ছবি: সংগৃহীত।
ঘোষণা হয়েছিল আট মাস আগে। এর মধ্যে কেটে গিয়েছে বিধানসভার চারটি অধিবেশনও। কিন্তু তার পরেও বাস্তবায়িত হল না রাজ্যের প্রত্যেক স্কুলে বাধ্যতামূলক ভাবে বাংলা পঠনপাঠন।
গত মে মাসে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রথম ঘোষণা করেন, রাজ্যের সব স্কুলে বাংলা ভাষা বাধ্যতামূলক করা হবে। তার কিছুদিনের মধ্যেই রাজ্যের বেসরকারি সব স্কুলকে নিয়ে টাউন হলের বৈঠকেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরামর্শ দেন, দশম শ্রেণি পর্যন্ত বাংলা একটি বিষয় হিসেবে পড়াতে হবে। তিনি বলেন, প্রথম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বাংলা একটি বিষয় হিসেবেই পড়তে হবে। নবম ও দশমে অবশ্য ঐচ্ছিক হবে বাংলা। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী এই পরামর্শ দিলেও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পাশাপাশি অন্যান্য বোর্ডের স্কুলগুলিতেও কী ভাবে বাংলা বাধ্যতামূলক করা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। শুরু হয় বিতর্ক।
ঠিক হয়, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আইন সংশোধন করে বিল আনা হবে। কিন্তু আইন দফতর বিলটি নিয়ে আপত্তি তোলে। বিল নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যেই জুনে পাহাড়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকের পরে বাংলা বাধ্যতামূলক ভাবে পড়ানোর বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী ফের ঘোষণা করায় পাহাড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ শুরু হয় সেখানে।
এই পরিস্থিতিতে বাংলা ভাষা বাধ্যতামূলক করার ব্যাপারে এক পাতার একটি বিল তৈরির প্রস্তুতি হয়। সেখানে বলা হয়, এ রাজ্যের যে কোনও স্কুলেই দশম শ্রেণি পর্যন্ত একটি বিষয় হিসেবে বাংলা পড়তেই হবে। তবে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বাংলা হবে বাধ্যতামূলক। নবম ও দশম শ্রেণিতে তা ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে পড়ার সুযোগ পাবে পড়ুয়ারা। কিন্তু পাহাড় পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এখনও পর্যন্ত সেই বিল বিধানসভার অধিবেশনে এনে পাশ করানোর প্রক্রিয়া শুরু করেনি রাজ্য সরকার। অথচ বিকাশ ভবন বিলটি তৈরি করে বসে আছে অগস্ট থেকে।
এক রাতে বিল তৈরি করে পরের দিন সকালে বিধায়কদের বিলি করা ও সেদিনই বিধানসভায় তা পাশ করানোর নজিরও রয়েছে ভুরি ভুরি। সদ্য শেষ হওয়া অধিবেশনেই শিক্ষা দফতরেরই একটি নতুন বিল তড়িঘড়ি এনে তা পাশ করিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। ‘বাধ্যতামূলক বাংলা’ বিল নিয়ে অবশ্য বিকাশ ভবন উচ্চবাচ্য করছে না। যে নীতি ঘোষণার ফলে পাহাড় নতুন করে জ্বলে উঠেছিল, সেই দার্জিলিং এখন না-হাসলেও কার্যত স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। তা হলে কেন বিলটি নিয়ে গড়িমসি? শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘ঠিক সময়েই বিলটি বিধানসভায় আনা হবে।’’
কবে সেই সময় আসবে, তার দিকেই তাকিয়ে বাংলা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy