Advertisement
১৮ মে ২০২৪

মুণ্ডেশ্বরীর বাঁধ ভেঙে ভেসে গেল মাধবডিহি

এ দিন দুপুর পর্যন্ত জলেই বাস করতে হয় ওই সব এলাকার বাসিন্দাদের। সড়ক পথ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতিও যোগাযোগ করতে পারেননি।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৭ ০১:২৪
Share: Save:

মুণ্ডেশ্বরী নদীর উপর বাঁধ বাঁচাতে জেনারেটর চালিয়ে রাতভর জেগেছিল ফতেপুর গ্রাম। বালি ও মাটির বস্তা ফেলে পরিস্থিতি মোটামুটি সামাল দেওয়া গিয়েছিল। কিন্তু শেষ রাতে পাশের বড় বৈনানে বাঁধ ভেঙে হু হু করে মুণ্ডেশ্বরীর জল ঢুকে ফতেপুরের চেষ্টা ‘জলেই ভেসে’ গেল।

বৃহস্পতিবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, রায়নার মাধবডিহি থানার বড় বৈনান, ফতেপুর, আটাপুর, গোতান, তৈলরপুর, কামারগোড়িয়া-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন। পাশের হুগলি জেলার আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির বেশ কয়েকটি গ্রামেও জল ঢুকেছে। গোতানের কাছে রাস্তার উপর দিয়ে তীব্র বেগে জল বইছে। সেখানে দাঁড়িয়ে রায়না ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আনসার আলির আক্ষেপ, “ফতেপুরের মতো বড় বৈনানও স্বেচ্ছায় শ্রম দিয়ে বাঁধ রক্ষায় এগিয়ে এসেছিল। বস্তা জোগাড় করেও ফেলেছিলাম। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে চারিদিকে জল থাকায় সময়মতো মাটি জোগাড় করা গেল না।” তিনি জানান, বুধবার রাত ১০টা নাগাদ বাঁধের মাটিতে ধসে জল ঢুকতে শুরু করে। ভোরে বাঁধ ভাঙতেই জল ঢুকে ভাসিয়ে দেয় একের পর এক গ্রাম।

এ দিন দুপুর পর্যন্ত জলেই বাস করতে হয় ওই সব এলাকার বাসিন্দাদের। সড়ক পথ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতিও যোগাযোগ করতে পারেননি। ভুক্তভোগীরা বলেন, “বাড়ির মালপত্র সরানোর সময় মেলেনি। রাতভর জলেই থেকেছি। সকালে জল বাড়তে থাকায় কেউ গাছে, কেউ মাচায়, কেউ দোতলা বাড়ির ছাদে আশ্রয় নিয়েছে।” তাঁরাই জানান, তিন দিন ধরে বিদ্যুৎ নেই ওই সব এলাকায়। ফলে বাইরের জগতের সঙ্গে কার্যত যোগাযোগ নেই।

আর ফতেপুর গ্রামের বাসিন্দাদের আক্ষেপ, সন্ধ্যায় বাঁধের একাংশ ভেঙে জল ঢুকতে শুরু করে। পঞ্চায়েত সমিতির কাছ থেকে ৫০০ বস্তা জোগাড় করে মাটি ভরা হয়। জেনারেটরের আলোয় রাতভর বাঁধের ভাঙা জায়গা মাটির বস্তা ফেলা হয়। কিন্তু পরিশ্রম জলে গেল। স্থানীয় বাসিন্দা অরূপ সাহা, সুমন্ত লাহারা বলেন, “এ যাত্রায় গ্রাম বেঁচে গেল ভেবে যখন হাঁফ নিচ্ছি, তখনই বড় বৈনানের বাঁধ ভাঙার খবর আসে।”

বিকেলে মহকুমাশাসক (বর্ধমান দক্ষিণ) অনির্বাণ কোলে মাধবডিহির প্লাবিত এলাকা ঘুরে এসে বলেন, “পরিস্থিতি ভয়ানক। পাঁচশো পরিবারকে উদ্ধার করা হয়েছে। কয়েকটি শিবির খোলা হয়েছে। ১০ হাজার জলের পাউচ পাঠানো হয়ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE