নিহত হন চার মহিলা-সহ ৯ জন নিরীহ গ্রামবাসী। আহত হন ২৮ জন। প্রথমে তদন্ত শুরু করে সিআইডি। ২০১১ সালের ১৮ জানুয়ারি কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে সিআইডির হাত থেকে নেতাই-মামলার তদন্তের দায়িত্ব সিবিআইকে দেওয়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy