একে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, তায় বদমেজাজি! এ হেন চিন্নাস্বামী স্বামীনাথন কারনানকে শান্ত রাখতে প্রতিদিন সকালে তাঁর পছন্দের ইডলি-সম্বর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষ। প্রাতরাশে ইডলি এবং দুপুরে সম্বর পেয়ে কারনান বেশ খোশমেজাজে। কারারক্ষীদের সঙ্গে সহযোগিতাও করছেন।
গত বৃহস্পতিবার এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে কারনানকে সোজা আনা হয় প্রেসিডেন্সি জেলের হাসপাতাল ওয়ার্ড। সেখানকার দো’তলার একটি বে়ডে ২৪ ঘণ্টা নজরদারিতে রয়েছেন তিনি। জেলের এক কর্মীর কথায়, ‘‘ওই ঘরে কারনান ছাড়াও আরও দু’তিন জন বয়স্ক বন্দি রয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে বেশ খোশগল্প করেই সময় কাটাচ্ছেন কারনান।’’
জেল সূত্রে খবর, ভোর ছ’টার আগেই প্রতিদিন উঠে পড়েন কারনান। চা খেয়ে বেরিয়ে হাসপাতালের সামনের চত্বরে একটু হাঁটাহাঁটির পরে বাথরুমে যান। ফিরে এসে ফের চা। এর কিছু ক্ষণ পরেই জেলের ক্যান্টিনে বিশেষ ভাবে তৈরি ইডলি-সম্বর-চাটনি দেওয়া হয় তাঁকে। দুপুরে বরাদ্দ ভাত, সম্বর, টক দই, একটা তরকারি এবং কখনও কখনও ডিমসেদ্ধ। সন্ধ্যায় ফের চা-বিস্কুট, রাতে মাংস-রুটি। বিচারপতি বলেই কি তাঁর জন্য বিশেষ ডায়েট?
আরও পড়ুন:কলেজে ঘাঁটি গাড়া আর নয়
কারা দফতরের কর্মীরা জানাচ্ছেন, জেলের নিয়ম অনুযায়ী, কোনও বন্দি যদি অসুস্থ হন, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে সংশ্লিষ্ট বন্দিকে সাধারণের থেকে আলাদা খাবার দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে। এক কারা-কর্তা বলেন, ‘‘সকালে ইচ্ছে করেই ওঁর পছন্দের ইডলি দেওয়া হচ্ছে। যাতে উনি জেলের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেন। আমাদের এখানে কেউ দোসা কিংবা উত্তপম বানাতে জানে না। তা হলে ও-সবও দেওয়া হতো।’’
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বিচারপতি কারনানকে গত ২০ জুন তামিলনাড়ুর কোয়ম্বত্তূরের একটি রিসর্ট থেকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশের বিশেষ দল। ২১ জুন তাঁকে কলকাতায় এনে প্রেসিডেন্সি জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়ায় ওই রাতেই তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে রাতেই জেল হাসপাতালে ফিরিয়ে আনা হয় ধৃত বিচারপতিকে। ২২ জুন নানা শারীরিক সমস্যায় এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, তাঁর মাথা ঘোরার সমস্যা রয়েছে। ইসিজি-তে ইসকিমিক হার্টের সমস্যাও মিলেছে। এ ছাড়াও, তিনি বহু দিন ধরেই উচ্চরক্তচাপ ও ডায়াবেটিসে ভুগছেন। তাঁর ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিসঅর্ডার (সিওপিডি)-র সমস্যাও রয়েছে। শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় গত বৃহস্পতিবারই তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এর পরেই তাঁকে প্রেসিডেন্সি জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। তার পর থেকে তাঁর ঠাঁই হয়েছে জেল হাসপাতালে। এখন অবশ্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে হার্টের সমস্যা ছাড়া অন্য কিছুর ওষুধ দেওয়া হচ্ছে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy