কাঁচরাপাড়া, হালিশহর, নৈহাটি, শ্যামনগর, ব্যারাকপুর— সর্বত্রই থিমের পুজোর ছড়াছড়ি। এখন একই পাড়ায় দু’টি পুজো, কোথাও আবার দু’হাত ছেড়ে ছেড়ে তিন-চারটে পুজোও হচ্ছে।
বড় যে পুজোগুলি এখনও দর্শক টানছে, তাদের মধ্যে আছে কাঁকিনাড়ার চালকিপাড়া ইউনাইটেড ক্লাবের পুজো। এ বার ৭৫ বছর। থিম, কল্পবৃক্ষে দেবীর অধিষ্ঠান। বড় একটি গাছ যে পরিমাণ অক্সিজেন বাতাসে বিলোয়, তা থেকে ৩২ জন মানুষ প্রতিদিন অক্সিজেন নিতে পারে। গোটা বিশ্ব জুড়েই আদিম যুগ থেকে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রূপে বৃক্ষ পুজো হয় ঈশ্বরের রূপ হিসাবে। এ বার এখানে দুর্গা পুজোও হচ্ছে সেই থিমকে নিয়ে। কল্পনার আকাশ তৈরি হয়েছে মণ্ডপের মধ্যে।
হালিশহর দক্ষিণ খাসবাটির শিশুমহল পুজো কমিটির থিম এ বার প্রকৃতি ও নারীর একাল সেকাল। ২৭ বছরের এই পুজোয় রানি রাসমণির হালিশহর থেকে মুখ্যমন্ত্রীর বিশ্বজয়ী কন্যাশ্রী জায়গা করে নিয়েছে থিম হিসেবে।
কাঁচরাপাড়া বাগমোড়ে ত্রিপর্ণ আয়োজিত পুজোর এ বার ৭ বছর। বয়সে ছোট হলেও পুজো এখানে জমজমাট। থিম, ‘মেঘের পরে পরীর দেশে।’ কাঁচরাপাড়া নবাঙ্কুরের থিম সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত বাহুবলী-২। ৪৬ বছরের পুজোয় এমন চটকদার থিম আগে কখনও হয়নি দাবি উদ্যোক্তাদের। দক্ষিণের মন্দির, রাজ প্রাসাদ, তোরণ সবই হুবহু তৈরি করতে অর্থ এবং প্রযুক্তি দু’টিই খরচ হচ্ছে দেদার। কাঁচরাপাড়া ১৬’র পল্লিতে পাহাড়ি মন্দিরের আদলে মণ্ডপ এবং সিকিমের লোক সংস্কৃতিকে তুলে আনা হচ্ছে। কাঁচরাপাড়া বিশ্বনাথ স্মৃতি সঙ্ঘ বানিয়েছে বাঁশের কেল্লা।
নৈহাটি বিজয়নগর সেবা সমিতির ৬৭ বছরের পুজোয় থিম উত্তর ভারতের মন্দির। ভাটপাড়া সদগোপপাড়ার বারোয়ারি পুজোয় এ বার মণ্ডপ সাজছে ঠান্ডা পানীয়ের বোতল দিয়ে। ৫৩ বছরের পুজোয় শুধু বোতলই নয়, মণ্ডপসজ্জ্বায় ব্যবহার করা হচ্ছে ছিপিও।
ইছাপুর চড়কতলা শীতলামাতা বারোয়ারির পুজো ৫৬ বছরে পড়ল। গাছপালা ও প্রকৃতির মাঝে দেবীর অধিষ্ঠান এখানে। ভাটপাড়ার আতপুর পঞ্চাননতলা সর্বজনীনের এ বার সুবর্ণজয়ন্তী। প্রভাতফেরি থেকে ধুনুচি নাচ, ছোটদের বসে আঁকার প্রতিযোগিতা ও নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন উদ্যোক্তারা। প্রতিমা সাবেক হলেও এই বর্ণময় অনুষ্ঠানই এ বার এখানকার থিম।
এমন অসংখ্য পুজোই আয়োজন হয়েছে এ বার ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে। তথ্য সংস্কৃতি দফতর ও কমিশনারেটের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় যোগ নিচ্ছে বড় পুজোগুলি।
কলকাতা ছাড়িয়ে থিমের টানে শহরতলিতেও ভিড় উপচে পড়ার আশা করছেন আয়োজকেরা। সেই মতো জান লড়িয়ে দিচ্ছেন শিল্পীরাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy