উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের দূরপাল্লার ট্রেনগুলির কামরা থেকে প্রায়ই চুরি হচ্ছে বালিশ, চাদর। চুরি বাড়তে বাড়তে এমন অবস্থা যে, রোজ চাদর-বালিশ সরব রাহ করাই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে! রেল কর্তারা তাই চাইছেন, যাত্রীরা নিজের গাঁটের কড়ি খরচ করে এ সব কিনে নিন।
কর্তাদের মতে, এর ফলে এক ঢিলে দুই পাখি মারা যাবে। একে তো এই ব্যবস্থা চালু হলে চুরি কমে যাবে। তার উপরে, ব্যবহার করা চাদর, বালিশ যাত্রীরাই নিয়ে গেলে তা কাচার ঝঞ্ঝাটও কমবে। পরিচ্ছন্নতা নিয়ে অভিযোগও কমে যাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা। চুরি ঠেকাতে তাই শীঘ্রই উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের কিছু ট্রেনে পরীক্ষামূলক ভাবে এই ‘প্যাকেট বেড রোল’ বিক্রি শুরু হতে চলেছে। ঠিক হয়েছে, যাত্রীদের আসন সংরক্ষণ করার সময়েই চাদর, বালিশের টাকা নিয়ে নেওয়া হবে। সে জন্য দিতে হবে অতিরিক্ত দেড় থেকে দু’শো টাকা।
উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেল সূত্রের খবর, নিউ জলপাইগুড়ি, গুয়াহাটি এবং কাটিহার— এই তিন স্টেশনে রোজ গড়ে দু’শো বালিশ ও সাড়ে তিনশো চাদর চুরি যায়। চাদর-বালিশ পিছু রেলের খরচ পড়ে প্রায় দু’শো টাকা। রেলের এক আধিকারিকের দাবি, যাত্রীরাই যে চাদর নিয়ে চলে যান তা নয়। ট্রেন গন্তব্যে পৌঁছনোর পরে কামরায় বহু অবাঞ্ছিত লোকেরা উঠে পড়ে। তারাই অনেকে এ সব নিয়ে চম্পট দেয় বলে অভিযোগ। তার জন্যই এই ব্যবস্থা চালুর কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এই জোনের কর্তারা। এর আগে বাতানুকূল কামরায় বেডরোল নিয়ে যাত্রীদের ভূরি ভূরি অভিযোগ পেয়েই বিশেষ ‘ই-বেডরোল’ তৈরি করে বিক্রির ব্যবস্থা করেছিল রেল কতৃর্পক্ষ। দুটি প্যাকেটের একটিতে একটি বালিশ, দুটি চাদর এবং অন্যটিতে একটি কম্বল থাকত। বলা হয়েছিল, যাঁদের ট্রেনের বালিশ, চাদর পছন্দ হবে না, তাঁরা ওই ‘প্যাকেট বেড রোল’ কিনে ব্যবহার করতে পারবেন। যাত্রা শেষ করে চাইলে সেগুলি তাঁরা বাড়িও নিয়ে যেতে পারবেন।
পাইলট প্রকল্প হিসাবে তা শুরু করা হয়েছিল, দিল্লি, মুম্বই, কলকাতা চেন্নাই-সহ আরও কয়েকটি বড় স্টেশনে। কিন্তু রেলের ওই পরিকল্পনা তেমন সফল হয়নি। তবে এই জোনে বালিশ, চাদর চুরিতে যে হারে ক্ষতি বাড়ছে তাতে এই নতুন নিয়ম চালু হলে ক্ষতি অনেকটাই এড়ানো যাবে বলে রেলকর্তাদের বক্তব্য। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহারের ডিভিশনাল ম্যানেজার উমাশঙ্কর সিংহ যাদব বলেন, ‘‘বোর্ডের নির্দেশ পেলেই নিয়ম কার্যকর করা হবে।’’ রেল সূত্রের খবর, প্রথমে এই ব্যবস্থা কার্যকর হবে দার্জিলিং মেল, দু’টি রাজধানী-সহ কিছু বাছাই করা ট্রেনে। তবে বেডরোল কেনা বাধ্যতামূলক নয়। নতুন চাদর-বালিশ চাই কি না তা টিকিট সংরক্ষণের সময়েই জেনে নেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy