Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Sandeshkhali Child Education center

শিক্ষণ সামগ্রী কেনায় বেনিয়মের অভিযোগ

শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষিকাদের একাংশের দাবি, ওই সব জিনিসপত্রের বাজারদর অনেক কম। স্কুলের তরফে সরাসরি কেনা হলে অতিরিক্ত টাকা স্কুলের তহবিলে থেকে যেত।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নবেন্দু ঘোষ 
সন্দেশখালি শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:১১
Share: Save:

কয়েক দিন আগে সন্দেশখালিতে মিড ডে মিলের বাসনপত্র কেনার ক্ষেত্রে বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল ব্লক প্রশাসনের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে সন্দেশখালি ২ ব্লকের শিশুশিক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষণ সামগ্রী কেনার ক্ষেত্রেও বেনিয়মের অভিযোগ সামনে এল।

ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে খবর, এই ব্লকে প্রায় ৪৫টি শিশুশিক্ষা কেন্দ্র আছে। প্রতিটি কেন্দ্রে শিক্ষণ সামগ্রী কেনার জন্য সম্প্রতি ৯ হাজার টাকা করে আসে। অভিযোগ, ব্লকের তরফে স্কুলগুলির কাছ থেকে সেই টাকা নিয়ে নেওয়া হয়। ব্লকের তরফেই শিক্ষাসামগ্রী কিনে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। ইতিমধ্যে কিছু স্কুলে সেই সামগ্রী কিনে পাঠানোও হয়েছে। কিন্তু এর মধ্যেই দুর্নীতির ছায়া দেখছেন অনেকে।

শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষিকাদের একাংশের দাবি, ওই সব জিনিসপত্রের বাজারদর অনেক কম। স্কুলের তরফে সরাসরি কেনা হলে অতিরিক্ত টাকা স্কুলের তহবিলে থেকে যেত। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সেই অতিরিক্ত টাকা ব্লক আধিকারিকের পকেটে ঢুকছে বলে অভিযোগ। এক শিক্ষিকা বলেন, “স্কুল পরিদর্শকের দফতর থেকে আমাদের শিক্ষণ সামগ্রী কেনার টাকা দেওয়া হয়েছিল। এরপর মার্চ মাসের প্রথম দিকে এক দিন ব্লকের সব এসএসকে’র শিক্ষিকাদের নিয়ে বিডিও অফিসে বৈঠক হয়। যেখানে পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ মেঘনাথ মণ্ডল, ব্লকের তরফে শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক খাদিজা খাতুন সহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের শেষে খাদিজা স্কুলের দিদিমণিদের চেকে সই করে জমা দিতে বলেন। প্রায় সব শিক্ষিকা তাই করেন। পরে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে বুঝতে পারি, আমাদের বোকা বানিয়ে চেক নেওয়া হয়েছে। এরপরে স্কুল পরিদর্শক ও বিডিওর কাছে অভিযোগ জানাই।” অভিযোগ জানানোয় শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ ফোন করে হুমকি দেন বলেও দাবি তাঁর। খাদিজার সঙ্গেও তর্কাতর্কি হয়। ব্লক প্রশাসনের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।

অনেক শিক্ষিকা জানান, দুর্নীতির আভাস পেয়ে টাকাই দেননি তাঁরা। এক শিক্ষিকার দাবি, “খাদিজা চেক চেয়েছিলেন। আমি দিইনি। আমাদের কাছে যখন টাকা এসেছে, আমরাই কিনব। ওদের দিতে হবে কেন?”

খাদিজা বলেন, “আমি এখানে আসার আগেও এ ভাবেই জিনিস কেনা হত। শিক্ষিকাদের সুবিধার জন্যই একটি সংস্থা থেকে সমস্ত জিনিস কেনার ব্যবস্থা করা হয়। ভাল জিনিসই দেওয়া হয়েছে। এখন চক্রান্ত করে অভিযোগ করা হয়েছে। যা করেছি, বিডিওকে জানিয়েই করেছি।” যে জিনিসপত্র স্কুলকে কিনে দেওয়া হয়েছে, তার রসিদ এখনও অনেক স্কুলকে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। খাদিজার ব্যাখ্যা, “দ্রুত বিল দেওয়া হবে।”

মেঘনাথ মণ্ডল বলেন, আমি বৈঠকে উপস্থিত ছিলাম। তারপর কোথা থেকে কী কেনা হয়েছে, জানি না। আমি শেখ শাহজাহানের সঙ্গে থাকতাম, তাই শিবু-উত্তমের মতো আমাকেও কালিমালিপ্ত করা হচ্ছে।”

ব্লকের স্কুল পরিদর্শক নবকুমার রায় বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি, খতিয়ে দেখছি।” সন্দেশখালি ২ বিডিও অরুণকুমার সামন্তের কথায়, “টাকা স্কুলকে দেওয়া হয়েছে। স্কুল ঠিক করবে, কোথা থেকে কিনবে। আমি এ সবের কিছু জানি না। তবে যে অভিযোগ পেয়েছি, খতিয়ে দেখছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

sandeshkhali
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE