Advertisement
০১ মে ২০২৪

নৈরাজ্যের রাজ্য, সমস্বর বিরোধীদের

বাম, কংগ্রেস এবং বিজেপি— সমস্বরে সব বিরোধীরই দাবি, বাংলা দ্রুত এগোচ্ছে নৈরাজ্যের দিকে! আর শাসক দলের কটাক্ষ, বেড়ালকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে বাঘ বানানো যায় না!

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৮ ০৫:১৪
Share: Save:

মনোনয়ন-পর্বেই প্রায় অর্ধেক ময়দান ফাঁকা! একে তো বিরোধীদের সংগঠন দুর্বল। তার পরেও যেটুকু লড়াইয়ের সম্ভাবনা ছিল, শাসক দলের তাণ্ডবের জেরে মনোনয়নেই তা অঙ্কুরে বিনাশ হল বলে অভিযোগ বিরোধীদের। বাম, কংগ্রেস এবং বিজেপি— সমস্বরে সব বিরোধীরই দাবি, বাংলা দ্রুত এগোচ্ছে নৈরাজ্যের দিকে! আর শাসক দলের কটাক্ষ, বেড়ালকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে বাঘ বানানো যায় না!

জেলায় জেলায় মনোনয়ন দিতে বাধা পেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। আদালতের অন্তর্বর্তী নির্দেশ ছিল, প্রার্থীদের নিরাপত্তার দায়িত্ব পুলিশ সুপারদের। কিন্তু তার পরেও হামলা অব্যাহত থাকায় পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ নিয়ে সোমবার ফের হাইকোর্টে গিয়েছিলেন অধীরবাবু। তবে এক বিচারপতি অনুপস্থিত থাকায় মামলার শুনানি হয়নি। অধীরবাবুর হলফনামা জমা নিয়েছে আদালত।

পরে অধীরবাবু বলেছেন, ‘‘আদালতের নির্দেশকেও গুরুত্ব না দেওয়ার স্পর্ধা এই রাজ্য সরকার দেখাতে পারে! বাংলা এখন নৈরাজ্যের দিকে এগোচ্ছে!’’ গোটা রাজ্যে কয়েকটি জেলা বাদে কংগ্রেসের সাংগঠনিক শক্তি যে বলার মতো নয়, তা অস্বীকার করেননি প্রদেশ সভাপতি। কিন্তু তাঁর অভিযোগ, মালদহ, মুর্শিদাবাদ বা উত্তর দিনাজপুরের পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদেও কংগ্রেসকে মনোনয়ন দিতে বাধা দেওয়া হয়েছে। অধীরবাবুর মন্তব্য, ‘‘বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আসন জেতার যে রেকর্ড অতীতে ছিল, মা-মাটি-মানুষের দল তা ভেঙে নতুন নজির গড়বে— তাদের উপরে এই আস্থা আমাদের আছে!’’

আরও পড়ুন: দিনভর মারধর, বাধা অব্যাহত মনোনয়নে

বাম এবং বিজেপি এ দিন ধর্না দিয়েছিল কমিশনে। দু’পক্ষেরই দাবি, বাধাপ্রাপ্ত প্রার্থীদের মনোনয়ন নেওয়ার ব্যবস্থা কমিশনকে করতে হবে। বিশেষত, সুপ্রিম কোর্ট যখন বলে দিয়েছে অভিযোগ থাকলে কমিশনে যেতে হবে। ভিতরে যখন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার এ কে সিংহের সঙ্গে বিতর্ক চালাচ্ছেন সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী, শমীক লাহিড়ী, কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় এবং বিজেপির মুকুল রায়, লকেট চট্টোপাধ্যায়, শমীক ভট্টাচার্যেরা, বাইরে তখন এক সুরে বিক্ষোভ চালিয়ে গিয়েছেন দু’দলের কর্মী-সমর্থকেরা। সন্ধ্যায় ফের রাহুল সিংহের নেতৃত্বে বিজেপি এবং রবীন দেবের নেতৃত্বে বাম প্রতিনিধিদল কমিশনে যায় মনোনয়নের দাবিতে।

বিভাস চক্রবর্তী, প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের মতো বিদ্বজ্জনেরাও দিয়ে কমিশনের কাঙ্খিত ভূমিকা পালনের আর্জি জানিয়েছেন। বিজেপি-প্রভাবিত সরকারি কর্মচারী পরিষদ হাইকোর্টে মামলা করেছে ভোটকর্মীদের নিরাপত্তা চেয়ে। আর কমিশন যেন বিরোধীদের ‘চাপের কাছে নতিস্বীকার’ না করে, সেই দাবি জানাতে গিয়ে কমিশনের বাইরে ‘সেভ ডেমোক্র্যাসি’র বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পরে পার্থবাবু বলেন, ‘‘বিরোধীরা ভোটে লড়তে চায় না, গোলমাল করাই লক্ষ্য! সংবাদমাধ্যম কিছু বেড়ালকে থেকে বাঘ করছে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে!’’ যার জবাবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ পাল্টা বলেছেন, ‘‘সামান্য চক্ষুলজ্জা থাকলেও পার্থবাবু এটা বলতে পারতেন না! গণতন্ত্রের গলা টিপে মিষ্টি বিতরণ করছেন!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE