Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ বার ফব-র কার্যালয় দখলে অভিযুক্ত উদয়ন

তৃণমূলে যোগ দিয়েই ফরওয়ার্ড ব্লকের কার্যালয় দখলে নাম জড়াল বিধায়ক উদয়ন গুহের। কোচবিহারের দিনহাটায় এ রকম একটি কার্যালয় দখল করতে গিয়ে উদয়নবাবুর বাবা প্রয়াত ফব নেতা কমল গুহের নামাঙ্কিত ফলকও ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ ভাবেই ফব-র অফিস দখলের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। দিনহাটায়। — নিজস্ব চিত্র

এ ভাবেই ফব-র অফিস দখলের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। দিনহাটায়। — নিজস্ব চিত্র

নমিতেশ ঘোষ
দিনহাটা শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৫ ০৩:৩৯
Share: Save:

তৃণমূলে যোগ দিয়েই ফরওয়ার্ড ব্লকের কার্যালয় দখলে নাম জড়াল বিধায়ক উদয়ন গুহের। কোচবিহারের দিনহাটায় এ রকম একটি কার্যালয় দখল করতে গিয়ে উদয়নবাবুর বাবা প্রয়াত ফব নেতা কমল গুহের নামাঙ্কিত ফলকও ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উদয়নবাবু অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।

সম্প্রতি ফব-র কোচবিহার জেলা সম্পাদক এবং দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দেন উদয়ন। ১ অক্টোবর কলকাতার লালবাজারের কাছে একদা তাঁর বাম সহকর্মী-নেতারা যখন শাসক দলের পুলিশের মারে রক্তাক্ত হচ্ছিলেন, প্রায় সেই সময়েই উদয়নকে সাদরে তৃণমূলে বরণ করে নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল নেত্রী ঘোষণাও করে দেন, বিধানসভা ভোটে দিনহাটা থেকে তাঁদের প্রার্থী হবেন উদয়নই।

জেলা ফব নেতৃত্বের দাবি, নতুন দলে নিজের ক্ষমতা ‘জাহির’ করতেই অনুগামীদের দিয়ে দিনহাটা মহকুমায় ফব-র ৩৩টির মধ্যে চারটি কার্যালয় দখল করিয়েছেন উদয়ন, যিনি ফব-র টিকিটে জেতা বিধায়ক পদ বা দিনহাটার পুরপ্রধানের পদ এখনও ছাড়েননি। ‘দখল’ হয়ে যাওয়া কার্যালয়ের মধ্যে দু’টি খাস দিনহাটায়। একটি শহর লাগোয়া নিগমনগরে, একটি শিমুলতলায়। রবিবার রাতে দিনহাটার সাহেবগঞ্জ রোডে লাইনপাড়ে একটি পার্টি অফিসের দখল নিতে গিয়ে কমল গুহের নামে একটি ফলক উদয়ন-ঘনিষ্ঠেরা ভাঙচুর করেছে, এমন অভিযোগও করেছে ফব।

সোমবার লাইনপাড়ে গিয়ে দেখা গেল, রাতারাতি সরেছে ফব-র পতাকা। সর্বত্র তৃণমূলের নিশানের দাপট। সরেছে ফব-র বোর্ড। কমল গুহের নামাঙ্কিত ফলকের কোনও চিহ্নই নেই।

উদয়নবাবুর দাবি, ওই সব পার্টি অফিস যাঁরা ব্যবহার করেন, তাঁরা তাঁরই সঙ্গে ফব ছেড়ে তৃণমূলে চলে গিয়েছেন। সে কারণেই সেগুলি তৃণমূলের কার্যালয় হয়েছে। ফব-র কোনও পার্টি অফিস তাঁরা দখল করেননি। লাইনপাড়ের ফব অফিসে কমল গুহের নামে কোনও ফলক ছিল না বলেও দাবি তাঁর। বলেছেন, ‘‘কোথাও জোর করে কোনও পার্টি অফিস দখল করা হয়নি। আর কমল গুহকে নিয়ে যা বলা হচ্ছে, তা আবেগের কথা। আমরা কমল গুহ স্মৃতি রক্ষা কমিটির অফিস করেছি। ভাঙচুরের অভিযোগ মিথ্যা।”

ফব-র কোচবিহার জেলা সভাপতি তথা প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারী অবশ্য জানিয়েছেন, উদয়ন-অনুগামীদের এই ‘আগ্রাসনের’ বিরুদ্ধে তাঁরা আইনি লড়াইয়ে যাওয়ার কথা ভাবছেন। জেলার বিধায়ক তথা ফব-র রাজ্য কমিটির সদস্য অক্ষয় ঠাকুর বলেছেন, “কমল গুহের নামের ফলক ভাঙচুর করা হয়েছে। আমরা সময়ের অপেক্ষা করছি। সময় সব কিছুর জবাব দেবে।” ফব সূত্রের খবর, আগামী কাল, বুধবার দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক থেকে দিনহাটার নতুন নেতা বেছে নেওয়া হবে। অস্থায়ী ভাবে জেলা সম্পাদকেরও দায়িত্ব দেওয়া হবে এক জনকে। তার পরেই করা হতে পারে আইনি পদক্ষেপ।

ইতিমধ্যে ফব-র একাধিক জেলা নেতা দাবি করতে শুরু করেছেন, উদয়নবাবু তৃণমূলে যোগ দিলেও দিনহাটা মহকুমায় ফব-র অধিকাংশ নেতা-কর্মী তাঁকে সমর্থন করেননি। বিশেষ করে দিনহাটা-২ ব্লকের নাজিরহাট, শালমারা, বুড়িরহাট, বাসন্তীরহাট, চৌধুরীহাট, বামনহাট, নয়ারহাট, ভেটাগুড়ি, সিতাইয়ের গ্রাম লাগোয়া এলাকাতে উদয়ন-অনুগামীদের পাল্টা প্রতিরোধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ফব-র স্থানীয় নেতৃত্ব। সে জন্যই শহরে উদয়ন-ঘনিষ্ঠেরা ‘সক্রিয়’ হলেও গ্রামের দিকে ‘সাফল্য’ পায়নি। উদয়ন-শিবিরের পাল্টা জবাব, “উদয়ন গুহকে যে ভিড় রবিবার দিনহাটায় স্বাগত জানিয়েছিল, তাতেই স্পষ্ট সবাই তাঁর সঙ্গেই রয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Udayan Guha Trinamool Dinhata Coochbehar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE