সৈয়দ মহম্মদ হুসেন মির্জা
নারদ-কাণ্ডে মুকুল রায়কে ইডি-র জেরার দিনেই আর এক অভিযুক্ত আইপিএস এসএমএইচ মির্জাকে সাসপেন্ড করল রাজ্য সরকার। তবে এই শাস্তির সঙ্গে নারদ-কাণ্ডের কোনও যোগ নেই বলেই নবান্ন সূত্রের দাবি। প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তা জানাচ্ছেন, স্পেশাল স্ট্রাইকিং ফোর্সের সুপার থাকাকালীন চলতি বছরের ১২ মার্চ মির্জার বিরুদ্ধে সৌভাগ্য দাস নামে ওই বাহিনীর এক সাব ইনস্পেক্টরকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। আত্মঘাতী অফিসারের স্ত্রী সোনামণি দাস উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবি জানিয়ে নবান্নে আবেদন করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে বিভাগীয় তদন্তের শেষে মির্জাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
ঘটনাচক্রে এ দিনই তদন্তকারীদের প্রশ্নের মুখে প্রাক্তন তৃণমূল নেতা মুকুল রায় ছদ্মবেশী সাংবাদিক ম্যাথু স্যামুয়েলকে মির্জার কাছে পাঠানোর কথা কবুল করেছেন বলে ইডি সূত্রের দাবি। নারদ-কাণ্ডে মির্জার নাম আগেই জড়িয়েছিল। স্টিং অপারেশনের প্রকাশিত ফুটেজে তাঁকে ম্যাথুর কাছ থেকে টাকা নিতে দেখা গিয়েছে। এর পরেই মির্জাকে সাসপেন্ড করার দাবি উঠেছিল।
কিন্তু তাতে কান পাতেননি নবান্নের কর্তারা। এখন তাঁকে অন্য মামলায় সাসপেন্ড করার পরে পুলিশের একাংশের বক্তব্য, মির্জা মুকুল রায়ের খুবই ঘনিষ্ঠ ছিলেন। সেই সুবাদে ক্ষমতার অলিন্দে অবাধ যাতায়াত ছিল তাঁর। মুকুল যত দিন তৃণমূলে ছিলেন, তত দিন মির্জার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা থেকে বিরত ছিল নবান্ন। এক পুলিশ কর্তার কথায়, ‘‘মুকুল বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁর ঘনিষ্ঠ আইপিএস এডিজি (সিআইডি) রাজেশ কুমারকে সরিয়ে দিয়েছিল নবান্ন। একই কারণে মির্জাকে সাসপেন্ড করে গোটা পুলিশমহলে বার্তা দিল প্রশাসন।’’
ইডি সূত্রের খবর, এ দিন জিজ্ঞাসাবাদের সময় মুকুল জানিয়েছেন, ম্যাথু তাঁর কাছে গিয়ে জানান, তিনি বর্ধমানে বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করতে চান। তা শুনে তিনি ম্যাথুকে বর্ধমানের তৎকালীন পুলিশ সুপার মির্জার সঙ্গে দেখা করতে বলেন। কিন্তু, বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরিতে উৎসাহীকে সংশ্লিষ্ট দফতরে না পাঠিয়ে কেন তিনি পুলিশ সুপারের কাছে পাঠিয়েছিলেন তার কোনও সদুত্তর মুকুল দিতে পারেননি
বলে তদন্তকারীদের একাংশের
দাবি। তবে ম্যাথুর কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কথাও মুকুল অস্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে ইডি সূত্র। ইডি কর্তাদের মতে, মুকুলের দেওয়া বয়ান যাচাই করে দেখা হবে। প্রয়োজনে মির্জাকে আবার ডেকে পাঠানো হতে
ইডি দফতর থেকে ফিরে মুকুল বলেন, ‘‘আমি আইন মেনে চলা নাগরিক। কোনও তদন্তকারী সংস্থা ডেকে পাঠালে আমি যাব। তদন্তে সাহায্য করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy