Advertisement
০৮ মে ২০২৪

তামাঙ্গ খুনে চক্রান্ত নিয়ে প্রশ্ন আদালতে

চার্জশিট থেকে নাম বাদ দেওয়ার যুক্তি হিসেবে আইনজীবীরা আরও জানান, সিবিআইয়ের অভিযোগ, জনৈক সূরজ লিম্বু নামে এক ব্যক্তির ফোন ব্যবহার করেন রোশন। খুনের পরে ঘটনাস্থলে হাজির থাকা মোর্চার একাধিক লোককে তিনি ফোন করে নির্দেশ দেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৭ ০৩:২৮
Share: Save:

সিবিআইয়ের দাবি, মদন তামাঙ্গ খুনের পরে বিমল গুরুঙ্গয়ের স্ত্রী আশা নিজের মোবাইল থেকে রোশন গিরির স্ত্রী বিদ্যা গিরির মোবাইলে ফোন করেন। কিন্তু শুধু এই তথ্যের উপরে নির্ভর করে কি বলা যায় যে, তামাঙ্গ খুনের ষড়যন্ত্রে রোশনের হাত রয়েছে? আদালতে রোশনের আইনজীবীরা বুধবার এই প্রশ্ন তুললেন।

মামলার চার্জশিট থেকে তাঁর নাম বাদ দেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন জানান রোশন। সেই আবেদনের শুনানিতে তাঁর আইনজীবী দেবাশিস রায় ও সায়ন দে এ দিন জানান, ২০১০ সালের ২১ মে দার্জিলিংয়ে তামাঙ্গ খুনের দিন মোর্চার প্রথম সারির নেতাদের অনেকে কালিম্পংয়ে ছিলেন। সেখানে রোশন, আশা ছিলেন না। কিন্তু তামাঙ্গ যেখানে খুন হন, রোশন সেখানে ছিলেন বলে সিবিআই প্রমাণ দাখিল করেনি। আইনজীবীদের প্রশ্ন, সেক্ষেত্রে রোশনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ হয় কী ভাবে? চার্জশিটে রোশনের বিরুদ্ধে হত্যা ছাড়াও ষড়যন্ত্র, ভয় দেখানো, হুমকি, গুন্ডাদের জড়ো করারও অভিযোগ রয়েছে।

চার্জশিট থেকে নাম বাদ দেওয়ার যুক্তি হিসেবে আইনজীবীরা আরও জানান, সিবিআইয়ের অভিযোগ, জনৈক সূরজ লিম্বু নামে এক ব্যক্তির ফোন ব্যবহার করেন রোশন। খুনের পরে ঘটনাস্থলে হাজির থাকা মোর্চার একাধিক লোককে তিনি ফোন করে নির্দেশ দেন। অথচ পুলিশের কাছে সূরজ জানান, মোবাইল খারাপ
থাকায় তিনি সেটি একটি দোকানে সারাতে দেন। ওই ফোন কে ব্যবহার করেছিল, পুলিশ তা দোকান মালিককে জিজ্ঞাসা করেনি। তাই রোশনই যে ওই ফোন ব্যবহার করেছিলেন, তার প্রমাণ কোথায়?

সিবিআই আদালতে জানিয়েছে, খুনের আগে ও পরে মোর্চার প্রথম সারির নেতারা নিজেদের মধ্যে মোবাইল ফোনে কী কথা বলেছিলেন, তা একটি দৈনিক সংবাপত্রে প্রকাশ হয়। সংবাদপত্র সেই ‘কথোপকথন’ কোন প্রমাণ ও কার ভিত্তিতে ছাপল, তা সিবিআই জানায়নি।

খুনের মামলা অভিযুক্ত আশা গুরুঙ্গ-সহ মোর্চার আরও আট মহিলাও। তাঁদের আইনজীবী তীর্থঙ্কর ঘোষ, রীতেশ পাল জানান, ঘটনাস্থলে তাঁদের মক্কেলরা হাজির ছিলেন বলে কিছু প্রত্যক্ষদর্শীকে সাক্ষী করেছে সিবিআই। শৈলেশ রাই ও স্মৃতি দাহাল এমন দুই প্রত্যক্ষদর্শী। আশা এবং অন্য সাত মহিলা ঘটনাস্থলে হাজির ছিলেন বলে শৈলেশ পুলিশের কাছে জানিয়েছেন। কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দিতে অভিযুক্তদের নাম বলেননি। পুলিশ কর্মী স্মৃতি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জানান, কয়েকজন অভিযুক্ত হাজির ছিলেন। কিন্তু গোপন জবানবন্দি দেওয়ার
তিন বছর পরে তিনি ফের ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে হাজির হয়ে জানান, কয়েকজন অভিযুক্তের নাম ও পদবি সংশোধন করতে চান তিনি। আইনজীবীদের দাবি, স্মৃতির এই নতুন সংযোজন আদালতের কাছে গ্রাহ্য হতে পারে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE