চলছে আলোচনা। নিজস্ব চিত্র
অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের (এএসপি) কৌশলগত বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে দুর্গাপুরের শ্রমিক সংগঠনগুলি। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল সাংসদদের সংসদে সরব হওয়ার বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে রবিবার কেন্দ্রীয় ভারী শিল্প মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করলেন সিটু ও আইএনটিইউসি নেতারা। বৈঠকে বাবুল শ্রমিক নেতাদের নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য প্রস্তাব দেন বলে জানা গিয়েছে।
এ দিন সন্ধ্যায় সিটু ও আইএনটিইউসি নেতৃত্ব কাঁকসার বাঁশকোপার একটি হোটেলে বাবুলের সঙ্গে দেখা করেন। সিটু, আইএনটিইউসি, বিএমএস, এআইটিইউসি, এআইইউটিউইউসি, টিইউসিসি-র মতো শ্রমিক সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ, ‘সেভ এএসপি, সেভ দুর্গাপুর’-এর তরফে এএসপি বাঁচাতে মন্ত্রীর কাছে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। বাবুল শ্রমিক নেতাদের বলেন, ‘‘এটা নীতি আয়োগের সিদ্ধান্ত। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই যাবতীয় প্রক্রিয়া চলছে। নীতি আয়োগের সঙ্গে বৈঠক করেছি। ফের বৈঠক করব। আপনারাও আমার সঙ্গে চলুন।’’ মঞ্চের যুগ্ম আহ্বায়ক সিটু নেতা বিনয়েন্দ্রকিশোর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এলাকার সব জনপ্রতিনিধির কাছেই সহযোগিতা চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। তবে বাবুল সুপ্রিয় ও সিপিএম বিধায়ক সন্তোষ দেবরায় বাদে বাকিরা সাড়া দেননি।’’
শ্রমিক সংগঠনগুলি জানায়, বিশেষ ধরনের প্রায় পাঁচশো রকমের অ্যালয় স্টিল উৎপাদন হয় ১৯৭৩ সালে তৈরি হওয়া এই কারখানায়। কিন্তু ২০১৬ সালে লোকসানে চলা এএসপি-র কৌশলগত বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করে ক্যাবিনেট কমিটি অন ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্স (সিসিএফএ)। এর প্রতিবাদে ২০১৭-র শুরু থেকে যৌথ আন্দোলনে নামে সিটু ও আইএনটিইউসি। পরে পৃথক আন্দোলন কর্মসূচি নেয় আইএনটিটিইউসি।
কিছু দিন আগে বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য সিটু ও আইএনটিইউসি যৌথ ভাবে কেন্দ্রীয় ইস্পাত মন্ত্রী চৌধুরী বীরেন্দ্র সিংহের সঙ্গে দেখা করে। কিন্তু গত ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি স্টিল অথরিটি অফ ইন্ডিয়া লিমিটেড (সেল) কারখানার বিলগ্নিকরণের জন্য ‘গ্লোবাল টেন্ডার’ ডাকতে বিজ্ঞাপন দেয়। ফের সিটু ও আইএনটিটিইউসি আন্দোলনে নামে। শ্রমিকদের একাংশ জানান, আন্দোলনের রাশ আইএনটিটিইউসি-র হাতে নেই দেখে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কারখানার গেটে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে তৃণমূল। নেওয়া হয় দুর্গাপুর স্টেশনে রেল অবরোধ কর্মসূচিও। ইতিমধ্যেই তৃণমূল সাংসদদের প্রতিনিধি দল কেন্দ্রীয় ইস্পাত মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।
যদিও এ দিনের বৈঠক সম্পর্কে তৃণমূলের অভিযোগ, এএসপি বাঁচানোর আন্দোলনে প্রাসঙ্গিক থাকতে শেষমেশ বিজেপি-র হাত ধরেছে সিটু ও আইএনটিইউসি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy