Advertisement
০৩ মে ২০২৪

আজও সকাল ১১টা থেকে বেলা ৩টে পর্যন্ত জমা নেওয়া হবে মনোনয়ন

পশ্চিম বর্ধমানের বারাবনি, পাণ্ডবেশ্বর ও দুর্গাপুর-ফরিদপুর পঞ্চায়েত সমিতির সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে কোনও প্রার্থী দিতে পারেনি বিরোধীরা। এ ছাড়া পাণ্ডবেশ্বর এলাকার জেলা পরিষদের একটি আসনে কোনও বিরোধী প্রার্থী নেই।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৮ ০৫:১৭
Share: Save:

শেষ পর্বেও শেষ রক্ষা হল না। সোমবারই ছিল পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়নের পূর্ব নির্ধারিত শেষ দিন। যা শেষ হল মারামারি, গোলমাল, মনোনয়ন পত্র ছিনিয়ে নেওয়া, বিরোধীদের বিডিও-এসডিও অফিসে ঢুকতে না দেওয়ার মধ্য দিয়েই। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অভিযুক্তরা তৃণমূলের বলে বিরোধীদের দাবি। যা শুনে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওরাই গোলমাল করছে। ওদের সঙ্গে লোকজন নেই।’’ যদিও দিনভর গোলমালের পরে রাতে রাজ্য নির্বাচন কমিশন মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময়সীমা এক দিন বাড়ায়। আজ, মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে বেলা ৩টে পর্যন্ত মনোনয়ন জমা নেওয়া হবে।

আসানসোলে মহকুমাশাসকের দফতরে সোমবার মনোনয়ন জমা দিতে আসা বিরোধী দলের প্রার্থীদের মারধর করে ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে। সালানপুর, বারাবনি, জামুড়িয়ার প্রার্থীরা আসানসোলে পৌঁছতেই তাড়া করে এলাকাছাড়া করা হয় বলে সিপিএম এবং বিজেপি নেতাদের অভিযোগ।

কংগ্রেসের এক প্রার্থী এ দিন দুষ্কৃতীদের নজর এড়িয়ে মনোনয়ন জমা দিতে মহকুমাশাসকের (বাঁকুড়া সদর) দফতরে ঢুকেও রেহাই পাননি। প্রশাসনিক ভবন চত্বর থেকে তাঁকে মারধর করে বের করে দেওয়া হয়। ওন্দা ব্লকে হেনস্থা করে মনোনয়ন জমা করতে দেওয়া হয়নি ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থীদেরও।

আরও পড়ুন: সমীক্ষায় এগিয়ে শাসকই, বাড়ছে বিজেপিও

পশ্চিম বর্ধমানের বারাবনি, পাণ্ডবেশ্বর ও দুর্গাপুর-ফরিদপুর পঞ্চায়েত সমিতির সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে কোনও প্রার্থী দিতে পারেনি বিরোধীরা। এ ছাড়া পাণ্ডবেশ্বর এলাকার জেলা পরিষদের একটি আসনে কোনও বিরোধী প্রার্থী নেই। পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম ১ পঞ্চায়েত সমিতির সব আসনেও শুধু শাসক দলই প্রার্থী দিয়েছে। ব্লক অফিস সূত্রের খবর, এ দিনও ওই ১৮টি আসনে কোনও বিরোধী মনোনয়ন জমা পড়েনি। সিপিএমের গুসকরা পূর্ব এরিয়া কমিটির সম্পাদক নারায়ণচন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের প্রার্থীকে মেরেধরে বের করে দেওয়া হয়েছে।’’ যদিও আউশগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দারের দাবি, ‘‘বিরোধীরা প্রার্থী খুঁজে পায়নি। এটা উন্নয়নের জয়।’’

মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা ১ ব্লক অফিসে এ দিন ঢুকতে গিয়ে হামলার মুখে পড়েন কংগ্রেস বিধায়ক সফিউজ্জামান। নেতাকে বাঁচাতে গিয়ে চড়-থাপ্পড় খান কর্মীরা, এক জনের মাথা ফাটে। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। পরে থানার মোড়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে কংগ্রেস। একটি বাসে তৃণমূলের প্রার্থীরা আসছিলেন। সেটি ভাঙচুর করা হয়।

রঘুনাথগঞ্জে ১ ব্লক ও জঙ্গিপুরের মহকুমাশাসকের অফিস ঘিরে লাঠি-রড-উইকেট নিয়ে তাণ্ডব চালানোরও অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মার খেয়েছেন সংবাদ-কর্মীরাও। আগ্নেয়াস্ত্র হাতে মুখ-ঢাকা দুষ্কৃতীদের ঘুরতে দেখা গিয়েছে। সকালে সুতি ২ ব্লকের জনা ২৫ কংগ্রেস প্রার্থীকে নিয়ে জঙ্গিপুর মহকুমাশাসকের অফিসে বসিয়ে দিয়ে কান্দি রওনা দিয়েছিলেন সাংসদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। তিনি বেরিয়ে যেতেই এক দল যুবক এসে কাগজপত্র কেড়ে চড়-থাপ্পড় মেরে তাঁদের বের করে দেয়। পুলিশ ছিল কার্যত নির্বিকার।

খোদ বহরমপুরে জেলাশাসকের অফিস চত্বরে লাঠি হাতে হামলা চালায় তৃণমূলের লোকজন। বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেসের বেশ কিছু লোক আহত হন। পুলিশ সুপারের অফিসের ঢিল ছোড়া দূরত্বে এই তাণ্ডব চলে।

কোচবিহারের দিনহাটায় মনোনয়নকে কেন্দ্র করে তৃণমূল এবং যুব তৃণমূলের মধ্যে গোলমাল হয়েছে। তৃণমূলের অভিযোগ, যুব সংগঠনের ছেলেরা অস্ত্র নিয়ে টহল দিচ্ছে। সেই অস্ত্র উদ্ধারের দাবি জানিয়ে দিনহাটা মহকুমাশাসকের অফিস ঘেরাও করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE