বিচারকের রায় জানতে চোখে মুখে উৎকণ্ঠা নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন অপর্ণার বাবা। পাঁচ বছর আগে পার্সেল বোমা বিষ্ফোরণে প্রাণ হারান অপর্ণা বিশ্বাস।সেই মামলায় দোষী প্রিন্স ঘোষ ও রাজকুমার ঋষি তখন কাঠগড়ায় হাত জোড় করে দাঁড়িয়ে। বৃহস্পতিবার পার্সেল বোমা বিষ্ফোরণ কাণ্ডে দু’জনকেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিলেন মালদহের অ্যাডিশনাল সেশন জজ থার্ড কোর্টের বিচারক আশিস দেব। রায় শুনে দোষীদের মুখে স্বস্তি। তবে অন্ধকার নামল নিহত স্কুল শিক্ষিকার বাবা স্বরূপরঞ্জন বিশ্বাসের মুখে।
স্বরূপবাবু বলেন, ‘‘আমরা ভেবেছিলাম প্রিন্সের ফাঁসি ও রাজকুমারের যাবজ্জীবন হবে। তবে বিচারক দু’জনকেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন।’’ বিচার ব্যবস্থার তাঁর যে আস্থা রয়েছে তাও জানান তিনি। তবুও প্রিন্সের মৃত্যুদণ্ড চেয়ে প্রয়োজনে উচ্চ আদালতে যাবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। আসামী পক্ষের আইনজীবী ফণিভূষণ সরকারও জানান, রায়ের বিরুদ্ধে তাঁরা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হবেন।
২০১১ সালের ২৪ এপ্রিল ওই খুনের ঘটনা ঘটে। ইংরেজবাজার শহরের রামকিঙ্কর বালিকা বিদ্যালয়ের বাংলার শিক্ষিকা ছিলেন অপর্ণা বিশ্বাস। গাজলের রানিগঞ্জের বাসিন্দা অপর্ণাদেবী ইংরেজবাজার শহরের মালঞ্চ পল্লিতে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন। এখানেই তাঁর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল পুরাতন মালদহের মঙ্গলবাড়ির বাসিন্দা পেশায় টিভি মেকানিক প্রিন্স ঘোষের।
কিন্তু সেই সম্পর্কে টানাপড়েন শুরু হতেই অপর্ণাদেবীকে খুনের ষড়যন্ত্র করেছিল প্রিন্স। সামিল হয়েছিল রাজকুমার ঋষিও। স্কুল থেকে ফিরে পার্সেল খুলতেই বিষ্ফোরণে মৃত্যু হয় ওই স্কুল শিক্ষিকার। এর পরে এলাকায় ও হাসপাতালেও গিয়েছিল দুই যুবক।
ঘটনার পরের দিন অর্থাৎ ২৫ এপ্রিল অভিযুক্তরা গ্রেফতার হওয়ার ৭৭ দিন পর আদালতে চার্জশিট পেশ করে পুলিশ। বুধবারই ৩২ জন সাক্ষীর বয়ানের ভিত্তিতে প্রিন্স ও রাজকুমারকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এ দিন সাজা ঘোষণার আগে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে শুনানি হয়। সারাক্ষণই বিচারকের সামনে হাত জোড় করে দাঁড়িয়েছিল প্রিন্স ও রাজকুমার। সরকারি পক্ষের আইনজীবী তড়িৎ ওঝা বলেন, ‘‘বিচারক দোষীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং দশ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy