Advertisement
১৮ মে ২০২৪
TMC

কুলিয়া সেতু হবে কবে, ভোটের মুখে ফের প্রশ্ন

সকালে মানুষের সঙ্গে দেখা করেন। তারপরে কখনও বেরিয়ে পড়েন নদীভাঙন দেখতে, কখনও বোরো চাষিদের সমস্যার কথা শুনতে। অসিতবাবুর এই দৌড়ঝাঁপের কথা এলাকার মানুষও স্বীকার করেন।

বেহাল: বাঁশের তৈরি এই সাঁকোই ভরসা গ্রামবাসীদের। ছবি: সুব্রত জানা।

বেহাল: বাঁশের তৈরি এই সাঁকোই ভরসা গ্রামবাসীদের। ছবি: সুব্রত জানা।

নুরুল আবসার
আমতা শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৭:০১
Share: Save:

মূলত গ্রামীণ এলাকা আমতা। অধিকাংশ রাস্তাই বেশ ঝাঁ-চকচকে।

বাগনান-মানকুর রোড সংস্কার হচ্ছে ২০ কোটি টাকা খরচ করে।

২০০৬ সালে হুড়হুড়িয়া খালের উপরে বাকসি সেতুটি বসে গিয়ে যান চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছিল। সম্প্রতি সংস্কার হয়েছে সেতুটি।

ফি বছর দামোদর, মুণ্ডেশ্বরী ও রূপনারায়ণের বন্যায় প্লাবিত হয় এলাকার বিস্তীর্ণ অংশ। বিশ্বব্যাঙ্কের টাকায় চলছে বন্যা নিয়ন্ত্রণের কাজ।

এ সব যদি আমতা বিধানসভা কেন্দ্রের পাওয়ার ছবি হয়, না পাওয়ার ‘ক্ষত’ প্রস্তাবিত কুলিয়া সেতু। তা ছাড়াও, রাস্তায় রাস্তায় হাইমাস্ট আলো, ঘরে ঘরে পানীয় জলের বন্দোবস্ত, স্কুলের উন্নয়ন না-হওয়া নিয়ে অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু আলোচনায় বারবার ফিরে আসে কুলিয়া সেতুর কথা। প্রশ্ন ওঠে, আর কবে হবে?

জয়পুরের ঘোড়াবেড়িয়া-চিৎনান এবং ভাটোরা— এই দুই পঞ্চায়েত মুণ্ডেশ্বরী ও রূপনারায়ণ দিয়ে ঘেরা। এলাকাটি জেলার ‘দ্বীপাঞ্চল’ নামে পরিচিত। কুলিয়াঘাটে মুণ্ডেশ্বরীর উপরে একটি পাকা সেতুর দাবি এলাকাবাসীর অনেকদিনের। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে পূর্ত (সড়ক) দফতর প্রায় তিন বছর আগে সেতু তৈরির দায়িত্ব নেয়। কিন্তু এতদিনে শুধু বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরি করেছে। ফলে, দ্বীপাঞ্চলের বাসিন্দাদের হতাশা গোপন থাকছে না।

আমতার বিধায়ক কংগ্রেসের অসিত মিত্র। তাঁর অবস্থা ‘হংস মাঝে বক যথা’-র মত। কারণ, বাকি ১৫টি বিধানসভাই তৃণমূলের দখলে। আমতা-২ ব্লকের ১৪টি এবং বাগনান-১ ব্লকের ৪টি, অর্থাৎ মোট ১৮টি পঞ্চায়েত নিয়ে আমতা বিধানসভাকেন্দ্র গঠিত। সব পঞ্চায়েতই তৃণমূলের দখলে। দু’টি পঞ্চায়েত সমিতিতেও রয়েছে শাসক দল।

ফলে, কুলিয়া সেতু-সহ অনুন্নয়নের সব দায় অসিতবাবুর উপরে চাপছে না। তৃণমূলের দিকেও আঙুল তুলছেন এলাকার বাসিন্দারা।

অসিতবাবুর দাবি, যতটুকু কাজ হয়েছে, সেগুলি তাঁরই তদ্বিরের ফল। তিনি বলেন, ‘‘শাসক দলের বিধায়ক না-হওয়ায় লড়াই করেই আমায় কাজ আদায় করতে হয়েছে। কুলিয়া সেতুর কাজ দ্রুত শুরু করার ব্যাপারে মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়েছি।’’

হাইমাস্ট আলো না-বসাতে পারা, বা বাড়ি বাড়ি পানীয় জলের বন্দোবস্ত করে না-পারার মতো বিষয়গুলির ক্ষেত্রে প্রশাসনিক অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছেন বিধায়ক। গ্রাম পঞ্চায়েত এবং জেলা পরিষদের উন্নয়নমূলক বৈঠকে তাঁকে ডাকা হয় না, এ অভিযোগও তুলেছেন অসিতবাবু। তবে, দাবি করেছেন, ‘‘দেউলগ্রাম বাজার এবং অমরাগড়িতে সৌরবিদ্যুতের আলো দেওয়ার পরিকল্পনা করেছি। ডিএমবি হাইস্কুল‌ এবং খালনা বালিকা বিদ্যালয়ে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প করেছি।’’

দেউলগ্রামে নিজের মাটির বাড়ি লাগোয়া একটি দরমার ছোট ঘরই বিধায়কের অফিস। সেখানেই তিনি সকালে মানুষের সঙ্গে দেখা করেন। তারপরে কখনও বেরিয়ে পড়েন নদীভাঙন দেখতে, কখনও বোরো চাষিদের সমস্যার কথা শুনতে। অসিতবাবুর এই দৌড়ঝাঁপের কথা এলাকার মানুষও স্বীকার করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE