Advertisement
১৬ জুন ২০২৪
Bankura Shoot Out

বাইক ফেলে বাসে বাঁকুড়া ছেড়ে পালায় শুটার প্রতাপ, সাদ্দামকে খুনের সুপারি দিয়েছিল কে?

পুলিশ জানিয়েছে জিজ্ঞাসাবাদে প্রতাপ স্বীকার করে নিয়েছে যে, ৫ সেপ্টেম্বর সাদ্দাম শেখ বাঁকুড়া সংশোধনাগার থেকে ছাড়া পাওয়ার পরেই তাঁর গাড়ির পিছু নেয়। কেশিয়াকোল পৌঁছোতেই গুলি চালায় তারা।

arrest

ধৃত প্রতাপকে নিয়ে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৮:৩৩
Share: Save:

সাদ্দাম শেখের গাড়িতে গুলিবৃষ্টি করে দুই দুষ্কৃতী বাইকে চড়ে বাঁকুড়া শহরে ঢোকে। বাঁকুড়া শহর ঘুরে কেরানিবাঁধ পৌঁছেই বাইক ফেলে দেয় তারা। পুলিশের চোখে ধুলো দিতে তারা উঠে পড়ে একটি যাত্রীবাহী বাসে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য কাজে এল না ফন্দি। গত ৫ সেপ্টেম্বর বাঁকুড়ার কেশিয়াকোলে গুলি চালানোর ঘটনায় শুক্রবার আসানসোল থেকে পাকড়াও হয় প্রতাপ দাস নামে এক অভিযুক্ত। তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই অনেক তথ্য মিলছে বলে জানাচ্ছেন তদন্তকারীরা।

শুক্রবার দুর্গাপুর আসানসোল পুলিশ কমিশনারেটের সহায়তায় প্রতাপকে গ্রেফতার করে বাঁকুড়ার পুলিশ। অভিযুক্তের সঙ্গে ছিল ভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত আরও এক জন। গ্রেফতারের পর থেকে প্রতাপকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, বাঁকুড়ায় গুলিকাণ্ডে অভিযুক্তের আসল বাড়ি পশ্চিম বর্ধমানের জামুড়িয়ায়। কিছু দিন হল আসানসোল মহকুমা হাসপাতালের পাশে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল সে।

অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে লেখাপড়ায় দাঁড়ি টানে প্রতাপ। ঘটনাচক্রে, জড়িয়ে পরে আসানসোল এবং হীরাপুর এলাকার কিছু কুখ্যাত দুষ্কৃতীর সঙ্গে। তাদের সঙ্গে শুরু হয় ওঠাবসা। এর পর ভাড়াটে গুন্ডা হিসাবে কাজ করে এসেছে ওই যুবক। পুলিশ সূত্রে খবর, বছর বাইশের প্রতাপ যেমন গুলি চালনায় দক্ষ, তেমনই দ্রুত বাইক চালাতে ওস্তাদ। ৫ সেপ্টেম্বর গুলি চালানোর দিন একটি দ্রুতগামী মোটর বাইকে করে ঘটনাস্থল থেকে উধাও হয়ে যায় সে। তার সঙ্গে আরও এক সঙ্গী ছিল। তবে বাইক চালাচ্ছিল প্রতাপই।

পুলিশ জানিয়েছে জিজ্ঞাসাবাদে প্রতাপ স্বীকার করে নিয়েছে যে, ৫ সেপ্টেম্বর সাদ্দাম শেখ বাঁকুড়া সংশোধনাগার থেকে ছাড়া পাওয়ার পরেই তাঁর গাড়ি ফলো করতে থাকে তারা। বাঁকুড়া শহর ছাড়িয়ে সাদ্দামের গাড়ি যেই মাত্র কেশিয়াকোল পৌঁছোয়, আর দেরি না করে গুলি চালায় তারা। কিন্তু তার মাঝেই পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পড়ে। ঝটপট বাইকে চড়ে আবার বাঁকুড়া শহরে ফিরে যায় প্রতাপ এবং তার সঙ্গী। এর পর পুরো শহর বাইকে চষে ফেলে তারা। ঠিক কোথা দিয়ে গেলে পুলিশের চোখ এড়ানো যাবে, তার খোঁজে একের পর এক রাস্তা ঘুরেছে প্রতাপ। বিপদ বুঝে এর পর বাসে উঠে পড়ে সে।

কিন্তু ঘটনার পর পরেই যে ভাবে রাস্তায় রাস্তায় নাকা তল্লাশি শুরু করে পুলিশ, যে ভাবে জায়গায় জায়গায় তল্লাশি শুরু হয়, তাতে প্রতাপ বুঝে যায় কোথাও গা ঢাকা দেওয়া এখন কঠিন। শেষ পর্যন্ত শুক্রবার রাতে প্রতাপ গ্রেফতার হয়েছে। কিন্তু কে বা কারা সাদ্দাম শেখের গাড়ির উপর গুলি চালানোর জন্য প্রতাপদের সুপারি দিয়েছিল, তদন্তের স্বার্থে তা খোলসা করতে চাইছে না পুলিশ।

বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তেওয়ারি শনিবার বলেন, ‘‘আমরা এখনই এই ঘটনার মোটিভ সম্পর্কে কিছু বলব না। আমরা প্রতাপ দাসকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার অপর সঙ্গীর খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছি। প্রতাপকে বাঁকুড়া জেলা আদালতে পেশ করে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য আবেদন জানাচ্ছি। আশা করি, ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে শুট আউট কাণ্ডে আরও বহু তথ্য আমাদের হাতে আসবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bankura Shoot Out Bankura District Police police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE