টাকী গ্রামীন হাসপাতাল। — ফাইল চিত্র।
সম্প্রতি ন্যাশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স (এনকিউএএস) মূল্যায়নের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। ফলাফল অনুযায়ী ৯৩.৯ শতাংশ নম্বর পেয়ে পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে সর্বকালীন রেকর্ড গড়েছে হাসনাবাদের টাকি গ্রামীণ হাসপাতাল।
বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলা সূত্রের খবর, শংসাপত্র চলে এসেছে। এবার আনুষ্ঠানিক ভাবে দিল্লি থেকে পুরস্কার নেওয়ার পালা। দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রক ২০১৩ সালে এনকিউএএস চালু করে গোটা দেশ জুড়ে। উদ্দেশ্য, সরকারি হাসপাতালে রোগী পরিষেবার আরও উন্নতি করা। এ রাজ্যের বিভিন্ন স্তরের হাসপাতালগুলি ২০১৭ সাল থেকে এনকিউএএস-এ যোগ দিতে শুরু করে। গত পাঁচ বছরে এ রাজ্যের যত হাসপাতাল এই মূল্যায়নে যোগ দিয়েছিল, তারা কেউ ৯৩.৯ শতাংশ নম্বর পায়নি বলে দাবি স্বাস্থ্যকর্তাদের। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার মধ্যে এই প্রথম কোনও হাসপাতাল এনকিউএএস-এর শংসাপত্র পেল।
স্বাস্থ্যকর্তারা জানান, একাধিক পর্ব পেরিয়ে এই সাফল্য এসেছে। প্রথমে হাসপাতাল নিজেই নিজের কাজের মূল্যায়ন করে নম্বর দেয়। তাতে ৭০ শতাংশ নম্বর পেলে তবে পরবর্তী পর্যায়ে উন্নীত হতে পারে। এরপরে স্বাস্থ্য জেলার গুণমান নির্ণায়ক দল পরিদর্শনে আসে। তারা বিভিন্ন বিভাগে অন্তত ৭০ শতাংশ নম্বর দিলে তবে হাসপাতালের নাম রাজ্য স্বাস্থ্যভবনে যায়। বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখতে আসে রাজ্য থেকে একটি উচ্চ পর্যায়ের পরিদর্শক দল। তাদের মূল্যায়নে হাসপাতাল বিভিন্ন বিভাগ অন্তত ৭০ শতাংশ নম্বর পেলে তবে রাজ্য থেকে কেন্দ্রের কাছে সেই হাসপাতালের নাম যায়।
এ ভাবে টাকি গ্রামীণ হাসপাতালের নাম যায় কেন্দ্রে। এরপরে কেন্দ্র থেকে একটি উচ্চ পর্যায়ের দল অল্প সময়ের নোটিশে কয়েক মাস আগে হাসপাতালে চলে আসে বিভিন্ন বিষয় খুঁটিয়ে দেখতে। দু’দিন ধরে চলে পুঙ্খানুপুঙ্খ খতিয়ে দেখার কাজ। স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসক, রোগী, রোগীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও আলাদা ভাবে কথা বলেন দলের সদস্যেরা।
এই হাসপাতাল গুণমান ব্যবস্থাপনায় ৯৯ শতাংশ নম্বর পেয়েছে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ৯৬ শতাংশ নম্বর, রোগশয্যা-সংক্রান্ত পরিষেবায় ৯৫ শতাংশ, রোগী অধিকারে ৯৬ শতাংশ, রোগী সহায়তার নিরিখে ৯৫ শতাংশ নম্বর পেয়েছে। বিভাগীয় পরিষেবার ক্ষেত্রে— জরুরি বিভাগ ৯৪.১ শতাংশ, ওপিডি ৯২.৮ শতাংশ, প্রসবকক্ষ ৯৩.১ শতাংশ, অন্তর্বিভাগ ৯২.৩ শতাংশ নম্বর পেয়েছে।
হাসনাবাদের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক শাহিন হাসান বলেন, “এই সাফল্য আমাদের উৎসাহ দিচ্ছে, আরও বেশি করে রোগী পরিষেবা দিতে। আমরা সকলে চেষ্টা করব এই সাফল্য ধরে রাখতে।” বিএমওএইচ আরও জানান, দ্রুত এই হাসপাতালে চালু হবে সিজার বিভাগ-,সহ বেশ কিছু নতুন বিভাগ।
বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলার ডেপুটি সিএমওএইস নির্মাল্য রায় কথায়, ‘‘টাকি হাসপাতালে ৫০টি বেড আছে। এনকিউএএস-র শংসাপত্র পাওয়ায় তিন বছরের জন্য হাসপাতালের বেড-পিছু ১০ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান মিলবে কেন্দ্র থেকে। এই তিন বছরের মধ্যে আবারও যে কোনও সময়ে কেন্দ্র থেকে পরিদর্শক দল আসতে পারে।’’
তিনি বলেন, ‘‘হাসপাতালের এই সাফল্য সকলের কাছে খুবই আনন্দের। বহু মানুষের পরিশ্রম ও ভাল কাজের ফল এটা। আমাদের দিনেও যা ধরে রাখতে হবে। আগামী দিনে ধাপে ধাপে চেষ্টা করা হবে হিঙ্গলগঞ্জ, বাদুড়িয়া, মিনাখাঁ হাসপাতালগুলিও যাতে এমন সাফল্য পায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy