অলীক চক্রবর্তী
গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ভাঙড়ের পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলনের প্রধান মুখ, নকশাল নেতা অলীক চক্রবর্তী। ঘনঘন রক্তবমি হচ্ছে তাঁর। পুলিশ এবং আন্দোলনকারীরা এ কথা জানিয়েছেন।
অলীক ঘনিষ্ঠ কয়েকজনের থেকে পুলিশকর্তারা জানতে পেরেছেন, মাছিভাঙা গ্রামে ওলি মহম্মদ নামে এক আন্দোলনকারীর বাড়িতে শয্যাশায়ী তাঁদের নেতা। মাসখানেক আগেও একবার গুরুতর অসুস্থ হয়ে প়়ড়েছিলেন তিনি। তখন বহিরাগত কয়েকজন চিকিৎসক অলীককে পরীক্ষা করেছিলেন। কিন্তু তাঁদের ওষুধ এখন আর কাজ করছে না। চিকিৎসকেরা মনে করছেন, তাঁর পেপটিক আলসার হয়েছে। অলীকের অনিয়মিত খাওয়া-দাওয়ার জন্যই এ বার পরিস্থিতি জটিল। যথাযথ চিকিৎসার জন্য তাঁর উন্নত প্রযুক্তির শারীরিক পরীক্ষার প্রয়োজন।
এক গোয়েন্দা-কর্তার কথায়, ‘‘মাসখানেক আগে বহিরাগত চার চিকিৎসক তিন দিন ধরে অলীকের চিকিৎসা করেছিলেন। তাতে কিছুটা সুস্থও হয়ে উঠেছিলেন ওই নেতা। কিন্তু এখন অবস্থার অবনতি হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। কিন্তু উনি গ্রাম থেকে বেরোলেই গ্রেফতার করা হবে। প্রয়োজনে পুলিশ তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করাবে।’’
মধ্য পঞ্চাশের ওই নকশাল নেতাকে শেষ প্রকাশ্যে দেখা গিয়েছিল গত ১৭ জানুয়ারি। পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলন শুরুর বছর ঘুরতেই খামারআইট গ্রামের মোড়ে ‘শহিদ সমাবেশে’ যোগ দিয়েছিলেন তিনি। পাওয়ার গ্রিডের বিরোধিতায় সে দিন ফের সুর চড়িয়েছিলেন তিনি। আন্দোলনকারীদের একাংশ জানিয়েছেন, তখনও অসুস্থ ছিলেন তাঁদের নেতা। কিন্তু কিছুদিন হল অবস্থার অবনতি হয়েছে। তিনি দ্রুত সুস্থ না-হলে আন্দোলনের গতিপ্রকৃতি কী হবে, তা নিয়েও চিন্তায় রয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের অনেকেই মনে করছেন, সে ক্ষেত্রে আন্দোলন দিশাহারা হয়ে যাবে।
মাছিভাঙা গ্রামের এক আন্দোলকারী বলেন, ‘‘ওলি মহম্মদের বাড়িতে নিরাপত্তার একটি নিজস্ব বলয় তৈরি করে রেখেছেন অলীক। চার গ্রামবাসী এবং এক বহিরাগত নকশাল নেত্রী ছাড়া আর কেউ অলীকের কাছে পৌঁছতে পারছেন না। ওই বাড়ির কিছুটা দুরে গ্রামেরই কিছু মহিলাকে নিয়ে গড়া আর একটি বাহিনীও পাহারা দিচ্ছে।’’
আন্দোলনকারীদের একাংশ জানান, গত শুক্রবার থেকে দফায় দফায় কয়েক জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অলীকের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছেন। প্রয়োজনে তাঁর অস্ত্রোপচারও হতে পারে। কিন্তু আগে দরকার উন্নত প্রযুক্তির শারীরিক পরীক্ষা। সে জন্য তাঁকে বাইরে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু বাইরে নিয়ে যেতে গেলে তাঁদের যে সমস্যায় পড়তে হবে, তা-ও মানছেন তাঁরা।
সম্প্রতি গ্রামের দু’পাশে দু’টি পুলিশ ক্যাম্প বসেছে। কয়েক দিনের মধ্যেই আরেকটি পুলিশ ক্যাম্প বসানোরও তোরজোড় চলছে। তিনটি পুলিশ ক্যাম্প দিয়ে কার্যত মাছিভাঙা ও খামারআইট গ্রামের তিন দিক ঘিরে রাখতে চাইছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, গ্রিড বিরোধী আন্দোলনে অলীকের বিরুদ্ধে ৬৯টি মামলা রয়েছে। যে কোনও অবস্থায় তাঁরা ওই নকশাল নেতার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন এক পুলিশকর্তা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy