Advertisement
১১ মে ২০২৪

রাজ্যসভার জন্য হাত ধরা নিয়ে দ্বিধায় বাম শরিকরা

বাইরের আশ্বাস মিলছে। কিন্তু বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে ঘরেই! বিধানসভা ভোটে বিপর্যয়ের পরে রাজ্যে বামফ্রন্টের প্রায় সব শরিকই দলীয় স্তরে ময়না তদন্ত করে জানিয়েছিল, কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতায় যাওয়া ঠিক হয়নি।

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৭ ০৪:২৮
Share: Save:

বাইরের আশ্বাস মিলছে। কিন্তু বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে ঘরেই!

বিধানসভা ভোটে বিপর্যয়ের পরে রাজ্যে বামফ্রন্টের প্রায় সব শরিকই দলীয় স্তরে ময়না তদন্ত করে জানিয়েছিল, কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতায় যাওয়া ঠিক হয়নি। সমঝোতার জেরে শরিকদের বহু দিনের ভাগের আসন কংগ্রেসের কাছে চলে গিয়েছে, আবার অনেক জায়গায় শরিক বনাম কংগ্রেস লড়াইয়ে সিপিএম শরিকদের পাশে থাকেনি। এই পরিস্থিতিতে এখন আবার রাজ্যসভার প্রার্থী হিসাবে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিকে কংগ্রেসের সমর্থনের সম্ভাবনা ভেসে ওঠায় দ্বিধায় পড়েছে শরিক মহল!

সিপিএম তাদের দলের অভ্যন্তরীণ সমস্যা কাটিয়ে ইয়েচুরিকেই কংগ্রেস সমর্থনে প্রার্থী করলে কী করবেন শরিক দলের বিধায়কেরা? আরএসপি এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের পরিষ্কার সিদ্ধান্ত ছিল, কংগ্রেসের হাত ধরা ভুল হয়েছে। তা হলে এখন? আরএসপি-র রাজ্য সম্পাদক ক্ষিতি গোস্বামী ইয়েচুরির প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনাকে ‘সংসদীয় সুবিধাবাদী রাজনীতি’ হিসাবেই দেখছেন। তাঁর কথায়, ‘‘কিছু দিন আমরা না হয় ভোটে হারলাম। আন্দোলন তো থেমে থাকবে না। কিন্তু সুবিধাবাদী পথে গেলে বাম রাজনীতির আরও বড় ক্ষতি হবে।’’ ফ ব-র রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় তুলনায় নমনীয়। তিনি বলছেন, ‘‘তেমন হলে আমরা ইয়েচুরিকে সিপিএমের প্রার্থী হিসাবে ভোট দেব। কংগ্রেস তাঁকে সমর্থন করলে সেটা তাদের ব্যাপার।’’ দুই দলেরই এখন দু’জন করে বিধায়ক।

সিপিআইয়ের রাজ্য নেতৃত্ব কংগ্রেস-প্রশ্নে আপত্তি তুললেও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির ঐক্যের পক্ষেই ছিলেন। এখন রাজ্যসভা ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের উদ্ভুত পরিস্থিতি ঘিরে কী করণীয়, তা নিয়ে আলোচনা হবে আগামী ২৫-২৬ মে মুম্বইয়ে সিপিআইয়ের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে। দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মঞ্জুকুমার মজুমদারের বক্তব্য, ‘‘দলে আলোচনা হলে তবেই এই নিয়ে বলা যাবে।’’

আরও পড়ুন: দেশে অভিন্ন বিজ্ঞান পাঠে রাজি সংসদ

কংগ্রেসের পরিষদীয় নেতৃত্ব অবশ্য বলছেন, ইয়েচুরিকে প্রার্থী করা হবে বলে সিপিএমের সঙ্গে তাঁদের সমঝোতা হলে শরিকদের পাঁচ বিধায়কের আপত্তি থাকলেও কিছু এসে যাবে না। রাজ্যসভায় এ বার ৬ জন প্রার্থী নির্বাচনের সময়ে এক এক জনের জন্য লাগবে ৪২টি ভোট। দলত্যাগীদের বাদ দিয়েও কংগ্রেসের ৩৮ জন বিধায়ক থাকবেন। তার পরে থাকছে সিপিএম। সুতরাং ইয়েচুরির রাস্তা মসৃণই থাকবে।

কিন্তু বাম নেতৃত্বের একাংশের আশঙ্কা, রাজ্যসভার ফলে হয়তো শেষমেশ কোনও প্রভাব পড়বে না। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটের আগে বামফ্রন্টের মধ্যে আবার মতান্তর নতুন জটিলতা তৈরি করে রাখবে। সিপিএমের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে ফ্রন্টে সবিস্তার আলোচনা চান তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sitaram Yechury Congress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE