পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে জট কাটল না।
সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিল, তারা ওই নির্বাচন নিয়ে দায়ের হওয়া মামলায় হস্তক্ষেপ করবে না। গত ১২ এপ্রিল বিচারপতি সুব্রত তালুকদার পঞ্চায়েত ভোট প্রক্রিয়ার উপরে অন্তর্বর্তিকালীন স্থগিতাদেশ জারি করার পরে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল মামলা দায়ের করেছিল তৃণমূল ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
এ দিন ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার ও বিচারপতি অরিন্দম মুখোপাধ্যায় তাঁদের নির্দেশে বলেছেন, চলতি ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের মেয়াদ আগামী অগস্ট পর্যন্ত। সে কথা মাথায় রেখে সিঙ্গল বেঞ্চ প্রয়োজনে প্রতিদিন শুনানি করে দ্রুত ওই মামলার নিষ্পত্তি করবে। বিচারপতি তালুকদারও এ দিন জানিয়ে দিয়েছেন, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ভোট-প্রক্রিয়ার উপর স্থগিতাদেশ বজায় থাকবে। আজ, মঙ্গলবার বেলা দুটোয় বিচারপতি তালুকদারের আদালতে মামলার পরবর্তী শুনানি।
আরও পড়ুন:
পঞ্চায়েত জটে উন্নয়ন থমকে গিয়েছে,উষ্মা প্রকাশ করলেন মমতা
গত শুক্রবার তৃণমূল ও কমিশনের আপিল মামলা গ্রহণ করে ডিভিশন বেঞ্চ বলেছিল, সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে যথাযথ ভাবে নোটিস জারি করা হলে সোমবার শুনানি হতে পারে। এ দিন বেলা সাড়ে দশটা নাগাদ শুনানি শুরু হয়। তৃণমূলের হয়ে সওয়াল করতে আসা দলের আইনজীবী-সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে বিচারপতি সমাদ্দার জানতে চান, সিঙ্গল বেঞ্চে মামলার নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই কেন ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করা হয়েছে।
কল্যাণ বলেন, বিজেপির দায়ের করা মূল মামলাটি ধোপে টেকে না। ডিভিশন বেঞ্চ যদি বলে দেয়, মামলার যৌক্তিকতা ও সারবত্তা রয়েছে, তা হলে তিনি সিঙ্গল বেঞ্চে ফিরে যাবেন। তা শুনে বিচারপতি সমাদ্দার বলেন, ‘‘সিঙ্গল বেঞ্চ প্রাথমিক ভাবে মনে করেছে মামলার যৌক্তিকতা ও সারবত্তা রয়েছে। কিন্তু চূড়ান্ত রায় দেয়নি। যে মামলার এখনও নিষ্পত্তিই হয়নি, তার সম্পর্কে ডিভিশন বেঞ্চ সামান্যতম পর্যবেক্ষণ জানাবে না। তাতে সিঙ্গল বেঞ্চ প্রভাবিত হয়ে যেতে পারে।’’
কল্যাণবাবুর যুক্তি, ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পরে নির্বাচন কমিশনের কাজে খবরদারির এক্তিয়ার হাইকোর্টের থাকে না। হাইকোর্ট কমিশনের কাজে নজরদারি করতে পারে না। ভোট পর্বের উপর এই ভাবে স্থগিতাদেশ জারি করাও যায় না।
ডিভিশন বেঞ্চ কমিশনের সচিব নীলাঞ্জন শান্ডিল্যের কাছে তাঁর বক্তব্য জানতে চায়। সচিব জানান, সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশে ভোট-প্রক্রিয়া থমকে রয়েছে। সময়ে ভোটপর্ব শেষ হবে কি না, সে নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। এ-ও জানান, পঞ্চায়েত আইনে রয়েছে, ভোট নিয়ে কোনও অভাব-অভিযোগ থাকলে ভোট মিটে গেলে প্রথমে ‘সিভিল জজ জুনিয়র ডিভিশন’, পরে সংশ্লিষ্ট জেলার বিচারকের কাছে তা জানাতে হবে। এ ক্ষেত্রে তা করা হয়নি।
মূল মামলাকারী, বিজেপি নেতা প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় ডিভিশন বেঞ্চে জানান, তিনি চান গণতন্ত্র বজায় থাকুক। বেলা একটার কিছু আগে শুনানি শেষ হয়। আদালত জানিয়ে দেয় বিকেলে রায় ঘোষণা হবে।
বেলা দুটোয় বিচারপতি তালুকদারের আদালতে মূল মামলাটি ওঠে। সেখানে কল্যাণ জানান, ডিভিশন বেঞ্চ বিকেলে রায় দেবে বলে জানিয়েছে। বিচারপতি তালুকদার জানিয়ে দেন, রায় দেখে মঙ্গলবার দুপুরে মামলাটি তালিকাভুক্ত করবেন। এ-ও জানান যে, সিপিএম, পিডিএস, কংগ্রেস-সহ আরও অনেকে তাঁর আদালতে মামলা দায়ের করেছে। সেগুলির একত্রে শুনানি হবে।
প্রতাপ এ দিন বিচারপতি তালুকদারকে জানান, কোর্টের নির্দেশ মতো রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে পাঁচ লক্ষ টাকা জরিমানা জমা দিয়েছেন তিনি। এ দিন রাজ্য নির্বাচন কমিশনও বিচারপতি তালুকদারের নির্দেশ মতো পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেয় কোর্টে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy