Advertisement
০২ মে ২০২৪
Drunk Teacher

মদ খেয়ে চুর শিক্ষক, স্কুলে ঢুকতে না-দেওয়ায় শুয়ে পড়লেন দরজার সামনেই, ‘স্যরের কীর্তি’ বর্ধমানে

শনিবার সকালে লজ্জার ছবি বর্ধমানে। শিবকুমার হরিজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হিন্দির শিক্ষক জয়রামকুমার সিংহ মত্ত অবস্থায় স্কুলে হাজির। ঢুকতে দেওয়া হয়নি তাঁকে। অগত্যা স্কুলের গেটেই ঘুম!

স্কুলের গেটের সামনে শুয়ে শিক্ষক।

স্কুলের গেটের সামনে শুয়ে শিক্ষক। — নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৮:৫২
Share: Save:

মাফলারে মাথা, গলা মোড়া। কাঁধে ব্যাগ। স্কুলের গেটে সটান শুয়ে শিক্ষক! অসুস্থ? কাছে গিয়ে বোঝা গেল, অসুখ নয়, ‘সুখের’ কারণ আসলে মদ! মত্ত অবস্থায় স্কুল পর্যন্ত পৌঁছলেও তাঁকে ভিতরে ঢুকতে দেননি ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক। অগত্যা স্কুলের গেটেই শুয়ে পড়েন তিনি। বর্ধমানের শিবকুমার হরিজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের কাণ্ডে হুলস্থুল। সহকর্মীর কীর্তিতে লজ্জিত অন্য শিক্ষকেরা। আর সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে ভীত অভিভাবকরা।

শনিবার সকালে লজ্জার ছবি দেখল বর্ধমান। শিবকুমার হরিজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হিন্দি ভাষার শিক্ষক জয়রামকুমার সিংহ। তিনি শনিবার সকালে মত্ত অবস্থায় স্কুলে হাজির হন। কিন্তু পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে তাঁকে শনিবার স্কুলে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তাই স্কুলের গেটের সামনেই সটান শুয়ে পড়েন জয়রাম। সেখানেই ঘুম দেন। শিক্ষককে ও ভাবে পথে শুয়ে থাকতে দেখে অবাক হয়ে যান পথচলতি মানুষ। অনেকেই ভেবেছিলেন, বোধ হয় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। উদ্ধার করতে সামনে যেতেই নাকে আসে ঝাঁঝালো গন্ধ। মদের। ঘটনা আঁচ করে সরে পড়েন সকলেই। স্কুল সূত্রের খবর, দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে ওই স্কুলেই শিক্ষকতা করছেন জয়রাম। তবে গত কয়েক বছর ধরে মত্ত অবস্থায় স্কুলে আসছেন তিনি। কিন্তু শনিবার সব বাঁধ ভেঙে গেল।

স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক অশোককুমার মালিক বলেন, ‘‘প্রায় দিনই মত্ত অবস্থায় স্কুলে আসেন ওই শিক্ষক। এ বিষয়ে জেলা স্কুল পরিদর্শককেও জানানো হয়েছে। ডিআই অফিস থেকে জয়রামকে ডেকে পাঠানোও হয়েছিল। তিনি সেখানে ক্ষমা চেয়েছিলেন। বলেছিলেন, এ রকম আর হবে না। তার পরেও এই ধরনের ঘটনা কয়েক বার ঘটেছে। আজ (শনিবার) স্কুল চলাকালীন আবার তিনি মত্ত অবস্থায় স্কুলে আসেন। আমরা গেট বন্ধ রেখেছি। কারণ তিনি মত্ত অবস্থায় স্কুলে এসে ছাত্র-ছাত্রীদের এটাসেটা ছুড়ে মারেন। মঙ্গলবার এ বিষয়ে স্কুল পরিদর্শককে চিঠি দিয়ে জানানো হবে।’’

স্কুলের অন্য শিক্ষকেরাও জানিয়েছেন, সহকর্মীর এই কাণ্ডে তাঁরা লজ্জিত! সন্তান কী শিখবে, তা ভেবে বিচলিত অভিভাবকেরাও। অভিভাবক তারাশঙ্কর রায়, সোমনাথ মণ্ডলেরা বলছেন, ‘‘এক জন শিক্ষকের এই আচরণ উদ্বেগের। এর বিহিত হওয়া দরকার। আমাদের বাচ্চারা স্কুলে গিয়ে কী শিখবে?’’ তাঁদের আবেদন, ‘‘এ রকম শিক্ষককে যেন স্কুলে ঢুকতে না দেওয়া হয়।’’ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান মধুসূদন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বিষয়টি শুনলাম। কী হয়েছে, খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

School Teacher Primary School
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE