ডানকুনির সঞ্জয় রায়ের মৃত্যুর তদন্তে নেমে অ্যাপোলো হাসপাতালের বিরুদ্ধে জোর করে টাকা আদায়ের প্রমাণ পেয়েছিল পুলিশ। এ বার ওই হাসপাতালের নিজস্ব তদন্তেও সেই প্রমাণ মিলেছে বলে জানতে পেরেছেন লালবাজারের তদন্তকারীরা।
পুলিশ সূত্রের খবর, সঞ্জয়ের মৃত্যু নিয়ে হইচই শুরু হতেই অ্যাপোলো হাসপাতালের সদর দফতরের নির্দেশে একটি তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছিল। মাথায় ছিলেন ওই হাসপাতালের সর্বভারতীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট (মানবসম্পদ) করুণাকর টি। ওই কমিটির তদন্তেই হাসপাতালের বেশ কয়েক জনের কাজে ত্রুটি মিলেছে বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। এমনকী, কমিটির নির্দেশে সঞ্জয়ের মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতালের বিলিং বিভাগের এক কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট কর্মীদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করেছে, কার্যত তা জানতেই তদন্ত কমিটির প্রধান করুণাকর টি-কে বুধবার ফুলবাগান থানায় ডেকে পাঠিয়েছিল পুলিশ। দুপুর ১টা নাগাদ তিনি থানায় এলে ঘণ্টা দেড়েক ধরে তাঁর বয়ান নথিবদ্ধ করেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রের খবর, কোন কর্মীর উপরে কোন দায়িত্ব ন্যস্ত রয়েছে, করুণাকর এ দিন সবিস্তার জানিয়েছেন পুলিশকে। সেই সঙ্গে নিজেদের ত্রুটির জন্য হাসপাতালের তরফে এ পর্যন্ত কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা-ও বলেছেন তদন্তকারীদের। লালবাজারের এক পুলিশ কর্তা বলেন, তদন্তে সঞ্জয়ের মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত চিকিৎসকদের ভূমিকা স্পষ্ট হয়েছে। এ বার মৃতের পরিবারের কাছ থেকে চিকিৎসার খরচ বাবদ জোর করে টাকা আদায়ে হাসপাতালের বিলিং বিভাগের কর্মী ও আধিকারিকদের ভূমিকা নির্দিষ্ট করার কাজ চলছে। সেই সূত্রেই এ দিন হাসপাতালের ওই উচ্চপদস্থ কর্তাকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল।
আরও পড়ুন: আঙুলও ধরেছিল ছেলেটা, পারলাম না তা-ও
গত মাসে ডানকুনিতে পথ দুর্ঘটনায় জখম হন সঞ্জয়। চিকিৎসার জন্য তাঁকে ভর্তি করা হয়েছিল অ্যাপোলো হাসপাতালে। অভিযোগ, সাত দিন চিকিৎসাধীন থাকাকালীন বিবিধ কারণ দেখিয়ে তাঁর বাড়ির লোকের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়েছিল। সেই বিলের বোঝা সইতে না পেরে পরিবার সঞ্জয়কে যখন এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছিলেন, তখনই জোর করে টাকা আদায় করে হাসপাতাল। সঞ্জয়ের মৃত্যুর পরে তাঁর পরিবার অ্যাপোলো হাসপাতালের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে। তার ভিত্তিতে অবহেলায় মৃত্যু ও তোলাবাজির মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। ওই মামলায় তলব করা হয় হাসপাতালের ১৬ জন চিকিৎসককে। তাঁদের মধ্যে তিন জনের ভূমিকায় সন্তুষ্ট হননি তদন্তকারী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy