Advertisement
০৬ মে ২০২৪

বিজেপি রুখতে গ্রামে ঝাঁপাতে নির্দেশ মমতার

উত্তরপ্রদেশের ভোট ফলাফলের পর এখন বাংলাতেও ঈশান কোণে গেরুয়া মেঘ দেখছে শাসক দল। বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ বুথে বুথে সংগঠন সাজানোর পথে হাঁটছেন।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

শঙ্খদীপ দাস ও সোমনাথ চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৭ ০৩:০৫
Share: Save:

উত্তরপ্রদেশের ভোট ফলাফলের পর এখন বাংলাতেও ঈশান কোণে গেরুয়া মেঘ দেখছে শাসক দল। বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ বুথে বুথে সংগঠন সাজানোর পথে হাঁটছেন। তার আগেই জেলার প্রতি ব্লকে পঞ্চায়েত সম্মেলন করে সাংগঠনিক দিক দিয়ে এগিয়ে থাকতে চাইছে তৃণমূল। সেই সঙ্গে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সরকারি প্রকল্পগুলির প্রচার করার বিষয়টিকে হাতিয়ার করা হচ্ছে। রাজ্যে বিজেপিকে ঠেকাতে কোমর বাঁধার নানা কৌশলের অঙ্গ হিসেবে এমনকী পঞ্চায়েত ভোট এগিয়ে আনার ভাবনাও শুরু হয়েছে।

ইতিমধ্যেই এই মনোভাবের কথা জেলা নেতৃত্বকে জানিয়ে দেওয়া শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে জেলার নেতাদের বলা হয়েছে, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরেই তাঁরা যেন প্রতিটি ব্লকে পঞ্চায়েত সম্মেলন শুরু করে দেন। তার পর বুথ ধরে ধরে মিটিং-মিছিলও করতে হবে। দলের পঞ্চায়েতের নেতা-কর্মীদের প্রধান কাজ হবে, খাদ্য সাথী, সবুজ সাথী, বৈতরণী, কন্যাশ্রী ও যুবশ্রীর মতো সরকারি প্রকল্পগুলির সুবিধার কথা বাড়ি বাড়ি প্রচার করা। কেউ কোনও সুবিধা থেকে বঞ্চিত হলে তাকে তা পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থাও করতে হবে। একই ভাবে সরকারি প্রকল্পের বাস্তবায়ন ঠিক মতো হচ্ছে কি না, তা পর্যালোচনা করতেও বিডিওদের নির্দেশ পাঠানো হচ্ছে নবান্ন থেকে। সম্প্রতি কলকাতায় পঞ্চায়েত সম্মেলন ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে পঞ্চায়েত সদস্যদের ভাতা বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

সম্প্রতি দলের কোর গ্রুপের বৈঠকেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ রাজ্য সরকারই স্থির করবে। সূত্রের খবর, দলের শীর্ষ স্তরে নেত্রী ইঙ্গিত দিয়েছেন— এই ভোট কয়েক মাস এগিয়ে আনা হতে পারে। পঞ্চায়েত ভোট হওয়ার কথা আগামী বছরের জুন নাগাদ। তার বদলে আগামী বছরের গোড়াতেই তা করার কথা ভাবছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব।

কিন্তু পঞ্চায়েত ভোট এগিয়ে এনে লাভ কী হতে পারে? বিশেষ করে রাজ্যে এমনিতেই যখন পঞ্চায়েত স্তরে তৃণমূলের একাধিপত্য রয়েছে।

জবাবে দলের এক মন্ত্রী এ দিন বলেন, উত্তরপ্রদেশের ভোটে সাফল্য পেয়ে এ বার বাংলায় ঝাঁপাতে চাইছে বিজেপি। অমিত শাহ স্পষ্ট করে দিয়েছেন, তাঁদের লক্ষ্য হবে বাংলায় বুথ স্তরে কমিটি গঠন করা। এ জন্য ব্লক পিছু বিজেপি মোটা টাকা খরচ করার পরিকল্পনাও নিয়েছে। বিজেপি যাতে ওই পরিসর নিতে না-পারে সেটাই নিশ্চিত করতে চাইছেন তৃণমূল নেত্রী। তা ছাড়া পঞ্চায়েত-পুরভোট আগে হয়ে গেলে লোকসভা ভোটের অনেক আগে থেকে নিচু স্তরে একটা পরিকাঠামো তৈরি হয়ে থাকবে। দলের দাবি, গ্রামের এই জনভিত্তিটাই তৃণমূলের মূল শক্তি।

এ ব্যাপারে কার্যকারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে দলের আর এক প্রবীণ নেতা বলেন, একটা বিষয় পরিষ্কার যে বাংলায় ধর্মীয় মেরুকরণ ঘটাতে বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবার এ বার আরও তেড়েফুঁড়ে নামার কথা ভাববে। তা মোকাবিলার একটাই পথ— সরকারি পরিষেবা ও সুবিধাকে পঞ্চায়েত স্তরে নিয়ে যাওয়া। মমতা এ ভাবেই ৭ কোটি মানুষকে পাশে পেয়েছেন। সেই ‘মেকানিজমটাই’ আরও শক্তিশালী করার কথা ভাবছেন নেত্রী। পঞ্চায়েত ভোট এগোনোর ভাবনা এই সামগ্রিক কৌশলেরই একটা অংশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Mamata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE