এ ভাবেই সব্জিতে রং মেশানো হয়। —ফাইল চিত্র।
ড্রামে জলের সঙ্গে তুঁতে মিশিয়ে ঢালা হচ্ছে সব্জি। সে সময় হঠাৎ হাজির সাত জন সাদা পোশাকের পুলিশ কর্মী। হাতে নাতে ধরা হল সব্জি ব্যবসায়ীকে।
রবিবার ঘটনাটি ঘটেছে দেগঙ্গার সব্জি হাটে। পুলিশ জানিয়েছে, সব্জিতে তুঁতে মেশানোর জন্য কৌশিক বিশ্বাস নামে এক সব্জি ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আলি হুসেন নামে অন্য এক ব্যবসায়ী সেখান থেকে পালায় বলে পুলিশ জানিয়েছে। তার খোঁজে পুলিশ তল্লাশি শুরু করেছে। দু’জনেরই বাড়ি গোঁসাইপুরে। ঘটনাস্থল থেকে তুঁতের বোতল, তুঁতে মেশানো ড্রাম ও ৩০ কেজি কাঁকরোল উদ্ধার হয়েছে।
এ দিন দুপুরে হঠাৎ ফোন আসে দেগঙ্গার ওসি সুরিন্দর সিংহের কাছে। এরপরেই সাদা পোশাকে পুলিশ ওই সব্জি বাজারে হানা দেয়। জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সাম্প্রতিক সময়ে জেলায় এই প্রথম কেউ সব্জিতে তুঁতে মেশানোর জন্য গ্রেফতার হল। জেলার সর্বত্র সব্জিতে তুঁতে মেশানো হচ্ছে। মানুষের শরীরের পক্ষে যা ক্ষতিকর। এমন রঙ মেশানোর বিরুদ্ধে অভিযান চলবে।’’
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির খাদ্যে ভেজাল মেশানোর মামলা রুজু করা হয়েছে (২৭২ এবং ২৭৩ ধারা)। এই ধারাগুলি জামিন অযোগ্য। দোষ প্রমাণিত হলে ওই মামলায় ন্যূনতম সাজা ১০ বছর জেল এবং সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন হতে পারে। ধৃতকে আজ বারাসত জেলা আদালতে হাজির করানো হবে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রতি সপ্তাহের রবি ও বৃহস্পতিবার দেগঙ্গায় সব্জির হাট বসে। সকালের দিকে চাষিরা দূর থেকে সব্জি নিয়ে এখানে আসেন। চাষিদের কাছ থেকে ব্যবসায়ীরা তা পাইকারি কেনেন। তারপর তাতে তুঁতে মেশানো হয়। মূলত পটল, উচ্ছে কাঁকরোলের মতো সব্জিতেই তুঁতে বেশি মেশানো হয় বলে জানা গিয়েছে। পুলিশের কাছে দীর্ঘদিন ধরেই খবর ছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট খবর পাওয়া যাচ্ছিল না বলে পুলিশ জানায়। এ দিন নির্দিষ্ট সূত্রের ভিত্তিতেই অভিযান চালিয়ে সাফল্য আসে।
শুধু দেগঙ্গাই নয় গোটা জেলার সব হাটে বাজারে প্রকাশ্যে সব্জিতে তুঁতে মেশানো হচ্ছে।
কেন মেশানো হচ্ছে তুঁতে?
কৃষি বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, পটল উচ্ছে কাঁকরোলের মতো সব্জি জেলার থেকে অন্য জেলায় বা ভিন রাজ্যে পাড়ি দেয়। তুঁতে মেশানো হলে সব্জি দ্রুত পচে না এবং রঙটাও দীর্ঘদিন টাটকা থাকে সে কারণে তুঁতে মেশানো হচ্ছে। চিকিৎসকেরা জানান, তুঁতে মেশানো সব্জি দীর্ঘদিন ধরে খেলে লিভার জনিত রোগ দেখা দিতে পারে। এতদিন পর্যন্ত কোনও নজরদারি ছিল না। মানুষের বক্তব্য, মানুষের খাবারে ক্ষতিকারক কীটনাশক মেশাচ্ছে যাঁরা তাঁদের কড়া শাস্তি হওয়া উচিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy