Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

প্রকাশ্যে ইস্তফা দিতে চাপ তৃণমূলকে

সকাল থেকে সন্ধে, যেখানেই দেখা গিয়েছে কাউন্সিলরদের, এ ভাবেই মোর্চা সমর্থকেরা একসঙ্গে মিলে তাঁদের উপরে চাপ তৈরি করেছেন বলে অভিযোগ। রেহাই পাননি মিরিক পুরসভার চেয়ারম্যান লালবাহাদুর রাই ও ভাইস চেয়ারম্যান মণিকুমার জিম্বাও।

ইস্তফা দিন, মোর্চার হুমকি ভরা বাজারে। —নিজস্ব চিত্র।

ইস্তফা দিন, মোর্চার হুমকি ভরা বাজারে। —নিজস্ব চিত্র।

কিশোর সাহা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৭ ০৩:৪৪
Share: Save:

এত দিন বাড়িতে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। এ বার মিরিকে ভরা বাজারে তৃণমূলের কাউন্সিলরদের ধরে ধরে হুঁশিয়ারি দেওয়া হল, তাড়াতাড়ি ইস্তফা দিন।

সকাল থেকে সন্ধে, যেখানেই দেখা গিয়েছে কাউন্সিলরদের, এ ভাবেই মোর্চা সমর্থকেরা একসঙ্গে মিলে তাঁদের উপরে চাপ তৈরি করেছেন বলে অভিযোগ। রেহাই পাননি মিরিক পুরসভার চেয়ারম্যান লালবাহাদুর রাই ও ভাইস চেয়ারম্যান মণিকুমার জিম্বাও।

এমন প্রবল চাপের মুখে কয়েক জন কাউন্সিলর ইস্তফা দেবেন বলে জানাতে বাধ্য হয়েছেন। বাকিরাও নিমরাজি। তৃণমূলের তরফে ভোটের সময়ে মিরিক পুরসভার দায়িত্বে ছিলেন বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘মিরিকে যা ঘটছে তা গণতন্ত্রের পক্ষে বিপজ্জনক। এ ভাবে নির্বাচিতদের উপরে রাস্তাঘাটে গা জোয়ারি করা অন্যায়। দলের শীর্ষ স্তরের নেতাদের জানিয়েছি। ওঁরা দেখছেন।’’

দু’মাস আগে পুরভোটে জিতে মিরিক দখল করে তৃণমূল। জুনের শুরুর দিকে পাহাড় সফরে গিয়ে মিরিক পুর এলাকার উন্নয়নে প্রায় ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কী ভাবে ভোটের আগে মোর্চা বিরোধীরা সেখানে জোট বেঁধেছিল, সেই ‘মিরিক মডেল’ নিয়েও আলোচনা শুরু হয়ে যায় সব মহলে।

আরও পড়ুন: মসুলের জেলে ৩৯ ভারতীয়, ধারণা সুষমার

তাতে মোর্চার নেতারা প্রমাদ গোনেন। তাঁদের মনে হয়, জিটিএ ভোটে বিরোধীরা জোট বাঁধলে বড় বিপদ। এ বারে আলাদা রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন শুরুর পরে জিএনএলএফ, সিপিআরএম, জাপের মতো প্রধান বিরোধীদের নিয়ে কমিটি গড়েছে মোর্চা। ফলে এদের নিয়ে এখন আর তেমন চিন্তা নেই। কিন্তু তৃণমূলের জয়ী প্রার্থীদের নতি স্বীকার করাতে না পারলে পুরোপুরি নিশ্চিন্ত হওয়া সম্ভব নয়।

মোর্চার অন্দরের খবর, এই দুশ্চিন্তা থেকেই দার্জিলিঙে একমাত্র তৃণমূল কাউন্সিলর চুংচুংকে ইস্তফায় বাধ্য করানো হয়েছে। সেই সঙ্গে মিরিক পুরসভায় যাতে ফের ভোট হয়, তেমন পদক্ষেপ করছে মোর্চা। তৃণমূল কাউন্সিলররা ইস্তফা দিলে ভোট হবেই। আর তখন সমতলের কোনও দলের পক্ষে সেখানে দাঁত ফোটানো প্রায় অসম্ভব হবে।

মিরিক পুরসভার চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘নিরাপত্তা আছে। কিন্তু, অনবরত হাট-বাজার, দোকানে যাতায়াতের পথে চাপ দেওয়া হচ্ছে। চাপ সহ্য করা বেশ কঠিন।’’ রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব পাহাড়বাসীর রায়কে সম্মান জানানোর জন্য মোর্চাকে অনুরোধ করেছেন। মন্ত্রীর অভিযোগ, বন্দুক ঠেকিয়ে হুমকি দিয়ে কাউকে দলে টানাটা গণতন্ত্রের পক্ষে লজ্জার। মোর্চা কিন্তু এমন কোনও হুমকি দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE