Advertisement
১৮ মে ২০২৪
মৎস্যজীবীর তৎপরতায় উদ্ধার অন্যজন
Student drown

খালে সাঁতরাতে গিয়ে তলিয়ে গেল ছাত্র

সৌম্যদীপের বাড়ি রাজাপুর থানার বাসুদেবপুর গ্রামে। সে স্থানীয় রামকৃষ্ণ বিদ্যামন্দিরের ছাত্র। বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। তার বাবা সমীর চক্রবর্তী গুজরাতে জরির কাজ করেন।

এই খাল পেরোতে গিয়েই তলিয়ে গিয়েছে সৌম্যদীপ চক্রবর্তী (ইনসেটে)।

এই খাল পেরোতে গিয়েই তলিয়ে গিয়েছে সৌম্যদীপ চক্রবর্তী (ইনসেটে)। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২৩ ০৬:৪২
Share: Save:

দ্বাদশ শ্রেণির তিন বন্ধু মিলে বুধবার স্নান করতে গিয়েছিল উলুবেড়িয়ার গঙ্গায়। লাগোয়া খাল সাঁতরে দু’জন উলুবেড়িয়া কালীবাড়ি ঘাটে যেতে গিয়ে একজন তলিয়ে গেল। এক মৎস্যজীবীর তৎপরতায় অন্যজন কোনও মতে রক্ষা পায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তলিয়ে যাওয়া সৌম্যদীপ চক্রবর্তী নামে ওই ছাত্রের খোঁজে তল্লাশি শুরু করে বিপর্যয় মোকাবিলার দল। তবে, সন্ধ্যা পর্যন্ত তার সন্ধান মেলেনি।

সৌম্যদীপের বাড়ি রাজাপুর থানার বাসুদেবপুর গ্রামে। সে স্থানীয় রামকৃষ্ণ বিদ্যামন্দিরের ছাত্র। বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। তার বাবা সমীর চক্রবর্তী গুজরাতে জরির কাজ করেন। তার ওই দুই বন্ধুর মধ্যে সুশান্ত দলুই ওই গ্রামেরই এবং আদিত্য ভট্টাচার্য উলুবেড়িয়ার লতিবপুরের বাসিন্দা। পড়াশোনার পাশাপাশি সৌম্যদীপ পুরোহিতের কাজও করে। এ দিন সে-ই গঙ্গাস্নানে যাওয়ার প্রস্তাব দেয় বলে সুশান্ত পুলিশকে জানিয়েছে। দুই বন্ধু মিলে প্রথমে আদিত্যের বাড়ি যায়। সেখান থেকে আদিত্যের মোটরবাইকে উলুবেড়িয়া ঘাটে।

বেলা ১১টা নাগাদ নদীতে তখন ভাটা চলছিল। সুশান্ত স্নান করে উঠে পড়লেও লাগোয়া বনস্পতি খাল সাঁতরে সৌম্যদীপ এবং আদিত্য উল্টো দিকের উলুবেড়িয়া কালীবাড়িতে গিয়ে প্রণাম করে আসবে বলে ঠিক করে। সেই মতো কিছুটা যাওয়ার পরেই সৌম্যদীপরা তলিয়ে যেতে থাকে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সুশান্ত বলে, ‘‘পারে দাঁড়িয়ে আমি সৌম্যদীপের চিৎকার শুনতে পাই। বুঝি বিপদে পড়েছে। হয়তো কোনও চোরাস্রোত ছিল। আমি সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে থাকি। তখন এক মাঝি এগিয়ে যান। তিনি আদিত্যকে নৌকায় তুলে নেন। কিন্তু সৌম্যদীপ তলিয়ে যায়।’’

গোলোক সাঁতরা নামে স্থানীয় ওই মৎস্যজীবী মাছ ধরে নৌকায় ফিরছিলেন। তিনি সুশান্তর চিৎকার শুনে নৌকা নিয়ে ঘটনাস্থলে পোঁছে যান। তাঁর কথায়, ‘‘কোনও কিছু না ভেবেই স্রোতের বিপরীতে দ্রুত নৌকা চালিয়ে ওখানে যাই। একজনকে তুলতে পারলেও অন্যজনকে পারলাম না।’’

এ দিন উলুবেড়িয়া থানায় বসে কাঁপতে কাঁপতে সুশান্ত বলে, ‘‘সকাল আটটা নাগাদ সৌম্যদীপ ফোন করে বলে নদীতে স্নান করতে যাব। আমি রাজি হয়ে যাই। আমি আদিত্যকে ফোন করি। এমন ঘটনা ঘটবে,
বুঝতে পারিনি।’’

আদিত্য জানায়, খলিসানিতে একটি মন্দিরে পুজো দিতে গিয়ে সৌম্যদীপের সঙ্গে ওর পরিচয় হয়। তার কথায়, ‘‘সৌম্যদীপকে তলিয়ে যেতে দেখে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলাম। তারপরে আমিও তলিয়ে যাচ্ছিলাম। মাঝি বাঁচালেন। বন্ধু চোখের সামনে তলিয়ে গেল, ভাবতেই পারছি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Uluberia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE