ফাইল চিত্র।
রাজ্য জুড়ে প্রবল বৃষ্টিতে নষ্ট হয়েছে কাঁচা আনাজ। ফলে কলকাতা ও জেলার বাজারে তরিতরকারির দাম আকাশছোঁয়া। পেঁয়াজে হাত দিলেই যে ছেঁকা লাগছে, কোনও কোনও রাজ্যের অতিবর্ষণ আর কিছু রাজ্যের শুখা আবহাওয়াই তার কারণ।
পেঁয়াজ-সহ আনাজের দাম বৃদ্ধি নিয়ে কাল, বৃহস্পতিবার নবান্নে টাস্ক ফোর্সের বৈঠক ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নের খবর, অতিবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতির ফলে পাইকারি বাজারে আনাজের দাম মাঝেমধ্যেই উঠছে-পড়ছে। সেই সুযোগটা নিচ্ছেন খুচরো বিক্রেতাদের একাংশ। তাই আনাজের বাজার আগুন হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন টাস্ক ফোর্সের প্রতিনিধিরা।
জেলার বাজারে বসিরহাটের ‘সাদা’ পটল ৬০ টাকা এবং ‘কালো’ পটল ৪০ টাকা কিলোগ্রাম দরে বিকোচ্ছে। বেগুনের কেজি ৫৫-৬০ টাকা। একটি লাউ ৫০ টাকা। ঝিঙে ৪০, কাঁচালঙ্কা ৭০-৮০, বরবটি ৪০-৫০, কুমড়ো ২০, উচ্ছে ৬০, করলা ৪৫-৫০ টাকা কেজি। কলকাতার বাজারে এই সব আনাজের প্রতিটিই ১০-২০ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে।
আরও পড়ুন:পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ
পেঁয়াজের দামের উপরে এ রাজ্যের অতিবৃষ্টির প্রভাব সাধারণ ভাবে পড়ার কথা নয়। কেননা তা আসে মূলত কর্নাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানা, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ, নাসিক থেকে। কিন্তু বিপত্তি ভিন্ রাজ্যেও। কর্নাটক, অন্ধ্রে বৃষ্টি না-হওয়ায় পেঁয়াজের আকার বাড়েনি। শুখা আবহাওয়ায় সেখানকার বেশির ভাগ পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আবার গুজরাত, মধ্যপ্রদেশে অতিবৃষ্টির ফলে নষ্ট হয়েছে পেঁয়াজ। ফলে পেঁয়াজ সরবরাহে একমাত্র ভরসা নাসিক। মহারাষ্ট্রের আকোলা থেকেও অবশ্য কিছু পেঁয়াজ আসছে এ রাজ্যে। কিন্তু তাতে দাম বৃদ্ধি ঠেকানো যাচ্ছে না। বছরের এই সময়টায় প্রতি কিলোগ্রাম পেঁয়াজের পাইকারি দাম সাধারণ ভাবে ১০-১১ টাকার মধ্যে থাকে। কিন্তু এ বার পোস্তা, কোলে মার্কেটে সেটা ৩০-৩৫ টাকায় পৌঁছে গিয়েছে। খুচরো বাজারে সেটাই বিকোচ্ছে ৪৫ থেকে ৬০ টাকায়।
মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার বলেন, ‘‘অন্যান্য বার আমরা এপ্রিল পর্যন্ত পেঁয়াজ সরবরাহ করি। এ বার অতিরিক্ত তিন মাস অর্থাৎ জুলাই পর্যন্ত পেঁয়াজ সরবরাহ করা গিয়েছে। তাই এত দিন তেমন সমস্যা হয়নি। কিন্তু ভিন্ রাজ্য থেকে পেঁয়াজ আমদানি ভীষণ ভাবে কমে যাওয়ায় এখন সমস্যা হচ্ছে।’’
দামের ঝাঁজ এখন আদা-রসুনেও। গড়িয়াহাট বাজারের ব্যবসায়ী দিলীপ মণ্ডল জানান, শিলং ও শিলিগুড়ির আদা ৮০-১০০ টাকা এবং নাগপুর, ইলাহাবাদের রসুন ১০০-১২০ টাকা কিলোগ্রাম দরে বিক্রি হচ্ছে।
বর্ষার মরসুমে করলা, উচ্ছে, লম্বা ঝিঙে, বেগুন, পটল, লাউয়ের ফলন ভাল হয়। মূলত উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, হুগলি, বীরভূম, বাঁকুড়া, দুই মেদিনীপুর থেকে ওই সব আনাজ আসে কলকাতায়। ‘‘প্রবল বৃষ্টিতে জলে ডুবে আনাজ পচেছে। অনেকে আবার ঘরে ফসল তুলেও তা বিক্রি করতে পারেননি। ফলে বাজার আগুন,’’ বললেন কোলে মার্কেটের এক ব্যবসায়ী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy