মৃত: রেললাইনে পড়ে রয়েছে শকুনের দেহ। নিজস্ব চিত্র
দৃশ্যটা দেখে আঁতকে উঠেছিলেন বনকর্মীরা। ভোরের আলোয় তাঁরা দেখেন রেল লাইনের উপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে ৯টি শকুনের দেহ। বনদফতরের দাবি, যার প্রতিটিই বিপন্ন প্রজাতির। শনিবার ভোরে শিলিগুড়ির কাছে গুলমা স্টেশনের অদূরেই দেখা যায় এই ছবি। সেই জায়গায় পড়ে ছিল ৩টি গবাদি পশুর আধখাওয়া দেহও।
বন দফতরের অনুমান, শুক্রবার বিকেলের দিকে ঘটনাটি ঘটেছে। বনকর্মীদের সন্দেহ, শকুনগুলো ট্রেনে কাটা পড়া গবাদি পশুর মাংস খাচ্ছিল। সেসময় দ্রুতগতির কোনও ট্রেন চলে আসায় তার ধাক্কায় প্রাণ হারিয়েছে শকুনগুলো। যেখানে এই ঘটনা ঘটেছে সেটি মহানন্দার বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্যের মধ্যে পড়ে। এ দিন সেখানকার এডিএফও জয়ন্ত মণ্ডল রেললাইন ও লাগোয়া এলাকা থেকে ৯টি শকুনের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে বন দফতর জানিয়েছে, মৃত পাখিগুলো ‘হিমালয়ান গ্রিফন ভালচার’। এটি বিপন্ন প্রজাতির শকুন হিসেবে সরকারি তালিকাভুক্ত।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার গুলমার অদূরে ১৫/৪ এবং ১৫/৫ পোস্টের মাঝে অন্তত ৩টি গবাদি পশু ট্রেনের ধাক্কায় মারা যায়। সেগুলো রেল লাইন বরাবর চলছিল বলে রেল জেনেছে। একটির দেহ দু’টি লাইনের মাঝখানে পড়েছিল। অন্য দু’টি পশুর দেহ লাইনের পাশে ছিটকে পড়ে। ট্রেনে কাটা পড়ার পরে কেন গবাদি পশুর দেহগুলো রেলের তরফে সরানো হয়নি সেই প্রশ্ন তুলেছে বন দফতর। এডিএফও জানান, তাঁরা বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। শীঘ্রই বন দফতরের পক্ষ থেকে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি। ঘটনাটি কী ভাবে ওই সেকশনে কর্তব্যরত রেলকর্মীদের নজর এড়িয়ে গেল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে রেলের এক কর্তা জানিয়েছেন। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের ডিআরএম চন্দ্রবীর রমনকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। রাত পর্যন্ত এসএমএস-এরও উত্তর দেননি।
আরও পড়ুন: হাতির মলে প্লাস্টিক, ঘটল কার দোষে?
শকুন মারা যাওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশন (ন্যাফ)। সংগঠনের কো-অর্ডিনেটর অনিমেষ বসু বলেন, ‘‘ট্রেনের ধাক্কায় গবাদি পশুগুলো মারা যাওয়ার পরে রেলকর্মীদের সেটা সরিয়ে ফেলা উচিত ছিল। না হলে বন দফতরে খবর দেওয়া যেত। এ ক্ষেত্রে কিছুই হয়নি বলে এতগুলো বিপন্ন প্রজাতির শকুন মারা গেল।’’ তিনি জানান, ওই প্রজাতির শকুন সাধারণত হিমালয়ের উঁচু এলাকায় ঘোরাফেরা করে। প্রবল ঠাণ্ডার সময়ে তা অপেক্ষাকৃত নীচে নেমে আসে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy