নজরদারি: গোলাবাড়ি এলাকার স্কুলের সামনে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র
নিজেদের ফ্ল্যাটের ছ’তলার ছাদ থেকে পড়ে গুরুতর জখম হয়েছিল পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়া বংশ গুপ্ত। ১০ বছরের ওই বালক বর্তমানে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন। ঘটনাটি ঘটেছিল শুক্রবার বিকেলে। এরই মধ্যে ওই ঘটনার জন্য বংশের স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দায়ী করে সোমবার স্কুলে বিক্ষোভ দেখালেন ছাত্রটির পরিবারের লোকজন ও এলাকার বাসিন্দারা। অভিযুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাকে গ্রেফতারের দাবিও তোলেন তাঁরা। ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে তাদের সঙ্গে হাতাহাতি বাধে বিক্ষোভকারীদের। পরে দফায় দফায় লাঠি চালিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয় পুলিশ।
সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার গোলাবাড়ি থানার বিজয়কুমার মুখার্জি রোডের একটি ইরেজি মাধ্যম স্কুলে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার বিকেলে নিজেদের ফ্ল্যাটের নীচ থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় বংশকে। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, ওই বালক ছ’তলার ছাদ থেকে নিজেই ঝাঁপ দিয়েছিল। প্রথমে বংশকে সালকিয়ার একটি নার্সিংহোম ও পরে সেখান থেকে দক্ষিণ কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে ভেন্টিলেশনে রয়েছে ওই পড়ুয়া।
এ দিন সকালে বংশের পরিবারের লোকজন ও স্থানীয় বাসিন্দারা তার স্কুলের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। প্রথমেই তাঁরা সব পড়ুয়াকে বার করে দেন। অভিযোগ করতে থাকেন, বিনা দোষে বংশকে মারধর করায় সে অভিমানে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। তাই ওই ঘটনায় যুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে ও স্কুল বন্ধ করে দিতে হবে।
পুলিশ জানায়, তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষিক-শিক্ষিকাকে দফায় দফায় জেরা করা হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন ক্লাসে কোনও শিক্ষক না থাকায় জলের বোতল নিয়ে খুনসুটিতে মেতেছিল পঞ্চম শ্রেণির বি বিভাগের পড়ুয়ারা। হঠাৎই একটি জলের বোতল ফেটে জোরালো শব্দ হওয়ায় পাশের ক্লাসের এক শিক্ষিকা ছুটে আসেন। অভিযোগ, কে আওয়াজ করেছে জানতে চাইলে কেউ কিছু না বলায় তিনি বংশকে হাতের সামনে পেয়ে মারধর করেন ও টিচার ইন-চার্জের কাছে নিয়ে যান। সেখানে আর এক প্রস্ত মারধরের পরে ওই ছাত্রকে কান ধরে দাঁড় করিয়ে রাখা হয় বলে অভিযোগ। এমনকী, স্কুল ছুটি হয়ে যাওয়ার বহু ক্ষণ পরে তাকে ছাড়া হয়।
ছাত্রটির মা বংশিতা গুপ্ত এ দিন বলেন, ‘‘বিনা দোষে শাস্তি পাওয়ার অভিমানে ও শুক্রবার স্কুলের ব্যাগও নিয়ে বেরোয়নি। এমনকী ফ্ল্যাটেও ঢোকেনি। স্কুল থেকে বেরিয়ে সোজা ছাদে গিয়ে ঝাঁপ দেয়।’’ পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, বংশের স্কুল ব্যাগটি স্কুলের শৌচাগার থেকে উদ্ধার হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy