নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায় এবং তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও। সোমবার। নিজস্ব চিত্র।
নবান্নে বৈঠক করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায় এবং তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও। সোমবার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তাঁরা যে কথা জানিয়েছেন, তার গোটাটা জুড়েই ছিল ফেডারেল ফ্রন্ট। বিজেপি এবং কংগ্রেসের থেকে সমদূরত্ব রেখে জোট গঠনের ইঙ্গিত দিয়েছেন তেলঙ্গনার মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রশেখর রাও। তাঁর দাবি, ‘‘৭১ বছর ধরে কংগ্রেসকে অপছন্দ হলে মানুষ বিজেপিকে ভোট দিয়েছে। আবার বিজেপিকে অপছন্দ ভোট দিয়েছে কংগ্রেসকে। কিন্তু কংগ্রেস ও বিজেপির বিকল্প হয়ে উঠতেই পারে নতুন ফ্রন্ট।’’ মমতাও বলেছেন, ‘‘ফ্রন্ট নিয়ে আলোচনা সবে শুরু হয়েছে। তা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।’’
কিন্তু নতুন ফ্রন্ট তৈরি হলে কে হবেন তার নেতা? তবে কি মমতা? সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে চন্দ্রশেখর রাও বলেন, ‘‘এত দিন ধরে জোটের যে মডেল দেখা গিয়েছে, তা এখন আর চলবে না। জোটের দলগুলোই আলোচনার মধ্যে দিয়ে তাদের নেতা বা নেত্রী ঠিক করে নেবে।’’ কেন্দ্রে ফেডারেল ফ্রন্টের প্রয়োজন বোঝাতে গিয়ে মমতা বলেন, ‘‘দেশ শক্তিশালী হলে যেমন রাজ্য শক্তিশালী হয়। সে রকম উল্টোটাও সত্যি।’’
সোমবার বেলা সওয়া তিনটে নাগাদ নবান্নে পৌঁছন কে চন্দ্রশেখর রাও। সঙ্গে ছিলেন তাঁর দল টিআরএসের সাংসদ কেশব রাও। তাঁদের স্বাগত জানানোর জন্য নবান্নের মূল প্রবেশ পথে দাঁড়িয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায় নিজে।
আরও পড়ুন: কেসিআর আসার আগে মমতাকে ফোন চন্দ্রবাবুর
কংগ্রেস এবং বিজেপির সঙ্গে সমদূরত্ব রেখে তৃতীয় ফ্রন্ট গঠনের কথা অনেক আগে থেকেই বলে আসছেন চন্দ্রশেখর রাও। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও আঞ্চলিক দলগুলির জোটের পক্ষে বহু দিন ধরে সওয়াল করছেন। ২০১৯ যত এগিয়ে আসছে, অকংগ্রেসি-অবিজেপি জোট নিয়ে চর্চা ততই তীব্র হচ্ছে। সেই প্রেক্ষিতেই কয়েক দিন আগে চন্দ্রশেখর রাওয়ের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা হয়। তার পরেই নির্ধারিত হয় যে, দুই নেতা খুব শীঘ্রই বৈঠকে বসবেন। সোমবার কলকাতায় এসে য়ে তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী উচ্ছসিত, সেই কথা তিনি জানিয়ে দিয়েছেন। তৃণমূল সরকারের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘‘১৫ বছর পর কলকাতায় এসেছি। বিপুল উন্নয়ন হয়েছে। বাংলার চেহারা বদলে গিয়েছে।’’
বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠককে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েই দেখছে রাজনৈতিক শিবির। সম্প্রতি সনিয়া গাঁধী বিভিন্ন আঞ্চলিক দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে নৈশভোজে ডেকেছিলেন। সেখানে বিজেপি বিরোধী জোটের মঞ্চ খানিকটা প্রস্তুত হয়েছে। এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ারও নয়াদিল্লিতে বৈঠকে ডেকেছেন বিভিন্ন আঞ্চলিক ও রাজ্য দলকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যোগাযোগ রেখে চলছেন পওয়ারের সঙ্গেও। তার মাঝেই চন্দ্রশেখর রাওয়ের সঙ্গেও মমতার বৈঠক হয়ে গেল। তৃতীয় ফ্রন্ট বা বিজেপি বিরোধী জোটের দিকে যে এ ভাবেই ধাপে ধাপে এগোচ্ছে বিভিন্ন দল, সে বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কোনও সংশয় নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy