ভস্মীভূত: আগুনে পুড়ছে গদি কারখানা। বৃহস্পতিবার সকালে আমতায়। নিজস্ব চিত্র
হাওড়া জেলায় কারখনার সংখ্যা নেহাত কম নয়। অথচ সেই জেলাতেই দমকলের পক্ষ থেকে ‘ফায়ার অডিট’ চালু হয়নি এখনও। ফলে আধুনিক অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছাড়াই চলছে জেলার সিংহভাগ কারখানা ও শিল্পতালুক। অথচ ফায়ার অডিট চালু হলে আধুনিক অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ঠিকমতো করা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে কারখানাগুলিতে নজরদারি নিখুঁত হত। আগুন লাগলে নেভানোর কাজও দমকলের পক্ষে সহজ হত।
আধুনিক অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা হল, কারখানা এবং শিল্পতালুকগুলিতে ‘ইনবিল্ট’ ব্যবস্থা। এর মূল কথা হল, কারখানার ভিতরে অগ্নিনির্বাপণের প্রাথমিক ব্যবস্থা এমনভাবে থাকবে যাতে দমকল আসার আগে বেশি ক্ষয়ক্ষতি না হয়। পাশাপাশি দমকল আসার পরে সহজে আগুন নিভিয়েও ফেলা যায়। ‘ইনবিল্ট’ ব্যবস্থা ফায়ার অডিট ছাড়া সম্ভব নয়।
আইন বলছে, ইনবিল্ট ব্যবস্থা চালু করার জন্য দমকলের একজন ইনস্পেক্টরের নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের দল কারখানা পরিদর্শন করবে। তারা কারখানার অবস্থা দেখে পরামর্শ দেবে কত লিটার জলের ট্যাঙ্ক বসাতে হবে, কোথায় স্পিংলার বসাতে হবে (বিশেষ যন্ত্র যা দিয়ে ঝর্নার মত জল ছড়িয়ে পড়বে) এমনই নানা কিছু। এটিকেই বলা হয় ইনবিল্ট ব্যবস্থা। সেই পরামর্শ অনুযায়ী কারখানা বা শিল্পতালুক কর্তৃপক্ষ ইনবিল্ট ব্যবস্থা ঠিকঠাক করেছেন কিনা তা ফের পরিদর্শন করবে কমিটি। কাজ সন্তোষজনক হলে কমিটি কারখানা কর্তৃপক্ষকে শংসাপত্র দেবে। পরিদর্শন থেকে শুরু করে শংসাপত্র দেওয়া পর্যন্ত পুরো বিষয়টিকে বলা হয় ‘ফায়ার অডিট’।
কলকাতা এবং দুই ২৪ পরগনার শিল্পাঞ্চলগুলিতে ফায়ার অডিট চালু হলেও হাওড়ায় সেই কাজ এখনও শুরু হয়নি। কেন পিছিয়ে রয়েছে হাওড়া?
দমকলের হাওড়া ডিভিশন সূত্রে খবর, মূলত পরিকাঠামোগত সমস্যার জন্যই কাজটি শুরু করা যায়নি। ফায়ার অডিটের জন্য যে বিশেষ দল গঠন করতে হয় তাতে থাকবেন দমকলের একজন ইনস্পেক্টর, পুলিশ, পূর্ত দফতর, পুরসভা বা পঞ্চায়েত এবং সিইএসসি বা রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার প্রতিনিধিরা।
দমকলের হাওড়া জেলা ডিভিশনের কর্তারা জানান, প্রথমত এত বড় জেলায় দমকলের মাত্র ৬টি স্টেশন আছে। যাঁদের নেতৃত্বে ফায়ার অডিটের দল তৈরি হবে সেই ইনস্পেক্টরের সংখ্যাও পর্যাপ্ত নয়। যতজন ইনস্পেক্টর রয়েছেন তাঁদের আবার আগুন নেভানোর দৈনন্দিন কাজেই বেশিরভাগ সময়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। এই সব কারণে জেলায় এখনও শুরু করা যায়নি কাজ।
সম্প্রতি দমকলের রাজ্য অধিকর্তা জগমোহন একটি নির্দেশিকায় সব ডিভিশনকে জানিয়েছেন, প্রতিটি কারখানা এবং শিল্পতালুকে যেন বিশেষ অভিযান চালিয়ে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ঠিক আছে কিনা তা দেখা হয়। জোর দেওয়া হয়েছে ফায়ার অডিট এবং ইনবিল্ট ব্যবস্থার উপরে। দমকলের হাওড়া ডিভিশনের এক কর্তার অবশ্য দাবি, তাঁরা কারখানাগুলিতে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা আছে কিনা তা নিয়মিত পরিদর্শন করেন। খুব শীঘ্র ফায়ার অডিটও চালু করা হবে বলে জানান তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy