Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

তৃণমূল নেতা খুনে উত্তেজনা ইটাহারে

হাসপাতালে নিয়ে গেলে ইটাহার থানার হঠাৎপাড়া এলাকার বাসিন্দা বিকাশ মজুমদার (৫২) ওরফে মাধুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।

বিকাশ মজুমদার। —নিজস্ব চিত্র

বিকাশ মজুমদার। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ইটাহার শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:২৪
Share: Save:

থানায় পরিচিত অফিসারদের সঙ্গে দেখা করে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। একাই মোটরবাইক চালিয়ে যাচ্ছিলেন। শুক্রবার রাত তখন সাড়ে ন’টা। অভিযোগ, এই সময় তাঁকে ঘিরে ধরে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। কিছু ক্ষণের মধ্যে খবর পেয়ে বাড়ির লোক ছুটে আসে। কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে গেলে ইটাহার থানার হঠাৎপাড়া এলাকার বাসিন্দা বিকাশ মজুমদার (৫২) ওরফে মাধুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।

সম্প্রতি গ্রাম পঞ্চায়েত গঠন নিয়ে ইটাহারে বোমা, গুলি চলেছে বলে অভিযোগ। প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী এবং তৃণমূল নেতা বিকাশবাবুর মৃত্যুতে শনিবার সকাল থেকেই তেতে ওঠে এলাকা। ঘটনার প্রতিবাদে ও দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবিতে যুব তৃণমূলের ডাকে ইটাহার সদর এলাকায় বন্‌ধ শুরু হয়। দুপুরে ময়না-তদন্তের পরে মৃতদেহ এলাকায় এলে তৃণমূল কর্মীদের একাংশ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবিতে দেহ সামনে রেখে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে কিছু ক্ষণ অবরোধও করা হয়। পরে পুলিশ আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ইটাহারের একটি ক্লাবের সম্পাদক বিকাশবাবু। শুক্রবার রাতে সেখান থেকেই ফিরছিলেন তিনি। সঙ্গে দাদা প্রকাশবাবু ও আর এক ব্যক্তি ছিলেন। থানার কাছে এসে তাঁদের চলে যেতে বলেন বিকাশবাবু। পরে প্রকাশ বলেন, ‘‘জানতে পেরেছি, একটি ছোট গাড়ি ওর পিছু নিয়েছিল। সঙ্গে একটি বাইকও ছিল। বাড়ির পথে যাওয়ার সময় গাড়িটি ওকে ‘ওভারটেক’ করে। ঘুরে সেটি তার পথ আটকেছিল।’’

পুলিশ সূত্রে খবর, ময়না-তদন্তে বিকাশবাবুর খুলির নীচের অংশ থেকে একটি নাইনএমএম পিস্তলের গুলি মিলেছে। মাথার ডান দিকে কানের পিছনে আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করা হয় বলে পুলিশের অনুমান। মাথার বাঁ দিকে আঘাত রয়েছে।

কিন্তু কেন এই হত্যা? তৃণমূলের উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি অমল আচার্যের দাবি, ‘‘বিকাশবাবু ইটাহার গ্রাম পঞ্চায়েতের খামরুয়া সংসদের এক সিপিআই সদস্যকে তৃণমূলে যোগদান করিয়েছিলেন। পঞ্চায়েতটি যাতে তৃণমূলের দখলে থাকে, তার জন্য তিনি অনেক চেষ্টাও করেছিলেন। সেই আক্রোশেই বিজেপির দুষ্কৃতীরা তাঁকে খুন করেছে।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি শঙ্কর চক্রবর্তীর পাল্টা দাবি, ‘‘বিজেপি খুনের রাজনীতি করে না। তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলেই খুন হতে হল বিকাশবাবুকে।’’ এলাকার একাংশের দাবি, রাজনৈতিক কারণে বিকাশবাবু খুন হননি। অমলবাবুর দাদা শ্যামল আচার্য, এলাকার বাসিন্দা শুভাশিস মজুমদারদের কথায়, সম্ভবত অন্য কোনও প্রতিহিংসার জেরেই বিকাশবাবুকে খুন করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE