প্লাস্টিক সরতে বেড়েছে ঠোঙার চাহিদা। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য
প্রশাসনের লাগাতার নজরদারি। তার জেরে রাস্তা লাগোয়া ছোট হোটেল বা খাবারের দোকানে প্লাস্টিক ব্যবহারে লাগাম পরানো গিয়েছে অনেকটাই, দাবি প্রশাসনের। কিন্তু দুর্গাপুরের নানা এলাকা ঘুরে দেখা গেল, খাবার দেওয়া হচ্ছে ঠোঙায় এবং ছাপা কাগজে মুড়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর ফলেও শরীরে ক্ষতিকারক রাসায়নিক ঢুকছে। এ বিষয়ে দ্রুত সচেতনতা প্রচারের দাবিও জানান তাঁরা।
শহরের নানা এলাকায় প্রায়শই প্লাস্টিক-বিরোধী অভিযান, প্রচার চলছে। বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে কেজি কেজি বেআইনি প্লাস্টিকের প্যাকেট। সতর্ক করা হচ্ছে ব্যবসায়ীদেরও। এর ফলে, নানা দোকান ও হোটেলে প্লাস্টিকের পরিবর্তে ছাপা কাগজে মুড়ে তরল বাদে বাকি খাবার দেওয়া হচ্ছে। ছাপা কাগজে মুড়ে রুটি, চপ-সহ নানা তেলেভাজা, ডিমভাজা প্রভৃতি দেওয়ার চল শুরু হয়েছে সেখানে।
অথচ, ছাপার কাগজের কালি থেকে বিপজ্জনক রাসায়নিক উপাদান শরীরে ঢুকে বিপদ ডাকছে জানিয়ে ২০১৬-য় তৎকালীন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেপি নাড্ডা ‘ফুড রেগুলেটরি অথরিটি’-কে এ বিষয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেন। এর পরেই সতর্কতা জারি করে ‘ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অফ ইন্ডিয়া’ (এফএসএসএআই)। সব রাজ্যের ‘কমিশনার অফ ফুড সেফটি’-কে এ বিষয়ে উদ্যোগী হওয়ার নির্দেশ দেয় সংস্থা। রীতিমতো চিঠি দিয়ে এফএসএসএআই জানিয়েছিল, দিনের পর দিন ছাপা কাগজে মোড়া খাবার খেলে শরীর বিষাক্ত উপাদানে ভরে যায়। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার দেবব্রত দাসের বক্তব্য, ‘‘ছাপা কাগজের কালি, ‘পিগমেন্ট’-সহ অন্য রাসায়নিক মূলত প্রবীণ, শিশু ও অসুস্থদের শরীরে বিরূপ প্রভাব ফেলে, যা থেকে ক্যানসারের মতো রোগও হতে পারে।’’
এই পরিস্থিতিতে সমস্যায় পড়েছেন বিক্রেতারা। বেনাচিতি বাজারে তেলেভাজার দোকান চালান সুধা মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘প্লাস্টিক বন্ধ। এখন ঠোঙাও বন্ধ হলে বিপদে পড়ব। দামী কাগজের ঠোঙা কিনে ব্যবসা চালানোটাই সমস্যার।’’ তবে সেই সঙ্গে ছাপা কাগজ যে বিপদ ডাকতে পারে, তা তিনি জানেন না বলেও দাবি করেন। একই কথা জানান তেলেভাজা কিনতে আসা কিশোরী রেণুকা রায়ও।
বিষয়টি নিয়ে শহরে সচেতনতা তৈরি করতে পুরসভা উপযুক্ত পদক্ষেপ করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন দুর্গাপুর পুরসভার মেয়র দিলীপ অগস্তি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy