আংটিময়: কোনও আঙুলই বাদ নেই রোশন গিরির। ফাইল চিত্র
বন্ধের ফতোয়া দিয়েই ঠাকুর-ঘরে বসে এক-দু’ঘণ্টা পুজো দেওয়াটা বিমল গুরুঙ্গের রেওয়াজ। তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং ভগ্নীপতি রোশন গিরির সব আঙুলই আংটিতে ভর্তি। কোনও কোনও আঙুলে আবার দু’টি করে আংটি। মোর্চার এই দুই শীর্ষ নেতা এখন ভবিষ্যৎ জানতে সমানে যোগাযোগ করে চলেছেন জ্যোতিষীদের সঙ্গে। আর সেই সূত্র ধরেই দু’জনকে নাগালে পেতে চাইছে পুলিশ এবং সিআইডি।
দুই নেতাকে অবশ্য ভাল খবর শোনাতে পারছেন না জ্যোতিষীরা। পাহাড়-সমতলের যে ক’জন জ্যোতিষীর সঙ্গে তাঁরা যোগাযোগ করেছিলেন, তাঁরা সকলেই জানিয়েছেন, রাজযোগ ভঙ্গ হওয়ায় গুরুঙ্গের পাহাড়ে ফের কর্তৃত্বে ফেরা বিস্তর কঠিন। বরং, প্রচুর মামলা-মোকদ্দমায় জেরবার হওয়ার আশঙ্কা। মঙ্গলবার এ কথা শুনে গুরুঙ্গ-শিবিরের হতাশা ও উদ্বেগ কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্র চলতে পারে না ’ সরব মুকুল
গুরুঙ্গ-ঘনিষ্ঠমহলের দাবি, রাজযোগ ফিরে পেতেই এর পরে পাহাড়ের নানা এলাকায় পুজো এবং যাগযজ্ঞ করার নির্দেশ দিয়েছেন দুই শীর্ষ নেতা। মোর্চার নিচুতলার কয়েক জন কর্মী একান্তে জানান, দলের দুই আত্মগোপনকারী নেতার বিপদ কাটাতে তাঁরা নির্দেশিত জায়গায় গিয়ে পুজো দেওয়া শুরুও করেছেন। এর মধ্যেই শিলিগুড়ির কাছে শালবাড়িতে ‘পণ্ডিতজি’, মালবাজারের অদূরের ওদলাবাড়িতে ‘মাতাজি’র কাছে ও দার্জিলিঙের মহাকাল মন্দিরে পুজো দিয়েছেন গুরুঙ্গপন্থীরা।
এই তিন জায়গায় যে জ্যোতিষীরা রয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ তো রাখছেনই গুরুঙ্গ এবং রোশন। এ ছাড়াও কলকাতার মা তারা জ্যোতিষ তান্ত্রিক সমাজের যে সদস্যরা উত্তরবঙ্গে রয়েছেন, তাঁদের কাছ থেকেও গুরুঙ্গ-রোশনের পরিচিতরা পরামর্শ নিয়ে থাকেন। ওই জ্যোতিষ ও তান্ত্রিক সমাজের সদস্য হওয়ার সুবাদে শিলিগুড়ির বিদ্যুৎ দাশগুপ্ত এখন আচার্য দেবঋষি শাস্ত্রী নামে চর্চা করেন। তিনি বলেন, ‘‘রাজযোগ ভঙ্গের পরে প্রতিকূলতার ঢেউ আছড়ে পড়তে থাকে। সুসময় ফিরতে অনেক সময় লাগে। কাজেই পাহাড়ে ফের আগের মর্যাদা পাওয়ার আশা গুরুঙ্গ না করলেই ভাল করবেন।’’ দুই নেতাকে চুনি ধারণের পরামর্শও দিয়েছেন কোনও কোনও জ্যোতিষী, জানতে পেরেছে পুলিশ।
গোয়েন্দাদের কেউ কেউ জানাচ্ছেন, তদন্তের স্বার্থেই এখন চুনি ধারণ, যাগযজ্ঞ বা জ্যোতিষীদের সম্পর্কে খোঁজখবর রাখছেন তাঁরা। চেষ্টা করছেন ওই সব জ্যোতিষীকে ধরে গুরুঙ্গ-রোশনের কাছে পৌঁছতে। কিন্তু সেই জ্যোতিষীদের ‘নজরে’ রেখেও দুই নেতার নাগাল পাচ্ছেন না গোয়েন্দারা। কারণ, জ্যোতিষীদের সঙ্গে নিজেদের ফোনে কথা বলছেন না গুরুঙ্গ-রোশন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy