ভেসেল ধরতে ভিড়। কচুবেড়িয়া ঘাটে তোলা। নিজস্ব চিত্র।
গঙ্গাসাগর মেলার পরিকাঠামো নিয়ে প্রতি বছরই কিছু অভাব-অভিযোগ শোনা যায়। ড্রেজ়িং ভাল ভাবে শুরু হলেও পরে তা ধীরগতি হয়ে পড়ছে বলে অভিযোগ। মেলায় পুণ্যার্থীদের থাকার ব্যবস্থা নিয়েও কিছু খামতি প্রতি বছর থাকছে বলে অভিযোগ তুলছেন বহু পুণ্যার্থী।
ইতিমধ্যে ভিড় জমতে শুরু করেছে মেলা প্রাঙ্গণে। কাকদ্বীপ লট ৮ ও কচুবেড়িয়া ভেসেল ঘাটে ভিড় চোখে পড়ছে। এ বছর কুম্ভমেলা নেই বলে ভিড় বাড়বে সাগর মেলায়, এমনটাই অনুমান প্রশাসনের। কিন্তু সেই অনুপাতে পরিকাঠামো নিয়ে কিছু অভিযোগ উঠছে আসছে। এখনও উন্মুক্ত জায়গায় চলছে শৌচকর্ম। পানীয় জলের অভাব আছে। আবর্জনা জমতে শুরু করেছে। মেলার প্রস্তুতি শেষ হতে এখনও বাকি এক-দু’দিন। শৌচাগার তৈরির কাজ এখনও চলছে।
সব থেকে বড় কাজ ড্রেজ়িংয়ের। তাতেও এখনও কিছু দিন লাগবে বলে প্রশাসন জানিয়েছে। হাতেগোনা মাত্র ন’টি ভেসেল চলাচল করছে। সকাল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত পরিষেবা চলছে ভেসেলের। রবিবার লট ৮ ঘাটে গিয়ে দেখা গেল, ১ নম্বর জেটির সামনে টিকিট কাউন্টার থেকে লাইন পেরিয়ে যাচ্ছে প্রায় আধ কিলোমিটার দূরে, বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত। লাইন ভাঙার চেষ্টা চলছে। পর্যাপ্ত পুলিশকর্মী মোতায়েন থাকা সত্ত্বেও সমস্যা হচ্ছে ভিড় সামলাতে। বাড়তি ভেসেলও আসেনি।
ডিসেম্বরের শেষ থেকে বাড়ছে ভিড়। অন্যান্য বারের তুলনায় যা প্রায় দ্বিগুণ বলে দাবি করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ১০ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন হওয়ার কথা মেলার।
জেলা প্রশাসনের তরফে জানা গিয়েছে, মেলার পুরো প্রস্তুতি শুরু করার কথা ১০ জানুয়ারি থেকে। তাই তারও আগে এই ভিড় এলে তা সামলানোর জন্য বাড়তি লোকবল এখনই পাওয়া যাবে না। তবে বাড়তি ভিড় সামলানোর জন্য আরও ভেসেল চাওয়া হয়েছে পরিহবহণ দফতরের কাছে। এখন প্রতি দিন গড়ে প্রায় পঁচিশ হাজারের কাছাকাছি পুণ্যার্থী গঙ্গাসাগরে আসছেন।
সাগর ব্লকে কচুবেড়িয়া ঘাট থেকে শুরু করে টানা গঙ্গাসাগর পর্যন্ত রাস্তার ধার দিয়ে প্রচুর পোস্টার, ব্যানার লাগানো হয়েছে। তাতে লেখা, উন্মুক্ত জায়গায় মলমূত্র ত্যাগ করবেন না। ক্যারিব্যাগ ব্যবহার করবেন না। কয়েক লক্ষ টাকা খরচা করে মেলায় বেশ কিছু শৌচাগার তৈরি করা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু তার পরিষেবা এখনও পর্যন্ত শুরু করা যায়নি।
সমুদ্রতটের ২ নম্বর স্নানঘাট থেকে ৪ নম্বর স্নানঘাটের যেখানে সেখানে ভাঙা ইলেকট্রিক পোস্ট, ও ভাঙা ইটের টুকরো পড়ে আছে। যা জোয়ারের সময়ে বোঝা যায় না। যে কোনও মুহূর্তে বিপদ ঘটতে পারে। মেলায় ইন্টারনেট ও ফোনে লাইন পেতে সমস্যায় পড়ছেন মানুষজন। প্রশাসনের লোকজনেরও সমস্যা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, এ বছর মেলার খরচ প্রায় ২০০ কোটি টাকার কাছাকাছি। আলোকসজ্জার জন্য বরাদ্দ হয়েছে প্রায় ৯ কোটি টাকা। মুখ্যমন্ত্রীর তা আজ, সোমবার উদ্বোধন করার কথা।
গঙ্গাসাগর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হরিপদ মণ্ডল বলেন, ‘‘পানীয় জলের ব্যবস্থা হয়েছে, তা পুরোপুরি ৮ তারিখ থেকে শুরু হবে। কিছু সমস্যা থাকলে তা দেখে নিতে হবে। শৌচাগারের কাজও প্রায় শেষের দিকে।’’ কাকদ্বীপ লট ৮ ঘাট কচুবেড়িয়া ভেসেল ইউনিয়নের নেতা শক্তিপ্রসাদ মাইতি বলেন, ‘‘প্রতি বছরই এ রকম সমস্যায় আমাদের পড়তে হয়। এখনও ড্রেজ়িং শেষ হয়নি। ভেসেল চলাচলে কিছুটা হলেও সমস্যা হচ্ছে। ভাটা হলে পরিষেবা কিছুটা ব্যাহত হয়। যতক্ষণ যাত্রী, থাকে আমরা ভেসেল পরিষেবা দিয়ে থাকি।’’
জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা জানান, ডিসেম্বরের শেষ থেকে প্রচুর পুণ্যার্থী আসেন, এ বারও তার অন্যথা হয়নি। এখন ৯টি ভেসেল চলছে, এক-দু’দিনের মধ্যে ২৫টি করে ভেসেল চলবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy