র্যাম্পে শান্তনু-নিখিলের পোশাকে সিদ্ধার্থ। ছবি: সুদীপ্ত চন্দ
প্রথম ছবি ‘স্টুডেন্ট অব দি ইয়ার’ প্রকাশ পাওয়ার পর থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। সেই লড়াইয়ে অনেক সময়েই পিছিয়ে পড়েছেন তিনি। কিন্তু থেমে যাননি। বহু সময়ে প্রশ্ন উঠেছে তাঁর অভিনয়-ক্ষমতা নিয়ে। তবু বলিউডের জমি বিনাযুদ্ধে এক ইঞ্চি ছেড়ে দিতে নারাজ। তিনি সিদ্ধার্থ মলহোত্র। সম্প্রতি শহরে এসেছিলেন একটি ফ্যাশন শোয়ের শো-স্টপার হয়ে। সারা সন্ধে জু়ড়ে যখন বাইরে কয়েকশো মানুষ অপেক্ষা করছেন তাঁকে একঝলক দেখার জন্য, সিদ্ধার্থ তারই মাঝে ব্যস্ত সাক্ষাৎকার দিতে। পরনে সাদা-নীল টি-শার্ট আর র্যাগড জিন্স। নানা প্রশ্নবাণের মাঝেও তাঁর স্বভাবোচিত হাসিটি কিন্তু অমলিন।
প্র: কলকাতায় তো র্যাম্প শো এই প্রথম বার?
উ: এর আগেও কলকাতায় এসেছি। কিন্তু এই র্যাম্প, ডিজাইনার কালেকশন সবটাই প্রথম বার। নার্ভাস নই। তবে ভীষণ এক্সাইটেড।
প্র: আপনার কাছে ফ্যাশন বলতে ঠিক কী মনে পড়ে?
উ: প্রথমত ফ্যাশন মানে এটা নয় যে, কত দামি জামাকাপড় পরছি। কী পরে নিজের আরাম লাগছে, সেটাই আসল। আর কোনটা নিজের স্টাইলকে ফিট করছে, সেটাও জরুরি। আমার কাছে স্টাইল হল সেটাই, যা তোমার সম্পর্কে জাহির করবে, অথচ তোমাকে তা নিয়ে মুখ খুলতে হবে না।
প্র: আপনাদের জীবনযাত্রা তো বেশ কঠিন। নিজেকে ফিট রাখার মন্ত্রটা কী?
উ: এই পেশাটাই এ রকম। কখন কোথায় কী করছি, কিছুর ঠিক নেই। এই তো কাল হায়দরাবাদে ছিলাম। রাতের ঘুমটাও হয়নি। আবার সকালের ফ্লাইট ধরে কলকাতা। আজ অনেক রাত অবধি কাজ করে কালই শহর ছাড়ব। নিজেকে ফিট রাখার জন্য হেলদি থাকতে হবে। আর হেলদি থাকাটা যদি রীতিমতো প্যাশন হয়, তা হলে কাজটা সহজে হয়ে যায়। এই ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকার অন্যতম শর্তই হল ফিট আর হেলদি থাকা। ডায়েটের বেসিক জ্ঞান থাকাটাও জরুরি। আর দিনে অন্তত ৪৫ মিনিট শারীরচর্চা। আমি খেতে ভীষণ ভালবাসি। এটাও জানি যে, যতই খাই, ঠিক ঝরিয়ে ফেলতে পারব।
প্র: আপনার লুক, প্রেজেন্স লোকের মনে ধরলেও, অভিনয়ক্ষমতা নিয়ে কিন্তু সমালোচকরা খুব সদয় নন!
উ: এই তো ‘ইত্তেফাক’ রিলিজের পর অনেকের কাছ থেকে টেক্সট পেয়েছি। এখানে আমার চরিত্রটা কিন্তু হিরোর নয়। তাই কমার্শিয়াল ছবির নাচ-গান, লোকেশন কোনওটাই নেই। পুরোটাই চরিত্রনির্ভর। লোকজনের ভাল লেগেছে। অনেকেই প্রশংসা করছে। আর আমি তাতেই খুশি। সকলে ভাল বললে তো আরও ভাল করার ইচ্ছে হয়।
প্র: আলিয়া থেকে শুরু করে বহু সেলেবকে নিয়মিত ট্রোল করা হচ্ছে। আপনার কী মনে হয়?
উ: সোশ্যাল মিডিয়া এমন একটা প্ল্যাটফর্ম, যেখানে সেন্সরশিপ নেই। কোনও রিয়্যাল আইডেন্টিটি নেই বলে লোকজন এর ভুল ব্যবহার করছে। আমার তো মনে হয় যে, এটা কাল্পনিক দুনিয়া। লোকে শুধু মত দেয়। আদৌ কিছু বদলায় না। একটা টুইট করার চেয়ে সেখানে গিয়ে বদলানো জরুরি।
প্র: আপনাকে তো অন্য ধরনের চরিত্রে খুব একটা দেখা যায় না!
উ: করছি তো। এই ‘ইত্তেফাক’ করলাম। এর পর ‘আইয়ারি’তে আমি একজন আর্মি অফিসারের ভূমিকায়। মনোজ বাজপেয়ী রয়েছেন। আর নীরজ স্যার (পাণ্ডে) তো বরাবরই থ্রিলিং ভাবে একটা বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেন। আমার দাদু আর্মিতে ছিলেন। তাই বাবা ভীষণ এক্সাইটেড আমাকে আর্মি ইউনিফর্মে দেখার জন্য।
প্র: বিশেষ ভূমিকায় অভিনয় করলে রাজনৈতিক ঝামেলা হতে পারে, এই ভেবে কখনও সচেতন ভাবে চরিত্র বেছেছেন?
উ: না। এখন চারপাশে যা হচ্ছে, তা ভাবলে খারাপ লাগে। আগেও এ রকম হয়েছে। লোকের বোঝা উচিত, সেন্সরবোর্ড বলে একটা বস্তু রয়েছে, যারা এ বিষয়ে কাজ করে। কোনও কিছু নিয়ে আপত্তি উঠলে সেখান থেকে ওঠা দরকার। এটা তো ক্রিয়েটিভ দুনিয়া। চারপাশে এত গল্প ছড়িয়ে আছে। কী নিয়ে ছবি হবে, আর কী নিয়ে হবে না, সেটা ঠিক করে দেওয়ার তুমি কেউ নও। আর আমার কাছে ছবিটার মেসেজটা জরুরি। কোনও অভিনেতাই পরে কী হবে সেটা ভেবে ছবি বাছেন না।
প্র: মেয়েরা তো রীতিমতো সিড বলতে পাগল। এত অ্যাটেনশন পেয়ে কেমন লাগে?
উ: আমার কাছে পুরোটাই ভালবাসা। দিল্লি থেকে এসেছি। ইন্ডাস্ট্রিতে চেনা কেউ ছিল না। দর্শকরা আমাদের ভালবাসেন। কিন্তু এটা হয়তো বোঝেন না যে, তাঁদের ভালবাসাটা কত মূল্যবান। মাসের পর মাস কঠিন পরিশ্রমের পরে শুক্রবারগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকি। কখনও ছবি ভাল হয়, কখনও খারাপ। তার পর দর্শকদের ভালবাসাটাই তো এগিয়ে নিয়ে যায়!
প্র: আপনার সঙ্গে আলিয়াকে নিয়ে নানা কথা শোনা যায়!
উ: (ঘরের চারপাশ ভাল করে দেখে) আই অ্যাম ভেরি মাচ সিঙ্গল! (হাসি)
প্র: একা লাগে?
উ: আমি দিব্যি ব্যাচেলর লাইফ লিড করছি। তবে পরিবারকে খুব মিস করি।
প্র: কলকাতায় এসেছেন বেশ কয়েক বার। কী ভাল লাগে?
উ: মাছ। ভীষণ ভালবাসি। আর কলকাতার খাবার তো খুব ইন্টারেস্টিং। খুব শিগগিরি আবার এখানে আসছি ‘আইয়ারি’ নিয়ে। দেখা হবে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy