Advertisement
১৭ মে ২০২৪

সিপিএম-তৃণমূল দ্বন্দ্বে বাস বন্ধ, দুর্ভোগ দুই জেলায়

বাস মালিক সিপিএম মনোভাবাপন্ন। এই ‘অপরাধে’ ভোটের পর থেকেই বেশ কয়েকটি বাস বন্ধ রাখার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। হুমকির মুখে বাসগুলি রাস্তায় না নামায় গ্রামীণ হাওড়া এবং হুগলির একাংশে পরিবহণ ব্যবস্থা সঙ্কটে পড়েছে। শাসক দলের এমন ভূমিকায় শুধু যে বাসের মালিক এবং কর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তাই নয়, নিত্য যাত্রীরাও বেকায়দায় পড়েছেন। কেউ ঘুরপথে গন্তব্যে পৌছচ্ছেন, কেউ আবার বাদুড়ঝোলা হয়ে ট্রেকার বা অন্য গাড়িতে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীরামপুর ও উদয়নারায়ণপুর শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৪ ০১:২৩
Share: Save:

বাস মালিক সিপিএম মনোভাবাপন্ন। এই ‘অপরাধে’ ভোটের পর থেকেই বেশ কয়েকটি বাস বন্ধ রাখার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। হুমকির মুখে বাসগুলি রাস্তায় না নামায় গ্রামীণ হাওড়া এবং হুগলির একাংশে পরিবহণ ব্যবস্থা সঙ্কটে পড়েছে। শাসক দলের এমন ভূমিকায় শুধু যে বাসের মালিক এবং কর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তাই নয়, নিত্য যাত্রীরাও বেকায়দায় পড়েছেন। কেউ ঘুরপথে গন্তব্যে পৌছচ্ছেন, কেউ আবার বাদুড়ঝোলা হয়ে ট্রেকার বা অন্য গাড়িতে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন।

বিষয়টি নিয়ে অবশ্য তৃণমূলের অন্দরেই বিতর্ক দানা বেধেছে। দলের কিছু নেতা-কর্মীর মদতেই যে রুট থেকে বাস বন্ধ হয়েছে, তা তৃণমূল শিবির থেকেই জানা যাচ্ছে। তৃণমূল নেতাদের একাংশ মনে করেন, অন্য দল করার অপরাধে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া অনুচিত। আবার যাত্রীদের সঙ্গেও তা প্রতারণার সামিল। যদিও, অপরপক্ষ তাতে ভ্রুক্ষেপ করছে না।

প্রশাসন সূত্রের খবর, তারকেশ্বর থেকে জগৎবল্লভপুর হয়ে হাওড়া, ডিহিভুরসূট থেকে উদয়নারায়ণপুর, বোড়হল হয়ে হাওড়া ও উদয়নারায়ণপুর থেকে জগৎবল্লভপুর হয়ে হাওড়া রুটের অন্তত ৫টি বাস বন্ধ। এমনিতেও এই রুটগুলিতে বাসের সংখ্যা কম। তার উপর, অতগুলি বাস বন্ধ থাকায় যাত্রীরা চরম অসুবিধায় পড়ছেন।

বাস মালিক সংগঠন এবং তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোটের পরে লক্ষ্মীকান্ত দাস ওরফে লখাই নামে সিপিএম সদস্য এক বাস মালিকের দু’টি বাস জোর করে বন্ধ করে দেওয়া হয়। আরও দু’জন মালিকের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে। কেন তাঁরা উলুবেড়িয়ার সিপিএম প্রার্থী সাবিরুদ্দিন মোল্লায় হয়ে ভোটে প্রচার করেছেন, সেই ব্যাখ্যা চেয়েই রুটে তাঁদের বাস চালাতে নিষেধ করা হয়। ওই রুটের বাস মালিকরা অবশ্য হুমকির চোটে অনেকটাই গুটিয়ে গিয়েছেন। প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাইছেন না তাঁরা।

এক বাসমালিক বলেন, “আমাদের ব্যবসা মার খাচ্ছে। ওদের দয়ার উপরেই সব নির্ভর করছে। সাহস করে কিছু বলতে পারছি কই। ওদের নেতাদেরই হাতেপায়ে ধরতে হচ্ছে।” অন্য এক বাস চালকের কথায়, “বিরোধী দল করার শাস্তি এ ভাবে পেতে হবে, ভাবিনি।”

‘শাস্তি’ পাওয়া বাসের কয়েকটি উদয়নারায়ণপুর থেকে জাঙ্গিপাড়া হয়ে হাওড়ায় যায়। বাস বন্ধের ফলে যাত্রীদের যে অসুবিধা হচ্ছে, সে কথা অস্বীকার করেননি জাঙ্গিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “যে-ই বাস আটকে রাখুন, এটা অনুচিত হয়েছে। এতে বাসকর্মীদের রুজিরুটিতে হাত পড়েছে। আমার বিধানসভা কেন্দ্র-সহ বেশ কিছু জায়গার মানুষকে এর ফল ভুগতে হচ্ছে। এটা মানা যায় না।”

উদয়নারায়ণপুরের তৃণমূল বিধায়ক সমীর পাঁজা অবশ্য বলেন, “ওখানে লখাই দাস আর তাঁর এক সাগরেদ সিপিএমের নেতা। ভোটের দিন উদয়নারায়ণপুরের জঙ্গলপাড়ায় ওরা আমাদের লোকজনকে শাসায়, মারধর করে। থানায় এ ব্যাপারে আমরা অভিযোগও করেছি। ভোটের ফল বেরনোর পরে ওরা নিজেরাই বাস বন্ধ করে পালিয়ে গিয়েছে। আমরাও চাই, ওরা ফিরে এসে বাস চালান। না হলে সাধারণ মানুষের অসুবিধা হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bus strike srirampore udaynarayanpore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE