Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
সাত্তোর কাণ্ড

পাশে আছি, নির্যাতিতাকে আশ্বাস রূপার

বারবার নির্যাতিতার পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন। বিভাগীয় তদন্তে মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদের দিনও বসেছিলেন তদন্তকারী পুলিশের ঘরের বাইরে। এ বার জেলে গিয়েও সাত্তোরের নির্যাতিতার পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে এলেন বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। সোমবার সিউড়ি পৌঁছে পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন রূপা।

পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। সোমবার সিউড়িতে। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।

পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। সোমবার সিউড়িতে। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি ও পাড়ুই শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৫ ০৩:৩২
Share: Save:

বারবার নির্যাতিতার পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন। বিভাগীয় তদন্তে মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদের দিনও বসেছিলেন তদন্তকারী পুলিশের ঘরের বাইরে। এ বার জেলে গিয়েও সাত্তোরের নির্যাতিতার পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে এলেন বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়।

সোমবার সিউড়ি পৌঁছে পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন রূপা। সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘যে মানুষটা কোনও অপরাধ করেনি, তাঁকে গারদে পুরে রাখা হয়েছে। যে মানুষটা অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছিল মাত্র, তারই সঙ্গে এ কেমন ব্যবহার!’’ পুলিশকে হেনস্থা ও বোমা মারার অভিযোগে শনিবারই গ্রেফতার করা হয়েছিল সাত্তোরের নির্যাতিতাকে। পুলিশের ওই মামলায় রবিবার নির্যাতিতার স্বামী, শাশুড়ি-সহ ছ’জনকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত জেল হাজতে পাঠিয়েছে সিউড়ি আদালত। গত জানুয়ারি মাসে পুলিশের বিরুদ্ধে রাতভর গাছে বেঁধে তাঁকে মারধর করার অভিযোগ তুলেছিলেন সাত্তোরের ওই মহিলা।

নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করতে এ দিন সকাল সোয়া ১১টা নাগাদ সিউড়ির জেলা সংশোধনাগারে ঢোকেন রূপা। সঙ্গে ছিলেন জয়প্রকাশ নারায়ণ। সেখান থেকে বেরিয়ে রূপা অভিযোগ করেন, ‘‘ওঁর উপর অত্যাচারে অভিযুক্ত পুলিশদের জামিনের বিরোধিতা করে আমরা হাইকোর্টে গিয়েছি। আজ বৃহস্পতিবার ওই মামলার শুনানি হবে। নির্যাতিতা যাতে হাইকোর্টে পৌঁছতে না পারেন, তাই ওঁকে গ্রেফতার করা হল। আসলে নির্যাতনের ঘটনায় পুলিশ আধিকারিকেরা জড়িয়ে গিয়েছেন। তাই এই আক্রোশ।’’ তিনি দাবি করেন, সাত্তোর-কাণ্ডের পরে হাইকোর্টের নির্দেশে সেখানে পুলিশ ক্যাম্প বসেছে। তার থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে থাকা তৃণমূলের পার্টি অফিসে বোমা পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু, সারা দিন কেটে গেলেও পুলিশ তা উদ্ধার করেনি। রূপার ক্ষোভ, ‘‘যখন পথ অবরোধ হল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গিয়ে দুই মহিলাকে তুলে নিয়ে এলেন। ওঁরা কিন্তু কেউ পুলিশের বিরুদ্ধে কিছু করেনি। অথচ পুলিশ তৃণমূলের কার্যালয় থেকে বোমা উদ্ধার করল না! আসলে পুলিশ রাতের অন্ধকারের জন্য অপেক্ষা করছিল। কারণ, পুলিশ দিনে পুলিশ। রাতে তৃণমূল।’’


কী ঘটেছিল শনিবার? সাত্তোরের বাসিন্দাদের মুখ থেকে শুনছেন বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়।
পাশে জয়প্রকাশ নারায়ণ। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।

সংশোধনাগার থেকে বেরিয়ে রূপারা যান সিউড়ি আদালতে। আইনজীবীকে দিয়ে নির্যাতিতার জন্য একটি জামিনের আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, নির্যাতিতার সঙ্গে থাকা শিশুটি জেলে থাকতে চাইছে না। হাইকোর্টে শুনানির সময় নির্যাতিতা উপস্থিত থাকতে পারবেন না, এই বিষয়টি বিচারক যেন বিবেচনা করেন। নির্দিষ্ট সময়ের বহু পরে আসায় দুপুর ২টোর সময় সিজেএম ইন্দ্রনীল চট্টোপাধ্যায় প্রথমে ওই আবেদন শুনতেই চাননি। পরে বিচারক আইনজীবীর কাছে জানতে, উচ্চ আদালতের নির্দেশ আছে কি না। তেমন নির্দেশ দেখাতে না পারায় বিচারক বলেন, ‘‘সামনের বুধবারই আবেদন করুন।’’ ওই দিনই মামলার কেস ডায়েরি জমা দেওয়ার কথা পুলিশে। দৃশ্যতই হতাশ হন রূপা।


সাত্তোরের নির্যাতিতাকে গ্রেফতারের বিরুদ্ধে সিউড়িতে কংগ্রেসের মৌনী মিছিল। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।

সিউড়ি থেকে বেরিয়ে বিকেলে সাত্তোরে নির্যাতিতার বাড়িতে যান রূপা। সেখানে গিয়ে তিনি মহিলার শ্বশুরের সঙ্গে দেখা করেন। শনিবার ঠিক কী হয়েছিল, তা নিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। সেখানেও তিনি সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেন, প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্যই পুলিশ অন্যায় ভাবে নির্যাতিতাকে গ্রেফতার করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE