Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

বৈঠকের আগে ফের ফতোয়া জারি গুরুঙ্গের

সম্প্রতি মোর্চার চিফ কো-অর্ডিনেটর হিসেবে বিনয় তামাঙ্গের নাম ঘোষণা করেছিল মোর্চা। পরে রাজ্যকে একটি চিঠিও পাঠান বিনয়। রাজ্যের সঙ্গে গোর্খাল্যান্ড নিয়ে ‘রাজনৈতিক আলোচনা’ চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠিয়েছিলেন গুরুঙ্গও।

বিমল গুরুঙ্গ। ছবি: সংগৃহীত

বিমল গুরুঙ্গ। ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব সংবাদদাতা
দার্জিলিং ও শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৭ ০৩:৩৬
Share: Save:

রাজ্যের সঙ্গে সর্বদল বৈঠকে তাঁকে ডাকা হয়নি। কিন্তু তাঁর দলের অন্য নেতারা যোগ দিচ্ছেন। এই অবস্থায় গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুঙ্গের একটি অডিও বার্তা সামনে এল। সেই অডিও বার্তায় বৈঠকে যোগদানকারী নেতাদের প্রতি রীতিমতো ফতোয়া দেওয়ার সুরে গুরুঙ্গ বলেছেন, ‘‘রাজ্যের বৈঠকে অনেকে যাচ্ছেন। ভাল। তবে গোর্খাল্যান্ড ছাড়া কোনও কথা বলে ফিরলে ওই নেতাদের আর পাহাড়ে উঠতে দেওয়া হবে না।’’

রবিবার পাহাড়ের কয়েকটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এই বার্তায় কণ্ঠস্বরটি গুরুঙ্গের কি না, তা নিয়ে মোর্চার কোনও নেতাই কিছু বলতে চাননি। তবে এই অডিও বার্তাটি একাধিক জল্পনা উস্কে দিয়েছে। প্রথমত, বার্তা শোনার পরে পাহাড়ের একাংশের প্রশ্ন, তা হলে কি মোর্চার অন্দরে ভাঙন বেড়ে গিয়েছে? বৈঠকে যোগ দিতে যাওয়া নেতাদের হুঁশিয়ার করে দিয়ে কি সেটাই স্পষ্ট করে দিলেন গুরুঙ্গ? দ্বিতীয়ত, পাহাড়ের অনেকেরই দাবি, দল এবং আন্দোলনের রাশ যে ক্রমশ হাত থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে, গুরুঙ্গের বার্তায় সেটাও পরিষ্কার।

সম্প্রতি মোর্চার চিফ কো-অর্ডিনেটর হিসেবে বিনয় তামাঙ্গের নাম ঘোষণা করেছিল মোর্চা। পরে রাজ্যকে একটি চিঠিও পাঠান বিনয়। রাজ্যের সঙ্গে গোর্খাল্যান্ড নিয়ে ‘রাজনৈতিক আলোচনা’ চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠিয়েছিলেন গুরুঙ্গও। যদিও বিনয়ের চিঠিকে মান্যতা দিয়ে তাঁকেই আলোচনায় ডেকেছে রাজ্য। গত শনিবার মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটিও ঠিক করে, বিনয়ের নেতৃত্বেই মোর্চার প্রতিনিধিদল বৈঠকে যোগ দেবে। গুরুঙ্গের অডিও বার্তা প্রকাশ্যে আসার পরে প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি গুরুঙ্গের অমতেই মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটি বৈঠকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে? বিনয়ও কি চিঠি দেওয়া নিয়ে দলনেতাকে কিছু জানাননি? তাই কি দলের রাশ হাতে রাখতে গোর্খাল্যান্ডের প্রসঙ্গ উস্কে গুরুঙ্গের এই আগাম হুঁশিয়ারি কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। নাম না করে ‘দার্জিলিং এবং কার্শিয়াঙে’র কিছু নেতার বিরুদ্ধে আলোচনা না করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন মোর্চা সভাপতি।

আরও পড়ুন:নীল তিমি থেকে রক্ষা গোয়েন্দার শুশ্রূষায়

এ দিন ভেস্তে গিয়েছে জিএমসিসি-র বৈঠকও। রাজ্যের ডাকা সর্বদল বৈঠকে কমিটির কে কে যাবেন, বৈঠকের আগে বন্‌ধ তোলা হবে কি না, এমন সব সিদ্ধান্ত নিতেই কালিম্পঙে জিএমসিসি-র বৈঠকে ডাকা হয়। বিভিন্ন দলের প্রতিনিধিরা সকাল সাড়ে এগারোটা থেকে নির্দিষ্ট হোটেলে গিয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন। বেলা দু’টো নাগাদ তাঁদের জানানো হয়, এ দিনের বৈঠক বাতিল। বৃষ্টির জন্য এ দিন দার্জিলিঙের চকবাজারে মোর্চার সভাও ভেস্তে গিয়েছে।

এক সময়ে পাহাড়ের সব মোর্চা-বিরোধীকে একজোট করতে গুরুঙ্গরাই জিএমসিসি গঠন করেন। ঠিক ছিল, কমিটিই আন্দোলনের ব্যাপারে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেবে। কার্যক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, বন্‌ধ তোলার ব্যাপারেই গুরুঙ্গ তাঁর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছেন বাকিদের উপরে। ২৯ তারিখের সর্বদলের জন্য রাজ্য সরকার আলাদা করে কমিটিকে কোনও চিঠি দেয়নি। তাতেই পাহাড়ের নেতারা প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘তবে আর কমিটি থেকে লাভ কি?’’ বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তা এড়িয়ে গিয়ে মোর্চা নেতা কল্যাণ দেওয়ান বলেন, ‘‘পাহাড়ে কী হবে, তা সময়ই বলবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE