Advertisement
০৫ মে ২০২৪

মূলস্রোতে ফিরতে চান কেএলও প্রধান

৪০ জন আত্মসমর্পণকারী কেএলও জঙ্গির সই করা একটি চিঠিও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ মারফৎ মুখ্যমন্ত্রীর হাতে পৌঁছেছে। তাতে প্রাক্তন জঙ্গিরা দ্রুত পুনর্বাসনের আর্জিও জানিয়েছেন। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘সেই আবেদন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বিবেচনার জন্য জমা দিয়েছি।’’

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

কিশোর সাহা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৭ ০৪:০১
Share: Save:

কয়েক দিন আগেই মারা গিয়েছেন স্ত্রী। ফুটফুটে দুই মেয়ে সরকারি অনাথ আশ্রমে। এ বার জীবন সিংহ তাদের টানেই মূলস্রোতে ফিরতে চাইছেন।

কেএলও শুরু হয়েছিল তাঁর হাতেই। কুমারগ্রামের হলদিবাড়িতে বাড়ি। সেই এলাকারই মেয়ে ভারতী দাসকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। ভারতী সম্প্রতি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে ভুটান থেকে শিলিগুড়ি নিয়ে এসেও বাঁচানো যায়নি। তারপরেই কেএলওর একাধিক প্রাক্তন সদস্য মূলস্রোতে ফেরার আবেদনও করেছেন। ৪০ জন আত্মসমর্পণকারী কেএলও জঙ্গির সই করা একটি চিঠিও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ মারফৎ মুখ্যমন্ত্রীর হাতে পৌঁছেছে। তাতে প্রাক্তন জঙ্গিরা দ্রুত পুনর্বাসনের আর্জিও জানিয়েছেন। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘সেই আবেদন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বিবেচনার জন্য জমা দিয়েছি।’’

সরকারি সূত্রের খবর, আত্মসমর্পণকারী জঙ্গিরা চিঠিতে কেএলওর স্বঘোষিত ‘চিফ’ জীবনবাবুর মূলস্রোতে ফেরার বিষয়ে কিছু লেখেননি। তবে তাঁদের কয়েক জন রবীন্দ্রনাথবাবুর সঙ্গে দেখা করে জানান, সরকারি তরফে সাড়া মেলার আশ্বাস পেলে কেএলও চিফ-ও মূলস্রোতে ফিরবেন। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, সে কারণে চিঠিটি পাওয়ার পরে তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। আত্মসমর্পণের পরে পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে সরকারি সাহায্য পাননি বলে অভিযোগ করছেন কিছু প্রাক্তন কেএলও জঙ্গি। সেই অভিযোগও প্রশাসনিক স্তরে খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন।

তৃণমূল ক্ষমতাসীন হওয়ার পরে একাধিক দাপুটে মাওবাদী নেতা আত্মসমর্পণ করে মূলস্রোতে ফিরেছেন। সেই প্রেক্ষাপটে কেএলও চিফ জঙ্গি শিবির ছেড়ে মা-হারা মেয়েদের টানে ঘর-গেরস্থালিতে ফিরবেন বলে আশা করছেন তাঁর আত্মীয়-স্বজনরাও। রাজ্য পুলিশের উত্তরবঙ্গের এক কর্তা জানান, প্রাক্তন কেএলও ধনঞ্জয় বর্মন অনেক দিন ধরেই জীবন মূলস্রোতে ফিরতে চান বলে আশা প্রকাশ করছেন। সে জন্য সরকারের তরফে কতটা সহযোগিতা মিলবে, তা নিয়েও খোঁজখবর করছেন ধনঞ্জয় ও তাঁর স্ত্রী সুমিত্রাও। দু’জনেই একসময় কেএলও শিবিরে ছিলেন। সুমিত্রা জীবনের বোন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা চাইছি দাদা মূলস্রোতে ফিরুক। দাদার মেয়েদের আমাদের কাছে রাখার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করব।’’

১৯৯৩ সালে জীবনের নেতৃত্বে শুরু হওয়া কেএলও ভুটানে সেনা অভিযানের সামনে পড়ে দুর্বল হয়ে পড়ে। সেই থেকে জীবন সপরিবার পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। এখন স্ত্রী ও মেয়েদের ছেড়ে তিনি কয়েকজন সঙ্গীকে নিয়ে জীবন কাটাচ্ছেন।

(সহ-প্রতিবেদন রাজু সাহা)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE