সাউন্ড বক্স, মাইকে জমেছে পিকনিক।
গান ছাড়়া পিকনিক জমবে কী ভাবে!— বলেই শুরু শব্দ-তাণ্ডব।
চিত্র দুই: ভ্যানের মাথায় ছ-সাতটি বক্স, লাউড স্পিকার। এক সঙ্গে সব কটিতে বাজছে গান! সঙ্গে চলেছে ‘ডান্স-পার্টি।’— গত প্রায় এক মাস ধরে সকাল সাতটা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত এমন ছবিই দ্বস্তুর দাঁইহাটে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, এমন শব্দ-দূষণে পড়াশোনা লাটে উঠেছে পড়ুয়াদের। সমস্যায় পড়ছেন বৃদ্ধ, রোগীরা। আরও অভিযোগ, অনেক সময়েই এমন ‘পিকনিক পার্টি’র সদস্যরা মদ্যপ অবস্থায় থাকায় রাস্তায় চলাফেরা করাও দায় হয়ে পড়েছে।
বাসিন্দারা জানান, ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে ভাউসিং, বাগটিকরা, চাম্পচা রোড, বাজার প্রভৃতি এলাকায় পিকনিক পার্টির ঢল নেমেছে। শহর লাগোয়া কালিকাপুর ফেরিঘাট, পলাশি আমবাগান, রঘুনাথপুর বাঁধ লাগোয়া মাঠ প্রভৃতি এলাকাও এখন জমজমাট। দাঁইহাটের উপর দিয়েই এই সব এলাকায় যেতে হয়।
এই পরিস্থিতিতে ভাউসিংয়ের বাসিন্দা পিন্টু দত্ত, সুশীল দত্ত, মাধব দাসদের ক্ষোভ, ‘‘বক্সের আওয়াজে কান ঝালাপালা হয়ে যাচ্ছে।’’ সামনেই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা রয়েছে বাজার এলাকার বাসিন্দা তিমির নাথের মেয়ের। তিমিরবাবুর ক্ষোভ, ‘‘শব্দ-যন্ত্রণায় মেয়ের পড়াশোনা লাটে উঠেছে।’’ এই তাণ্ডবে শিশুদেরও সমস্যা হচ্ছে বলে জানান স্থানীয় একটি ওষুধের দোকানের মালিক। ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক শীতল ভট্টাচার্যের ক্ষোভ, ‘‘লাউড স্পিকারের তাণ্ডবে ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলতে, শুনতেও সমস্যা হচ্ছে।’’
এ সব সমস্যায় অবশ্য কর্ণপাত করছেন না পিকনিক-পার্টির সদস্যরা। ইকরাম শেখ, সাইফুদ্দিন শেখদের পাল্টা দাবি, ‘‘লাউডস্পিকারে গান না চললে পিকনিকের মেজাজটাই যে আসে না।’’
তবে এ যাবৎ কেউই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেননি বলে দাবি দাঁইহাট থানার। কেন এমনটা? বাসিন্দাদের অভিযোগ, ‘‘এলাকার ‘দাদা’দের ভয়ে মুখ খুলতে পারি না। কখন কী করে!’’
শব্দ-যন্ত্রণায় কী কী সমস্যা হতে পারে? সন্দীপ সাহা নামে এক চিকিৎসক বলেন, ‘‘১২০ ডেসিবলের বেশি শব্দ কানের পর্দা ফাটিয়ে দিতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে তা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। প্রৌঢ়দের ক্ষেত্রেও শ্রবণক্ষমতা কমে যেতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy