Advertisement
০২ মে ২০২৪
Adenovirus

অ্যাডিনোভাইরাস নিয়ে সতর্কতার বার্তা

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শেখ মহম্মদ ইউনুস বলেন, “কর্তৃপক্ষের তরফে দেওয়া পরামর্শগুলি মেনে চলতে ব্লক থেকে জেলা স্তর পর্যন্ত নির্দেশ পাঠানো হয়েছে।

অ্যাডিনোভাইরাস নিয়ে সতর্ক করছে বর্ধমান জেলা প্রশাসন।

অ্যাডিনোভাইরাস নিয়ে সতর্ক করছে বর্ধমান জেলা প্রশাসন। প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৯:৪৫
Share: Save:

অ্যাডিনোভাইরাস নিয়ে সতর্কতা জারি হল পশ্চিম বর্ধমান জেলাতেও। শনিবারই রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা প্রতিটি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের (সিএমওএইচ) নিয়ে বিশেষ বৈঠক করেন। সেখানে এই ভাইরাস নিয়ে একাধিক সতর্কতামূলক পরামর্শ দেওয়া হয়। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই পরামর্শ বাস্তবে কার্যকর করতে জেলার সব স্তরের সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ, সোমবার থেকে সে সব মেনে চলা হবে বলে জানা গিয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত পশ্চিম বর্ধমানে এই ভাইরাসে আক্রান্ত কোনও শিশুর হদিস মেলেনি বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শেখ মহম্মদ ইউনুস বলেন, “কর্তৃপক্ষের তরফে দেওয়া পরামর্শগুলি মেনে চলতে ব্লক থেকে জেলা স্তর পর্যন্ত নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত শিশুদের কী ভাবে চিকিৎসা করতে হবে, সর্বশেষ পরিস্থিতি কী— সমস্ত রিপোর্ট নিয়মিত জেলায় পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

জানা গিয়েছে, পরামর্শগুলির মধ্যে অন্যতম হল, জ্বর, সর্দি-কাশি নিয়ে কোনও শিশু চিকিৎসার জন্য এলে, আপৎকালীন পরিস্থিতিতে তার চিকিৎসা করতে হবে। প্রয়োজনে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। এই উপসর্গ থাকা শিশুদের ফেরানো যাবে না। এ জন্য পরিকাঠামোগত ব্যবস্থা তৈরি রাখতে হবে। আসানসোল জেলা হাসপাতালের সুপার নিখিলচন্দ্র দাস বলেন, “নির্দেশিকা পেয়েছি। তা মেনে চলা হবে।” নিখিল জানান, জেলা হাসপাতালে ৫২ শয্যা বিশিষ্ট শিশু ওয়ার্ডটি তৈরি রাখা হয়েছে। পাশাপাশি, পুরনো ভবনের পুরুষ মেডিক্যাল ওয়ার্ডটিও তৈরি রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে সেটি ব্যবহার করা হবে। এ ছাড়া ৫০ শয্য বিশিষ্ট ‘এসএনসিইউ’ ওয়ার্ড রয়েছে। প্রয়োজনে সেখানেও ভর্তি করে চিকিৎসা করা যাবে। নিখিলের দাবি, জেলা হাসপাতালে এই মুহূর্তে সাত জন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ আছেন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় এই সংখ্যাটি পর্যাপ্ত।

চিকিৎসক অরুণাভ সেনগুপ্ত জানান, অ্যাডিনোভাইরাস শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমিত হয়। বিশেষ করে ৪ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুরা এই ভাইরাসে সংক্রমিত হয়। সাধারণত শীতের শেষে, বসন্তের শুরুতে এই সংক্রমণের প্রভাব দেখা যায়। গলা ব্যথা, জ্বর, সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্ট এই সংক্রমণের প্রধান লক্ষণ। তাঁর পরামর্শ, এই সংক্রমণ থেকে বাঁচতে হলে মাস্ক পরা ও সব সময় ইথানল যুক্ত হাতশুদ্ধি ব্যবহার করতে হবে। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ তথা আসানসোলের ইএসআই হাসপাতালের সুপার অতনু ভদ্র জানান, সরকারের তরফে তাঁরাও কিছু নির্দেশাবলি পেয়েছেন। সে সব মেনে চলার পাশাপাশি, এই শিল্পাঞ্চলে যে মাত্রায় দূষণ রয়েছে, তাতে শিশুদের মধ্যে এমন উপসর্গ থাকা অস্বাভাবিক কিছু নয়। অতনু বলেন, “সাধারণ গলা ব্যথা, জ্বর, সর্দি-কাশি হলেই যে শিশুরা অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে, এটা বলা যাবে না। তাই রক্তের নমুনা পরীক্ষা করা দরকার। এই জেলায় সে ব্যবস্থা নেই। তার ব্যবস্থা করা দরকার।” অতনুর দাবি, পশ্চিম বর্ধমানে জেলা হাসপাতাল-সহ কোনও সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শিশুদের চিকিৎসার জন্য বিশেষ পরিকাঠামো সম্পন্ন ‘পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট’ নেই। এ ধরনের ভাইরাসে আক্রান্ত শিশুদের উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে হলে এ ধরনের ইউনিট রাখাও জরুরি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Adenovirus Asansol Awareness campaign
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE