Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

‘রাস্তায় উন্নয়ন’ দেখলেন যুব তৃণমূল নেতাও!

সেই ‘উন্নয়ন তত্ত্ব’-এর প্রবক্তা অনুব্রতের খাসতালুকে জেলা পরিষদ বিরোধীশূন্য হয়েছে। তবে নন্দীগ্রামের জেলায় অভিযোগ উঠল, ‘উন্নয়ন তত্ত্ব’-এর শিকার খাস শাসক দলের এক যুবনেতা।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৮ ০৫:১৯
Share: Save:

পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্ব তখন সবে শুরু হয়েছে। তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ঘোষণা করলেন, ‘‘কোনও বাধা না মেনে যে সব প্রার্থী তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়তে চাইবেন, তাঁরা যখনই মনোনয়ন দিতে বেরোবেন, দেখবেন রাস্তায় উন্নয়ন দাঁড়িয়ে রয়েছে।’’

সেই ‘উন্নয়ন তত্ত্ব’-এর প্রবক্তা অনুব্রতের খাসতালুকে জেলা পরিষদ বিরোধীশূন্য হয়েছে। তবে নন্দীগ্রামের জেলায় অভিযোগ উঠল, ‘উন্নয়ন তত্ত্ব’-এর শিকার খাস শাসক দলের এক যুবনেতা।

সম্প্রতি যুব তৃণমূলের হলদিয়া ব্লক সভাপতি অনুপকুমার পাঁজা ফেসবুকে লিখেছেন— ‘রাস্তায় উন্নয়ন দাঁড়িয়ে, তাই অন্যরা কেউ মনোনয়ন জমা দিতেই পারেনি’। ২০১৪ সাল থেকে হলদিয়া ব্লকে যুব তৃণমূল সভাপতির দায়িত্ব সামলাচ্ছেন অনুপ। তার আগে তিনি দেভোগ অঞ্চলের দায়িত্বে ছিলেন। অনুপের এমন মন্তব্যে তাই শোরগোল পড়েছে শাসক দলের অন্দরেই।

তৃণমূলের যুবনেতা হয়েও সোশ্যাল মিডিয়ায় এ সব লেখা কেন? জবাবে বেরিয়ে এল ক্ষোভ। অনুপের অভিযোগ, ‘‘হলদিয়া ব্লক অফিসে মনোনয়ন দিতে গিয়ে দলেরই একাংশ কর্মী হেনস্থা হয়েছেন। থানায় ডেকে তাঁদের হয়রান করেছে পুলিশ। দলের কিছু প্রভাবশালী নেতার মদতেই এ সব হচ্ছে।’’

ক্ষোভের কারণ খুঁজতে গিয়ে সামনে আসছে তৃণমূলের দ্বন্দ্ব। দলের এক সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী বাছাই নিয়ে হলদিয়ায় ব্লক তৃণমূল সভাপতি রামচন্দ্র জানার সঙ্গে বিরোধ চলছিল যুব সভাপতি অনুপের। অভিযোগ, অনুপ শিবিরের লোকজনকে প্রার্থী করা হয়নি। বরং অনুপের নেতৃত্বে তাঁর অনুগামীরা ব্লক অফিসে মনোনয়নপত্র তুলতে গেলে তাঁদের রাস্তায় আটকে হেনস্থা করা হয়। অনুপের কথায়, ‘‘৬ এপ্রিল হলদিয়ার ভবানীপুর থানায় আমাকে ও সহকর্মী যশোরাজ ব্রহ্মচারীকে দীর্ঘক্ষণ আটক করে রাখা হয়েছিল।’’

তৃণমূলের বাধার মুখে মনোনয়ন দেওয়া যায়নি বলে সরব হয়েছিলেন হলদিয়ায় বাম ও বিজেপি নেতৃত্ব। অনুপের মন্তব্য জেনে হলদিয়ার সিপিএম বিধায়ক তাপসী মণ্ডলের প্রতিক্রিয়া, ‘‘তৃণমূল যে কী সন্ত্রাস চালাচ্ছে তা ওদের দলের লোকের কথাতেই স্পষ্ট। তবে স্বার্থে ঘা লেগেছে বলেই ওই যুবনেতা এমন বলছেন। এ সব প্রকৃত প্রতিবাদ নয়।’’

ভোটের মুখে অস্বস্তিতে তৃণমূল নেতৃত্বও। তবে কি অনুপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে? যুব তৃণমূলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সভাপতি তথা ময়নার বিধায়ক সংগ্রাম দোলইয়ের জবাব, ‘‘আগে ফেসবুক দেখি। তার পর মন্তব্য করব।’’ আর তৃণমূলের জেলা সভাপতি শিশির অধিকারী বলেন, ‘‘অপরিণত কেউ কিছু বলে থাকতে পারে। আমরা সে সবে আমল দিচ্ছি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE