Advertisement
০২ মে ২০২৪
Bimal Gurung

ভোটে ‘মহাজোট’ হারতেই বিজেপিকে নিশানা বিমলের, গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে দিল্লিতে আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও

১৫ অগস্ট, স্বাধীনতা দিবসের মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রী যদি গোর্খাদের নিয়ে কোনও বার্তা না দেন, তা হলে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে দিল্লিতে গিয়ে আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন মোর্চা প্রধান।

বিমল গুরুং।

বিমল গুরুং। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৩ ২২:২৩
Share: Save:

এখন ‘মহাজোট’ অতীত। পঞ্চায়েত ভোট মিটতেই গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে ফের বিজেপিকে নিশানা করলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতা বিমল গুরুং। পাহাড়ের শহিদ দিবসের অনুষ্ঠানমঞ্চ থেকে বৃহস্পতিবার বিজেপিকে নিশানা করে তাঁর অভিযোগ, গোর্খাদের নিয়ে কোনও ভাবনাচিন্তাই করেনি কেন্দ্রের বিজেপি সরকার! ১৫ অগস্ট, স্বাধীনতা দিবসের মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যদি গোর্খাদের নিয়ে কোনও বার্তা না দেন, তা হলে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে দিল্লিতে গিয়ে আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন মোর্চা প্রধান। পাল্টা বিজেপির কটাক্ষ, বিমলের দল ‘মূর্খামি’ করছে!

১৯৮৬ সালে জিএনএলএফ নেতা সুভাষ ঘিসিংয়ের নেতৃত্বে পৃথক রাজ্য গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়েছিল পাহাড়ে। কালিম্পঙে সেই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে মারা যান ১৪ জন। তার পর থেকে প্রতি বছর পাহাড়ে ২৭ জুলাই শহিদ দিবস পালিত হয়। বৃহস্পতিবার দার্জিলিঙের দুঃখ নিবারণী হলে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার শহিদ দিবসের কর্মসূচি ছিল। সেখানে শহিদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে বিমলের বক্তব্য, পাহাড়ে গোর্খাদের নিজস্ব কোনও পরিচয় নেই। তাঁদের ‘বিদেশি’ বলে আখ্যা দেওয়া হয়। তার কারণ, দার্জিলিঙের পাশেই নেপাল সীমান্ত। যাতায়াত লেগেই থাকে। মোর্চা প্রধানের দাবি, ‘‘আমরা পরিচয়হীনতায় ভুগছি। হয় আমাদের নেপালের নাগরিকত্ব দেওয়া হোক, নয়তো সীমান্ত বন্ধ করে দিক সরকার!’’ এখানেই থেমে থাকেননি বিমল। তিনি বলেন, ‘’১৫ অগস্ট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণে যদি গোর্খাদের নিয়ে কোনও বক্তব্য না থাকে, তা হলে গোর্খাল্যান্ড নিয়ে দিল্লিমুখী আন্দোলন শুরু হবে। তার আগে ৪ অগস্ট দিল্লির যন্তর মন্তরেও বিক্ষোভ প্রদর্শন করবে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা।’’

পঞ্চায়েত ভোটের আগে থেকে পাহাড়ে বিজেপির কাছাকাছি এসেছিলেন বিমল। দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তার সঙ্গে বৈঠকও করেন। মূলত তাঁদের উদ্যোগেই পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে অজয় এডওয়ার্ডের হামরো পার্টি এবং বেশ কয়েকটি ছোট দলকে নিয়ে ‘মহাজোট’ও তৈরি হয়েছিল পাহাড়ে। লক্ষ্য ছিল— অনীত থাপার ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা এবং রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের ‘জোট’কে হারানো। কিন্তু সেই ভোটে পর্যুদস্ত হতে হয়েছে ‘মহাজোট’কে। তার পরেই বিজেপিকে নিশানা করলেন বিমল।

ঘটনাচক্রে, কালিম্পঙে শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকে বিজেপিকে আক্রমণ করেছেন অনীতও। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি শুধু গোর্খাদের স্বপ্ন দেখায়। তারা যত দিন কেন্দ্রে থাকবে, গোর্খাদের কিছুই হবে না। কেন্দ্রে গোর্খাদরদি সরকার এলেই তাদের স্বপ্নপূরণ হবে। তবে কারও কোল খালি করে কখনই গোর্খাল্যান্ডের আন্দোলন করা উচিত নয়। এ কারণেই আমরা এই আন্দোলনের পথ থেকে সরে এসেছি।’’

বিমল-অনীতদের সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি। দার্জিলিঙে দলের সভাপতি কল্যাণ দেওয়ান বলেন, ‘‘গোর্খাল্যান্ড বা রাজনৈতিক সমাধান— এই কাজ একমাত্র কেন্দ্রীয় সরকারই করতে পারে। যারা এই সমস্যার সমাধান করবে, তাদের সঙ্গে ঝগড়া করে কী লাভ! এরা ভাবে গোর্খাল্যান্ড হল রাস্তা বা কমিউনিটি হল বানানোর মতো। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক গোটা দেশবাসীর সামনে গোর্খাল্যান্ডের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এটা কোনও সাধারণ বিষয় না। বিমল-অনীতেরা যা দাবি করছেন, তা সরকারের সঙ্গে ঝগড়া করে পাওয়া যাবে না। ধৈর্য ধরে আলোচনা করে আদায় করতে হবে। ওরা মূর্খামি করছে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bimal Gurung
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE