মনোনয়ন-পর্ব থেকে ভোটের দিন, পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে এ বার বিতর্ক বিস্তর। এক দিকে হিংসার অভিযোগে সরব বিরোধীরা, তার পাশাপাশি আইনি লড়াই চলেছে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। এই আবহেই আজ, বৃহস্পতিবার রাজ্যের ২০ জেলায় পঞ্চায়েত ভোটের গণণা। যে হেতু ত্রিস্তরের ভোট এবং ব্যালটের গণনা, তাই পূর্ণাঙ্গ ফল জানতে ভোটযন্ত্রের (ইভিএম) তুলনায় সময় বেশি লাগার কথা।
পাঁচ বছর আগে পঞ্চায়েত ভোটের পরে বোর্ড গঠন হয়েছিল অগস্টে। তাই এ বার বোর্ডের মেয়াদ থাকছে অগস্ট পর্যন্ত। এ বার ভোটের আগেই ৩৪% আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে নিয়েছিল শাসক দল। আদালতে আবেদন হওয়ায় ওই আসনগুলির ফলঘোষণা স্থগিত রাখতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। সর্বোচ্চ আদালতে ওই মামলার আবার শুনানি রয়েছে ৩ জুলাই। ওই ৩৪% বাদ দিয়ে বাকি আসনের ফল ঘোষণায় বাধা নেই।
রাজ্যে এই নবম পঞ্চায়েত নির্বাচনই প্রথম ভোট, যখন বিরোধীদের হাতে একটিও জেলা পরিষদ নেই। গত বারের ভোটে বিরোধীদের জেতা তিনটি জেলা পরিষদও চলে গিয়েছে শাসকের হাতে। এ বার ভোটের আগে তিন দফায় এবিপি আনন্দ-সি ভোটারের জনমত সমীক্ষা তৃণমূলকেই এগিয়ে রেখেছে। সেই সঙ্গেই রাজ্যে সাম্প্রতিক সব নির্বাচনের প্রবণতা মেনে তৃণমূলের চেয়ে অনেকটা পিছনে থাকলেও তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে বিজেপির উঠে আসার ইঙ্গিত রয়েছে। সমীক্ষার সঙ্গে বাস্তব কত দূর মিলছে, তা স্পষ্ট হয়ে যাবে আজই।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেওয়া উন্নয়ন কর্মসূচির সুবাদে সর্বত্র পঞ্চায়েতে তাঁরা অনায়াসে জিতবেন বলেই শাসক দলের নেতৃত্ব আশাবাদী। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘মানুষ আমাদের সঙ্গে আছেন, তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর উপরে আস্থা রাখেন। সর্বত্রই পঞ্চায়েতে সেই আস্থার প্রতিফলন ঘটবে, আশা করি।’’ বিরোধীরা অবশ্য বলছে, ‘প্রহসনে’র এই ভোটে হার-জিতের বিশ্লেষণ অবান্তর! যদিও তার মধ্যে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের আশা, প্রধান বিরোধী হিসেবে তাঁদের উত্থানই আরও দৃঢ় হবে।
মনোনয়ন এবং ভোটের দিনের ছবি দেখে সিপিএম আবার গণনাতেও ‘কারচুপি’র আশঙ্কা করছে। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রবীন দেব বুধবার বলেছেন, ‘‘যে ভাবে ভোট হয়েছে, তার পরে গণনাতেও গোলমাল করার সব রকম চেষ্টা হতে পারে। তাই ২৯১টি গণনা কেন্দ্রেই ২০০ মিটার বাদ দিয়ে বাম কর্মী-সমর্থকদের জমায়েতের আহ্বান করছি। হামলা হলে প্রতিরোধও করতে হবে।’’ তবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, গণনা কেন্দ্রকে ঘিরে ত্রিস্তর নিরাপত্তা বলয় থাকবে।
আরও পড়ুন: সকালেই পৌঁছে গিয়েছিল রাজ্যপালের রিপোর্ট, তার পরেই হিংসা নিয়ে চড়া স্বর প্রধানমন্ত্রীর
গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রার্থীদের এজেন্টদের গণনা কেন্দ্রে ঢোকার আবেদনপত্র বিডিও-রা দিচ্ছেন না, এমন অভিযোগে বিতর্ক বেধেছিল। সন্ধ্যায় কমিশন বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, গণনায় থাকার আবেদন পেলেই তা গ্রাহ্য করতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy