Advertisement
১১ মে ২০২৪

নিজেই বানান নিজের গয়না

ছোটবেলার ক্রাফট ক্লাসের নস্টালজিয়া ফিরে আসুক আপনার হাতের জাদুতে। লিখছেন পরমা দাশগুপ্তদুনিয়া জোড়া নারীর সোনা-রুপো-হিরের ভালবাসায় ভাগ বসিয়ে আপাতত গয়নাগাঁটির দুনিয়া কাঁপিয়ে দিচ্ছে হ্যান্ডমেড জুয়েলারি। যেখানে খুশি, যখন খুশি ইচ্ছেমতো বানিয়ে ফেলা যে গয়নার প্রেমে মাতোয়ারা পনেরো থেকে পঁয়ষট্টি।

শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:০৩
Share: Save:

সোনার বালা, রুপোর নাকছাবি, হিরের দুল।

ভাবছেন, এতেই আপনি ‘কুল’?

সেটাই মস্ত ভুল।

কারণ দুনিয়া জোড়া নারীর সোনা-রুপো-হিরের ভালবাসায় ভাগ বসিয়ে আপাতত গয়নাগাঁটির দুনিয়া কাঁপিয়ে দিচ্ছে হ্যান্ডমেড জুয়েলারি। যেখানে খুশি, যখন খুশি ইচ্ছেমতো বানিয়ে ফেলা যে গয়নার প্রেমে মাতোয়ারা পনেরো থেকে পঁয়ষট্টি।

সাধারণেই অ‘সাধারণ’

সোনা-রুপোর একচেটিয়া বাজারে কবেই ঢুকে পড়েছিল কাঠ, মাটি, বাঁশ, পাটের মতো এক্কেবারে সাধারণ সব জিনিসপত্র। তবে সে গয়না বানানোও খানিক ঝক্কি তো বটেই। আসরে তাই হুড়মুড়িয়ে হাজির কার্ডবোর্ড, বিডস, পেপার পাল্প, কাপড়, উলের মতো আরও সহজলভ্য জিনিসপত্র।। হাতের কাছে খানিক টুকিটাকি জিনিসপত্র আর ডিজাইন সম্পর্কে একটু-আধটু আইডিয়া থাকলেই হল। বাড়ি হোক বা ব্যুটিক, দিব্যি বানিয়ে ফেলা যাচ্ছে হার থেকে দুল, বালা সবই। ফলে তাকে ঘিরে উৎসাহও যে রকেট-গতিতে বাড়বে, তাতে আর সন্দেহ কী! নিজের কিংবা পরিচিতদের জন্য বানানো এক্সপেরিমেন্ট হিট করে যাওয়ার পরে অনেকেই তাই রীতিমতো কোমর বেঁধে নেমে পড়ছেন গয়না তৈরিতে।

যেমন খুশি সাজো

সোজাসাপ্টা চেনা ডিজাইনের পাশাপাশি নানা রকম থিমে সেজেও তৈরি হচ্ছে এক-একটা কালেকশন। তার কোনওটায় ফুল, কোনওটায় পশুপাখি, কোনওটায় চাঁদ-সূর্য-পৃথিবী, কোনওটায় অক্ষর, কোনওটায় আবার রাশিচক্র। ইচ্ছেমতো বেছে নিলেই হল। দেশের নানা প্রান্তে রোজই খুলে যাচ্ছে একের পর এক হ্যান্ডমেড-জুয়েলারির ব্যুটিক। ফেসবুক খুললেই একের পর এক পেজ। অনলাইন শপিং-এর সাইট খুললেই রীতিমতো আলাদা সেকশন। জনপ্রিয়তা রোজ বাড়ছে চড়চড় করে। আর চাহিদা এমনই যে, পছন্দের চোকার কিংবা দুলের অর্ডার দিতে গেলে প্রায়শই নজরে পড়ছে ‘আউট অব স্টক’ ট্যাগ। উৎসাহে তাতে ভাটা পড়ছে, এমনটা ভাবার অবশ্য কারণ নেই। অনেক ব্যুটিকই আবার গয়না বানিয়ে দিচ্ছে একেবারে আপনারই পছন্দমতো ডিজাইনে।

বানালেই হিট

পঁচিশের তিতলি কিংবা মধ্য চল্লিশের ঊর্মি, হ্যান্ডমেড জুয়েলারির প্রেমে হাবুডুবু দু’জনেই। ইন্টারনেট হাতড়ে দু’জনেই বেছে রাখছেন পছন্দমতো দুলের ডিজাইন। তার পর? ‘‘কী আর! হাতে সময় থাকলে কাগজ, কাপড়, উল, বিডস যা পাই, নিয়ে বসে পড়ছি। কেঁটে-ছেঁটে, সেলাই করে, আঁকড়ি লাগিয়ে ফেললেই ফাংকি দুল রেডি আর নানা রঙের বিড্স গাঁথলেই রংচঙে নেকপিস! ব্যস! বন্ধুদের পার্টিতে কিন্তু এখন আমিই হিট,’’ উৎসাহে নিমেষে ঝলমলে তিতলি। আর নিজের গয়না বানাতে বানাতে পারদর্শী হয়ে ওঠা ঊর্মি এখন বন্ধুদের ফরমায়েশি গয়নাও বানান নিয়মিতই। ‘‘বেশ ছোট্টবেলার ক্রাফট ক্লাসের মতো লাগছে কিন্তু!’’ হাসতে হাসতেই বলছেন তিনি।

ডু ইট ইয়োরসেল্ফ দুল

যা লাগবে: লম্বাটে ত্রিভূজাকৃতি সমান মাপের দুটো মোটা কার্ডবোর্ডের টুকরো, ধারালো কাঁচি, ফেব্রিক রং, স্বচ্ছ বর্ণহীন আঠা, অভ্রের গুঁড়ো বা স্পার্কল্‌স, পাঞ্চ মেশিন, দুলের আঁকড়ি

যা করবেন: ত্রিভুজের নীচের দিকটা ইচ্ছেমতো ডিজাইনে কেটে নিন। তিন চার রকম রঙে রাঙিয়ে নিন টুকরো দুটো। উপরে অল্প আঠা মাখিয়ে ছড়িয়ে দিন অভ্রের গুঁড়ো বা স্পার্কল্‌স। এর পরে রং এবং আঠা শুকিয়ে গেলে পাঞ্চ মেশিন দিয়ে ত্রিভুজের উপর দিকে সমান মাপের ফুটো করুন। তার মধ্যে দিয়ে গলিয়ে আঁকড়ি আটকে নিন। ব্যস, দুল রেডি।

এবং সহজপাঠ

নিজের গয়না নিজেই বানাতে চান। এ দিকে উপায় খুঁজতে হন্যে? কুছ পরোয়া নেই। ইন্টারনেট আছে কী করতে? সার্চ দিলেই মিলছে ইউটিউব ভিডিও থেকে ওয়েবসাইট। যে কোনও একটায় ঢুকে পডুন চটপট। কী দিয়ে বানাবেন, কী ভাবে বানাবেন, সবেরই হদিস মিলবে।

তা হলে? এখনও ভাবছেন? পুজোয় না হয় সাজলেন নিজের গড়া গয়নাতেই!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE