পথে পথে: চিত্র-সাংবাদিক নিগ্রহের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-মিছিলে রাস্তায় নামিয়ে রাখা হয়েছে ক্যামেরা। বুধবার ধর্মত়লায়। ছবি: সুমন বল্লভ
পঞ্চায়েত নির্বাচনের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে আলিপুরে সাংবাদিক নিগ্রহের ঘটনার কথা জানতেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার মুখ্যমন্ত্রী নিজেই এ কথা জানান।
সাংবাদিক-নিগ্রহের ব্যাপারটা যে তাঁকে জানানোই হয়নি, মমতার বক্তব্যে সেটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। কেন জানানো হয়নি, সেই প্রশ্ন উঠছে।
এ দিন নবান্ন থেকে বেরোনোর সময় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কিছু ক্ষণ আগে দেখলাম, কারা একটা মিছিল করছে। সাংবাদিকদের নাকি মারধর করা হয়েছে। পুলিশকে জিজ্ঞাসা করলাম, কী ব্যাপার? আলিপুর তো আমার বাড়ির সামনে। অথচ আমি ঘটনাটাই জানি না! তা হলে কি তোমরা আমাকে খবরটাই জানাওনি? কারণ প্রেসের কিছু হলে আমি সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নিই।’’
পুলিশের কাছ থেকে ওই প্রশ্নের কী জবাব পেলেন মুখ্যমন্ত্রী?
‘‘আমাকে পুলিশ বলল, ও-রকম কোনও ঘটনাই ঘটেনি। আমরা নিজে ওঁকে (ওই সাংবাদিককে) জিজ্ঞাসা করেছি,’’ মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পরে তিনি বলেন, ‘‘বাকিটা পুলিশ বলবে। ওটা আমার বলার কথা নয়।’’
মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের কিছু আগেই লালবাজারে কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (সদর) সুপ্রতিম সরকার অবশ্য জানিয়েছেন, আলিপুরে এক জন নয়, দু’জন সাংবাদিককে নিগ্রহের অভিযোগ তাঁদের কাছে জমা পড়েছে। নিগৃহীতদের এক জন একটি ওয়েবপোর্টালের সাংবাদিক। অন্য জন চিত্র-সাংবাদিক। নিগ্রহের দু’টি ঘটনারই তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন যুগ্ম কমিশনার (সদর)।
আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত ভোটের গতিপ্রকৃতি কোন পথে যাবে, হাইকোর্টে আজ নজর সব পক্ষের
ওই পুলিশকর্তা বলেন, যে-দিন (সোমবার) চিত্র-সাংবাদিককে নিগৃহীত করা হয়েছে বলে অভিযোগ, সে-দিন এই ধরনের কোনও ঘটনার অভিযোগ কোথাও দায়ের হয়নি। তবে মঙ্গলবার ই-মেলের মাধ্যমে একটি অভিযোগ আসে তাঁদের কাছে। ওই চিত্র-সাংবাদিক যে-সংবাদপত্রে কাজ করেন, সেখানকার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষই অভিযোগ দায়ের করেছেন ই-মেলের মাধ্যমে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ তদন্ত শুরু করে দেয়। আলিপুর থানার অ্যাডিশনাল ওসি ওই চিত্র-সাংবাদিকের বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথাও বলেন। ওই চিত্র-সংবাদিককে নগ্ন করে নিগ্রহ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।
সুপ্রতিমবাবু এ দিন বলেন, ‘‘ওই সময়কার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে এবং অন্যান্য তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করে এই ধরনের ঘটনার কোনও প্রমাণ আমরা এখনও পর্যন্ত পাইনি। তবে তদন্ত এখনও চলছে।’’ পুলিশের সামনেই এই নিগ্রহের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু সুপ্রতিমবাবুর দাবি, ‘‘ক্যামেরার সামনে ওই চিত্র-সাংবাদিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘পুলিশের সামনে নিগ্রহের কোনও ঘটনা ঘটেনি’।’’
ওই পুলিশকর্তা এ দিন জানান, চিত্র-সাংবাদিককে নিগ্রহের দিন একই জায়গায় এক ওয়েব পোর্টালের সাংবাদিকও নিগৃহীত হয়েছেন বলে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে আলিপুর থানায়। ওই সাংবাদিকের হাত ভাঙে এবং মাথায় গভীর চোট লাগে। সেই ঘটনারও তদন্ত চলছে।
খবর সংগ্রহের সময়ে এ ভাবে নিগ্রহের প্রতিবাদে বুধবার কলকাতায় মিছিল করেন সাংবাদিক ও চিত্র-সাংবাদিকেরা। বিকেলে গাঁধী-মূর্তির পাদদেশ থেকে বেরিয়ে মেয়ো রোড হয়ে ডোরিনা মোড়ে মিছিল শেষ হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy